এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : জনরায় পেলে বিএনপি মিলে-মিশে দেশ পরিচালনা করবে বলে অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) বিকেলে যুব সমাবেশে এই অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন তিনি।
তারেক রহমান বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এবং নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে- ফ্যাসিবাদের দেড় দশক পর ফ্যাসিস্ট মুক্ত বাংলাদেশে আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে ইনশাল্লাহ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। দেশের সব নারী-পুরুষ-ছাত্র-তরুণ-যুবসমাজসহ সর্বস্তরের জনগণের কাছে আমার আহ্বান… আগামী নির্বাচনে ধানের শীষে ভোট দিন দেশ গড়ার সুযোগ দিন।
তিনি বলেন, আমি আজকে এখানে যারা বক্তব্য রেখেছেন তাদের সবার সহযোগিতা কামনা করছি, যারা আমার নেতাকর্মীরা আছেন, যারা সংবাদকর্মী আছেন তাদের মাধ্যমে আমি দেশের সব মানুষের কাছে এতটুকু বলতে চাই.. ভোট দিলে ধানের শীষে দেশ গড়ব মিলে-মিশে।
আন্তর্জাতিক যুব দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে ‘জাতীয়তাবাদী যুব দল-জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল-জাতীয়তাবাদী ছাত্র দল’ এই তিন সংগঠনের যৌথ উদ্যোগে ‘যুব সমাবেশের প্রত্যাশা ও বিএনপির পরিকল্পনা’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা হয়।
প্রযুক্তিনির্ভর যুবসমাজ গড়ে তুলতে দলের কর্মপরিকল্পনা বিস্তারিতভাবে তুলে তারেক রহমান বলেন, বিএনপির রাজনীতি হচ্ছে আগামী দিনে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা। বেকারদের কর্মের ব্যবস্থা করা- এটাই আমাদের রাজনীতির মূল লক্ষ্য।
জনগণ প্রচলিত রাজনীতির একটি পরিবর্তন চাইছে। জনগণের যে আকাঙ্ক্ষা এই আকাঙ্ক্ষা পূরণে আর প্রতিশ্রুতি নয়, প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন। এই কারণে প্রতিটি সেক্টরে পরিকল্পনাগুলো কীভাবে বাস্তবায়ন করা যায় সেটাই আমরা পরিকল্পনায় কাজ করছি। আজকের এই যুবসমাজের মাধ্যমে দেশের তরুণ যুবশক্তির কাছে আমার আবেদন আপনারা বিএনপির জনমুখী-গণমুখী কর্মপরিকল্পনাগুলো দেশের সবার সামনে, জনগণের সামনে তুলে ধরুন। জনগণের রায় বিএনপি রাষ্ট্রীয় পরিচালনার সুযোগ পেলে সামনের দিনে আমরা এই পরিকল্পনাগুলো পর্যায়ক্রমে ইনশাল্লাহ বাস্তবায়ন করব।
তারেক বলেন, সাধারণভাবে একটি দেশের মোট জনসংখ্যার অর্ধেকের বেশি যখন কর্মক্ষম শ্রমশক্তি থাকে সেটি হলো কিন্তু ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড… এই ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড বিবেচনা দেশের বর্তমান জনসংখ্যা দেশের উন্নয়নের প্রধান নিয়ামক হয়ে উঠতে পারে। কারণ বয়সের হিসেবে আমাদের জনসংখ্যার অধিকাংশই কিন্তু কর্মক্ষম। শুধু এই জনসংখ্যাকে জনশক্তিতে আমাদের কনভার্ট বা রূপান্তর করা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, এ কারণেই বিএনপি মনে করে, দেশের জনসংখ্যাকে যদি বিশেষ করে তরুণ এবং যুবশক্তিকে কারিগরিনির্ভর শিক্ষায় দক্ষ করে গড়ে তোলা যায়, তাহলে বর্তমান জনসংখ্যা দেশের জন্য আশীর্বাদ হয়ে উঠবে। দেশের এই কর্মক্ষম জনসংখ্যাকে একদিকে যেমন প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষায় লক্ষ্য নিয়ে গড়ে তুলতে আমরা আগ্রহী, ঠিক একই সঙ্গে তরুণ যুবকদের আগ্রহী একটি অংশকে খেলাধুলার পারদর্শিতা অর্জন আমাদের করানো প্রয়োজন।
তিনি আরও বলেন, এখানে খুব সম্ভব একজন বক্তা ‘নতুন কুড়ি’র কথাটি বলেছেন। যুবকদের মধ্যে প্রযুক্তি জ্ঞানের পাশাপাশি একটি অংশ আছে যারা খেলাধুলায় নিজেদের পারদর্শী করে গড়ে তুলতে চান- আমাদের সে সুযোগটা দিতে হবে। এর ভিতরে আমরা একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি, সেই পরিকল্পনাটি হচ্ছে- ‘নতুন কুড়ি’ আমরা ইনশাআল্লাহ আবার চালু করব। নতুন কুড়ির আরেকটি সাবজেক্ট আমরা চালু করব- এতে স্পোর্টস বা ক্রীড়াও থাকবে।
তারেক রহমান বলেন, আমরা আমাদের দেশের ভবিষ্যৎ বংশধরদের দিক থেকে এই সেক্টরে খেলাধুলায় যারা দক্ষতা প্রদর্শন করতে পারবেন সেই মানুষগুলোকে আমরা বের করে নেব কালচারাল লাইফের পাশাপাশি। সেজন্য এই খেলাগুলোকে পেশা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার জন্য ক্রীড়া শিক্ষাকেও আমরা কারিকুলামের অন্তর্ভুক্ত করতে পারি।
স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএস জিলানীর সভাপতিত্বে ও যুব দলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন ও ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছিরের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, এনডিএমের চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ, বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহাদি আমিন, সাংবাদিক মুক্তাদির রশীদ রুমি ও শরীফুল ইসলাম খান, নাট্য নির্মাতা মাসরুর রশীদ বান্নাহ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তাফসীর, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান ও ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বক্তব্য দেন।