বুধবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০৪:০২:২৯

কোন দলের সরকার গঠনের সম্ভাবনা বেশি? যা বলছে জরিপ

কোন দলের সরকার গঠনের সম্ভাবনা বেশি? যা বলছে জরিপ

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় নির্বাচনে রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে সরকার। সেই লক্ষ্যে প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। রাজনৈতিক দলগুলোকেও তৎপর দেখা যাচ্ছে। এমন অবস্থায় ভোটারদের মতামত জানতে জারিপ চালিয়েছে বেসরকারি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ইনোভেশন কনসাল্টিং। সংস্থাটি তাদের ‘পিপলস ইলেকশন পালস সার্ভে রাউন্ড টু’-এর দ্বিতীয় অংশের ফলাফল প্রকাশ করেছে।

বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁও আর্কাইভ ভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এই জরিপের ফলাফল তুলে ধরেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রুবাইয়াত সরওয়ার।

 ৮টি বিভাগের ৬৪টি জেলা থেকে ৯ হাজার ৩৯৮টি পরিবার/খনার ১০ হাজার ৪১৩ জন ভোটারের ওপর জারিপটি চালিয়েছে তারা।

জনপ্রিয়তায় এগিয়ে বিএনপি

জরিপের তথ্য অনুযায়ী, ভোট দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এমন অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। দলটির পক্ষে সমর্থন জানিয়েছেন ৪১.৩০ শতাংশ ভোটার। এর পরেই রয়েছে জামায়াতে ইসলামী, যাদের প্রতি ৩০.৩০ শতাংশ ভোটারের সমর্থন দেখা গেছে। গত বছরের গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ তৃতীয় স্থানে আছে, যাদের ভোট ১৮.৮০ শতাংশ। নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ৪.১০ শতাংশ ভোটারের সমর্থন নিয়ে তালিকায় চতুর্থ স্থানে রয়েছে।

 সরকার গঠনে সম্ভাবনা কার বেশি?

ভোটারদের মতে, পরবর্তী সরকার গঠনে সবচেয়ে বেশি সম্ভাবনা আছে বিএনপির। ৪০ শতাংশ ভোটার মনে করেন বিএনপি সরকার গঠন করবে। অন্যদিকে ২৩.৩ শতাংশ ভোটারের ধারণা জামায়াত সরকার গঠন করতে পারে। ১২.১ শতাংশ ভোটার মনে করেন আওয়ামী লীগ আবার সরকার গঠন করবে। নতুন দল এনসিপির সরকার গঠনের সম্ভাবনা আছে বলে মনে করেন ৩.৮ শতাংশ ভোটার।

 ভোটের সিদ্ধান্তে প্রার্থীদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ

জরিপে আরও দেখা গেছে, ৬৫.৫ শতাংশ ভোটার দলীয় প্রতীকের পরিবর্তে প্রার্থী বিবেচনায় ভোট দিতে আগ্রহী। মাত্র ১৪.৭ শতাংশ ভোটার প্রতীক দেখে ভোট দেবেন।

 স্থানীয় রাজনীতিতে কোন দলের প্রতি ভোটাররা বেশি সন্তুষ্ট?
 
স্থানীয় রাজনীতিতে দলগুলোর কার্যক্রম নিয়ে ভোটারদের সন্তুষ্টির হারও জরিপে উঠে এসেছে। দেখা গেছে, সাধারণভাবে অন্যান্য দলের তুলনায় ভোটাররা জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের স্থানীয় রাজনৈতিক কার্যক্রম নিয়ে বেশি সন্তুষ্ট। তরুণ প্রজন্ম এবং নারীরা জামায়াতের কার্যক্রমে তুলণামূলক বেশি সন্তুষ্ট।
 
বিএনপির কার্যক্রমে সন্তুষ্ট ৮.২ শতাংশ, জামায়াতের ১৩.৭ শতাংশ এবং এনসিপির কার্যক্রমে সন্তুষ্ট ৯.১ শতাংশ ভোটার।
 
আওয়ামী লীগকে কত শতাংশ ভোটার নির্বাচনে চান?
 
জরিপে দেখা গেছে, ৪৫.৫৮ শতাংশ ভোটার মনে করেন, আওয়ামী লীগের বিচার হওয়ার আগে নির্বাচনে অংশ নিতে দেয়া উচিৎ নয়। অপরদিকে ৪৫.৭৯ শতাংশ মনে করেন, সকল দলকে আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়া উচিৎ।
 
আওয়ামী লীগ নির্বাচনে না এলে কী হবে?
 
যদি আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশগ্রহণ না করে, তাহলে তাদের ভোটারদের একটি বড় অংশ অন্য দলগুলোকে ভোট দিতে আগ্রহী।

জরিপ বলছে, আওয়ামী লীগের ২০ শতাংশ ভোটার বিএনপিকে, ১৪.৮ শতাংশ জামায়াতকে এবং ২.১ শতাংশ ভোটার এনসিপিকে ভোট দিতে আগ্রহী। এমন পরিস্থিতিতে সরকার গঠনের জন্য যোগ্য দল হিসেবে বিএনপিকে মনে করেন ৩৯.১ শতাংশ ভোটার, জামায়াতকে ২৮.১ শতাংশ এবং এনসিপিকে ৪.৯ শতাংশ ভোটার।

জরিপ অনুযায়ী, ভোটাররা ভবিষ্যৎ সরকারের কাছে পুলিশ সংস্কার, দুর্নীতি রোধ এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির নিরপেক্ষতা প্রত্যাশা করেন। তবে একটি বড় অংশ এখনও ভবিষ্যৎ সরকার নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন। এই জরিপটি দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং জনগণের মনোভাবের একটি গুরুত্বপূর্ণ চিত্র তুলে ধরেছে।
 
গত মার্চেও একটি জরিপ চালিয়েছিলো ইনোভেশন কনসাল্টিং। ওই সময়ের তুলনায় সেপ্টেম্বরের জরিপে দেখা গেছে, পছন্দ প্রাকাশ করা ভোটারদের মধ্যে বিএনপির শেয়ার ০.৪০ পয়েন্ট এবং জামায়াতের ১.৩ পয়েন্ট কমেছে। অপরদিকে আওয়ামী লীগের ৪.৮০ পয়েন্ট বেড়েছে।

জরিপে দেখা গেছে, বিএনপি ৬টি বিভাগে এগিয়ে আছে, জামায়াত রংপুরে এবং আওয়ামী লীগ বরিশালে এগিয়ে আছে।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে