এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার হাসিব আজিজের দেওয়া ওয়াকিটকিতে বক্তব্য ফাঁস নিয়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ইতিমধ্যে এ তথ্য ফাঁসের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ কনস্টেবল পটিয়ার অমি দাশকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের একটি বিশেষ টিম।
অনুসন্ধানে জানা যায়, বরখাস্ত পুলিশ কনস্টেবল অমি নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার সঙ্গে পটিয়ার বিতর্কিত সাবেক সংসদ সদস্য সামশুল হক চৌধুরী ও মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ ছবি রয়েছে।
এ ছাড়াও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সংসদ সদস্য প্রয়াত মোসলেম উদ্দিন আহমদ এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন ও পটিয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ডা. তিমির বরন চৌধুরীর সঙ্গেও তার ছবি রয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আওয়ামী লীগ নেতাদের সুপারিশে ২০১৩ সালে পুলিশ কনস্টেবল হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে যোগ দেন অমি। তিনি পুলিশের টেলিকম ইউনিটে কর্মরত ছিলেন। তবে বর্তমানে তিনি প্রেষণে চট্টগ্রাম মহানগরীর খুলশী থানায় অপারেটর হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।
তার গ্রামের বাড়ি পটিয়া পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সুচক্রদণ্ডী এলাকার রামকৃষ্ণ মিশন রোডে। অমির বাবা রাজীব দাশ পটিয়া পৌরসভা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক।
পটিয়া উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক তারেক রহমান বলেন, ‘অমির বাবা আওয়ামী লীগ নেতা। তার পুরো পরিবার আওয়ামী লীগের সঙ্গে জড়িত। ছাত্রজীবনে তিনি ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।’
জানা যায়, গত ১১ আগস্ট (সোমবার) মধ্য রাতে বন্দর থানার সল্টগোলা ক্রসিং ইশান মিস্ত্রি হাট সংলগ্ন সড়কে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হাতে গুরুতর আহত হন পুলিশের এসআই আবু সাঈদ ওরফে রানা। পরদিন মঙ্গলবার সিএমপির ফোর্সদের উদ্দেশে অস্ত্রধারীদের দেখামাত্র গুলির নির্দেশ দেন সিএমপি কমিশনার হাসিব আজিজ। এই বার্তা ওয়াকিটকিসহ ভিডিও ধারণ করেন খুলশী থানায় কর্মরত ওয়ারলেস অপারেটর অমি। পরবর্তীতে তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিওটি ছড়িয়ে দেন।
এ ঘটনার পর গত রবিবার (১৭ আগস্ট) খুলশী থানা এলাকা থেকে অভিযুক্ত অমিকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর তার বিরুদ্ধে অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টে মামলা করা হয়। সেই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে গতকাল সোমবার আদালতে সোপর্দ করে খুলশী থানা পুলিশ। একই সঙ্গে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন। তবে এদিন তার রিমান্ড আবেদনের শুনানি হয়নি। আজ মঙ্গলবার এটি শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।
খুলশী থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, ‘অমি দাশকে সংশ্লিষ্ট মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। আদালত তাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দিয়েছেন।’