ভূমি ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা ও অবৈধ দখল প্রতিরোধে নতুন নির্দেশনা জারি করেছে বাংলাদেশ সরকার। ২০২৫ সালের মধ্যে পাঁচ ধরনের জমি, যদিও বৈধ দলিল থাকলেও, অবৈধভাবে দখলদারদের থেকে ছাড়িয়ে নেওয়া হবে। প্রয়োজনে এই ক্ষেত্রে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সরকারি নির্দেশনায় বলা হয়েছে, “দলিল যার, ভূমি তার”—এই ধারণা সবক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। কারণ অনেক ক্ষেত্রে দলিল বৈধ হলেও, জমির মালিকানা ও দখলের আইনগত ভিত্তি থাকে না।
যে পাঁচ ধরনের জমি দখলদারদের ছাড়তে হবে:
১. সাব-কবলা দলিল:
যেসব সাব-কবলা দলিল উত্তরাধিকার বণ্টন না করে করা হয়েছে এবং কোনো ওয়ারিশ বঞ্চিত হয়েছেন, সেগুলো বাতিলযোগ্য। বঞ্চিত উত্তরাধিকারী আদালতে মামলা করলে দখলদারের দলিল খারিজ হতে পারে।
২. হেবা দলিল:
যেসব হেবা দলিল দাতার সম্পূর্ণ মালিকানা না থাকার, সঠিক প্রক্রিয়া না মানার বা শর্ত ভঙ্গের কারণে করা হয়েছে, সেগুলোও বাতিলযোগ্য।
৩. জাল দলিল:
ডিজিটাল ভূমি ব্যবস্থাপনার কারণে এখন জাল দলিল শনাক্ত করা সহজ হয়েছে। সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে দুর্নীতির মাধ্যমে তৈরি যেসব দলিল, প্রকৃত মালিক যথাযথ প্রমাণ দিলে বাতিল হবে।
৪. খাস খতিয়ানের সম্পত্তি:
সরকারি খাস খতিয়ানে থাকা জমি যদি কেউ নিজের নামে বিক্রি করে থাকে, সেই দলিল বাতিল হবে এবং জমি সরকারের নিয়ন্ত্রণে ফিরে যাবে। প্রয়োজনে জেলা প্রশাসককে আইনি লড়াইয়ের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
৫. অর্পিত সম্পত্তি:
যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে পরিত্যক্ত অর্পিত সম্পত্তি ব্যক্তিগতভাবে দখল রাখা যাবে না। এসিল্যান্ডের মাধ্যমে এসব জমি চিহ্নিত করে সরকারকে জানাতে হবে।
সরকারি পরিপত্র অনুযায়ী, এসব জমির দখল শুধুমাত্র আদালতের রায় ব্যতীত টিকিয়ে রাখা যাবে না। তাই বছরের পর বছর এসব জমি ভোগ করে আসা দখলদারদের এখনই আইনি প্রস্তুতি নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
ভূমি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য হলো সরকারের নিজস্ব সম্পত্তি পুনরুদ্ধার করা এবং সাধারণ মানুষের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করা। এর মাধ্যমে বৈধ জমির মালিকরা তাঁদের অধিকার ফিরে পাবেন এবং সরকারের রাজস্ব আয়ও বৃদ্ধি পাবে।