এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : দেশে চার ধরনের জমির ওপর থেকে ভূমি উন্নয়ন কর বা খাজনা স্থায়ীভাবে বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ভূমি মন্ত্রণালয়ের এই যুগান্তকারী সিদ্ধান্তে সংশ্লিষ্ট জমির মালিকদের আর কোনো কর পরিশোধ করতে হবে না। এতে দীর্ঘদিনের আর্থিক চাপ থেকে মুক্তি মিলছে অসংখ্য ভূমি মালিকের।
ভূমি মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, নতুন বিধান অনুযায়ী এখন থেকে নিম্নোক্ত চার শ্রেণির জমির ক্ষেত্রে স্থায়ীভাবে কোনো ভূমি উন্নয়ন কর আদায় করা হবে না।
যে ৪ শ্রেণির জমির মালিকদের সুখবর দিলো সরকার
১. সরকারি বা জাতীয় খালাস জমি — এ শ্রেণির খতিয়ানভুক্ত সম্পত্তির খাজনা সম্পূর্ণরূপে বাতিল করা হয়েছে।
২. ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের জমি — মসজিদ, মন্দির, মঠসহ ধর্মীয় উপাসনালয়ের সম্পত্তি খাজনা থেকে মুক্ত থাকবে। তবে শর্ত হলো, এসব জমি কোনো বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহার করা যাবে না।
৩. পুনর্বাসন বা আবাসন প্রকল্পের জমি — সরকার বাস্তবায়িত পুনর্বাসন বা আবাসন প্রকল্পের আওতায় পাওয়া জমির খাজনাও স্থায়ীভাবে মওকুফ করা হয়েছে।
৪. অধিগ্রহণকৃত জমি — সরকারি প্রয়োজনে অধিগ্রহণ করা জমির ক্ষেত্রেও একই নিয়ম প্রযোজ্য হবে।
অসচ্ছল মালিক ও প্রান্তিক কৃষকদের জন্য বিশেষ ছাড়
ভূমি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই স্থায়ী কর বাতিলের পাশাপাশি অসচ্ছল জমির মালিক ও প্রান্তিক কৃষকদের জন্যও বিশেষ সুবিধা রাখা হয়েছে। তারা চাইলে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য খাজনা মওকুফের আবেদন জেলা প্রশাসকের (ডিসি) কাছে করতে পারবেন। যাচাই-বাছাই শেষে উপযুক্তদের আবেদন অনুমোদন করা হবে।
তবে আইন অনুযায়ী, সাধারণ জমির মালিক যদি টানা তিন বছর খাজনা না দেন, তাহলে সরকার সেই জমি খাস খতিয়ানে অন্তর্ভুক্ত করতে পারে। কিন্তু নতুন বিধান অনুযায়ী অব্যাহতিপ্রাপ্ত জমির ক্ষেত্রে এ ঝুঁকি আর থাকছে না।
খাজনা পরিশোধ এখন সম্পূর্ণ অনলাইনে
খাজনা প্রদানের প্রক্রিয়াতেও এসেছে বড় পরিবর্তন। ভূমি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এখন থেকে খাজনা পরিশোধের পুরো ব্যবস্থাই ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে সম্পন্ন করা যাবে। নাগরিকদের আর ভূমি অফিসে গিয়ে লাইনে দাঁড়াতে হবে না।
এখন ভূমি সেবার ওয়েবসাইট বা মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করে বিকাশ, নগদ, রকেটসহ বিভিন্ন মাধ্যমে সহজেই অনলাইনে খাজনা পরিশোধ করা সম্ভব।
ভূমি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা আশা প্রকাশ করেছেন, নতুন এই ডিজিটাল ব্যবস্থা ও কর বাতিলের সিদ্ধান্তের ফলে ভূমি অফিসে ঘুষ, হয়রানি ও অনিয়ম উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসবে। এর ফলে নাগরিকদের জন্য স্বচ্ছতা ও সেবার মান বৃদ্ধি পাবে।