শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০৫:৫৫:৪৭

এই দলের জন্য কি-না করেছি, জেল খেটেছি নির্বাসনে রয়েছি: ফজলুর রহমান

এই দলের জন্য কি-না করেছি, জেল খেটেছি নির্বাসনে রয়েছি: ফজলুর রহমান

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : দীর্ঘ ৯ বছর পর আগামীকাল শনিবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন। জেলা শহরের পুরাতন স্টেডিয়ামে বেলা ১১টায় এ সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে যুক্ত হবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। 

সম্মেলন উপলক্ষে অনুষ্ঠানস্থলে তৈরি করা হচ্ছে সুবিশাল মঞ্চ, শহরের উল্লেখযোগ্য সড়কগুলোতে কেন্দ্রীয় নেতাদের শুভেচ্ছা জানিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে কয়েকশ তোরণ, দলীয় নেতাকর্মীদের ছবি-সংবলিত ব্যানার-ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে অনুষ্ঠানস্থলসহ পুরো জেলা শহর। 

কিন্তু জাঁকজমকপূর্ণ এই সম্মেলনে অতিথি করা হয়নি কিশোরগঞ্জের আলোচিত নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট মো. ফজলুর রহমানকে। সম্মেলনের ব্যানার ও দাওয়াতপত্রে তার নাম নেই। কারণ, জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে বিভ্রান্তিকর বক্তব্যের অভিযোগে তার দলীয় প্রাথমিক সদস্য পদসহ সব পর্যায়ের পদ তিন মাসের জন্য স্থগিত করা হয়েছে।

দলের এই সিদ্ধান্তের পর দীর্ঘদিন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পদে থাকা ফজলুর রহমান বিভিন্ন সভা-সেমিনার ও টকশোতে তার বিষয়ে দলের স্থগিতাদেশ উঠিয়ে নেওয়ার আবেদন জানিয়ে আসছেন।

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক বক্তব্যে তার এই স্থগিতাদেশ বাতিল করার জন্য দলের কাছে অনুরোধ করে বলেন, বিএনপি নেতাকর্মীদের অনুরোধ করব আমার স্থগিতাদেশ উঠিয়ে নিন। সামনে কিশোরগঞ্জ জেলা সম্মেলন। আমি দীর্ঘ আট বছর ধরে এই সম্মেলন করেছি। 

ফজলুর রহমান বলেন, আমাকে বলে আমি বাতিল হয়ে গেছি, কিশোরগঞ্জ সম্মেলনে যেতে পারব না। কে সহ্য করতে পারে এগুলা। আমিও তো মানুষ, এই দলের জন্য কি-না করেছি। জেল খেটেছি নির্বাসনে রয়েছি, দেশ নেত্রী খালেদা জিয়ার নামে ৩০০ বক্তব্য দিয়েছি। যেটি বিশ্ব রেকর্ড। 

তিনি বলেন, আমার নেত্রী এখন সুস্থ, উনি জানেন না এটা। তারেক রহমান সাহেবের নামে আমি যে বক্তৃতা করি, বিএনপির নেতাদের চাঁদাবাজি, ধান্দাবাজির বিরুদ্ধে আমি যে বক্তৃতা করি, এই বক্তৃতা কেউ করে না। একটা কথার জন্য আমাকে তিন মাসের জন্য দলের সব প্রকার কর্মকাণ্ড থেকে স্থগিত করা হয়েছে। আদেশ দিয়েছেন আমি খুশি হয়েছি। এখন আপনাদের অনুরোধ করি সম্মেলনের আগে এটি তুলে দেন।

তিনি আরও বলেন, আমি বিএনপির মতো দল করব না- এটি ফালতু কথা। তবে যদি আমার জীবন থাকে আর বিএনপি যদি আমাকে দলে না নেয়, আমি না হয় বসেই রইলাম। এই দেশটার জন্য তো আমি যুদ্ধ করেছি, আমি না হয় তাদের কথা চিন্তা করে সব বাদই দিয়ে দিলাম। বাকি বিদেশে আছেন ২ কোটি মানুষ, আমি চ্যালেঞ্জ করলাম এর ৯৯ শতাংশ মানুষ আমাকে সাপোর্ট করবে। 

ফজলু বলেন, আমি আবারও বলে দিলাম মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে একটা দল হবে। এই দলটা যদি নির্বাচন করে, এই দলটা কিন্তু দাঁড়াবে। ইমরান খানের মতো দল হিসাবে দাঁড়াবে। প্রতিটি জায়গা থেকে একজন করে দাঁড়াবে। ৩০০ ক্যান্ডিডেট হবে আমি বলে দিলাম।

তবে তার এই কাকুতি-মিনতি বা আল্টিমেটাম কোনোটাকেই পাত্তা দিচ্ছে না বিএনপির হাইকমান্ড। কারণ তাকে শোকজ করে দল থেকে বলা হয়েছিল, তিনি যেন সব ধরনের বিতর্কিত বক্তব্য থেকে বিরত থাকেন। কিন্তু তিনি সেই নির্দেশনা উপেক্ষা করে আবারও বিতর্কিত বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি সম্প্রতি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের এক টকশোতে বলেছেন, ‘মুক্তিযোদ্ধার পক্ষের আলাদা একটি দল গঠন করতে হবে। আমি চাইলে বিএনপির চেয়ে বড় দল গঠন করতে পারি।’ 

এর আগে পদ স্থগিত হওয়ার পরপরই কিশোরগঞ্জের নিজ নির্বাচনি এলাকার হাওড় মিঠামইনে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ আয়োজিত গণসংবর্ধনায় ফজলুর রহমান বলেছিলেন, আমি ধর্ম বিদ্বেষী নই, জামায়াত বিদ্বেষী। আমি ধর্ম-কর্মে বিশ্বাসী একজন মুসলমান। তবে, জামায়াতে ইসলাম ইসলাম নয়, তারা জামা-কাপড়ে ইসলাম। তাদের প্রতি আমার বিদ্বেষ রয়েছে। আগামী সংসদ নির্বাচনে আমি ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করতে চাই। দলের কাছে আমার অনুরোধ, আমাকে ধানের শীষ মার্কাটা দেবেন।

তিনি বলেন, দল আমাকে তিন মাসের জন্য স্থগিতাদেশ দিয়েছে, আমি মাথা পেতে নিয়েছি। তবে আমি ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করতে চাই। দলের কাছে এটাই আমার চাওয়া। আপনারা জনগণ দলের কাছে দুইটা জিনিস চাইবেন। একটা হলো ফজলুর রহমান, আরেকটা হলো ধানের শীষ মার্কা।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে