শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০৭:১১:৩৭

এই সরকার সংস্কারের গান গাইতে গাইতে অনেক কুসংস্কার করে দিচ্ছে: গয়েশ্বর

এই সরকার সংস্কারের গান গাইতে গাইতে অনেক কুসংস্কার করে দিচ্ছে: গয়েশ্বর

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, বর্তমানে রাজনৈতিক অঙ্গনে আমাদের অবস্থা এমন, ‘মুসল্লির চেয়ে ইমাম বেশি’। জুলাই বিপ্লবের পর নেতাকর্মীদের আকাঙ্ক্ষা ভিন্ন ভিন্ন রূপ ধারণ করেছে। যাদের সঙ্গে একসময় জেল খাটলাম, একসঙ্গে থাকলাম তারাও এখন ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলের জন্য এক সুরে কথা বলছেন না।

শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে হিউম্যান রিসার্চ অ্যান্ড এনালাইসিস ফাউন্ডেশন (হিউরাফ) আয়োজিত ‘জুলাই বিপ্লব এবং আগামীর গণতন্ত্র ভাবনা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ফ্যাসিবাদ ও মৌলবাদের হাত থেকে যদি দেশকে রক্ষা করতে চান, তাহলে জনগণের জন্য রাজনীতি করতে হবে, কেবল এমপি-মন্ত্রী হওয়ার জন্য পাগল হওয়া চলবে না। তিনি নেতাদের প্রতি নিঃস্বার্থভাবে গণতন্ত্র উপহার দিতে এবং নিজেদের স্বার্থ ত্যাগ করার আহ্বান জানান।

সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ নিয়ে প্রশ্ন তুলে গয়েশ্বর রায় বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদ ৯০ দিন হলেও অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ অনন্তকাল। যদি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ৯০ দিনে নির্বাচন করতে পারে, তাহলে তাদের দুই বছর লাগে কেন? এই সরকার সংস্কারের গান গাইতে গাইতে অনেক কুসংস্কার করে দিচ্ছে।বিদেশ থেকে বুদ্ধিমান লোক আনা হয়েছে। আর এত বুদ্ধিমান লোক এক জায়গায় হলে যা হয় তাই হয়েছে।

বিএনপির এই নেতা বলেন, মৌলবাদীরা বেহেস্তের টিকেট বিক্রি করছে। তাদের সঙ্গে থাকলে আপনি বেহেস্তে যাবেন, না থাকলে দোজখে যাবেন। অথচ নিজেরা বেহেস্তে যাবে কিনা- সেটা তারা জানে না।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, দেশে সাম্প্রদায়িক শক্তির উত্থান ঘটছে। আমরা ফ্যাসিবাদের থেকে মুক্তি পেয়েছি। কিন্তু গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ থেকে এখন সাম্প্রদায়িক উগ্র-উন্মাদনার সৃষ্টি শুরু হয়েছে। যেটার মাধ্যমে মব তৈরি হয়। সাম্প্রদায়িকতা হলো ফ্যাসিবাদের চেয়ে দ্বিগুন কঠিন ও জনবিরোধী। এই আধুনিক বিশ্বে মুক্তচিন্তা, প্রতিভার বিকাশ তারা করতে দেবে না।

তিনি আরও বলেন, ধর্মের সঙ্গে রাষ্ট্রব্যবস্থার কোনো সাংঘর্ষিক ব্যাপার নেই, অপব্যাখ্যা আছে। এই অপব্যাখ্যার কারণে মানুষ ন্যায়ের কথা বলতে পারে না। অনেকগুলো দল আছে যারা ট্র্যাভেল এজেন্সির মতো বেহেস্তের টিকেট বিক্রি করছে।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে প্রায় ৬০টি দল ৩১ দফার ভিত্তিতে একত্রিত হয়েছিল, কিন্তু সেই দফায় ‌‌‘পিআর’ এর কোনো উল্লেখ ছিল না। তিনি প্রশ্ন করেন, যদি এটি গণতন্ত্রের জন্য জরুরি হতো, তাহলে যারা এখন পিআর-এর কথা বলছেন, তারা তখন কেন তা অন্তর্ভুক্ত করার মতামত দেননি?

হিউরাফের আহ্বায়ক আহমেদ হুসেইনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাড. আব্দুস সালাম আজাদ, বিএনপির শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, বিএনপি স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফাত আলী সপু প্রমুখ।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে