এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : রাজধানীতে ভূমিকম্পের ধাক্কায় মুহূর্তেই থেমে গেল মেডিকেল শিক্ষার্থী রাফির জীবন। হাসপাতালের বেডে তার নিথর দেহ পড়ে আছে, আর পাশের অপারেশন থিয়েটারে গুরুতর আহত মা লড়ছেন মৃত্যুর সঙ্গে। শরীরভর্তি যন্ত্রণা নিয়েও ছেলের চিন্তা যেন এক মুহূর্ত ছাড়ছে না তাকে।
রবারই জানতে চাইছেন, “রাফি কেমন আছে?” অথচ তিনি জানেনই না, তার একমাত্র সন্তান মারা গেছেন।
শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকালে সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের ৫২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী রাফি মায়ের সঙ্গে মাংস কিনতে গিয়েছিলেন বংশালের কসাইটুলিতে। নয়নের মাংসের দোকানের সামনে দাঁড়িয়েই ঘটে যায় সেই ভয়াল মুহূর্ত। সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে হঠাৎ শুরু হয় তীব্র ভূমিকম্প। শক্তিশালী ঝাঁকুনিতে পাশের ভবনের রেলিং ভেঙে সোজা পড়তে থাকে রাফি ও তাঁর মায়ের ওপর।
আহত অবস্থায় স্থানীয় লোকজন দ্রুত দু’জনকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা রাফিকে মৃত ঘোষণা করেন। ভিডিও ও ছবিতে দেখা গেছে—রাফির মাথা ও মুখমণ্ডল ভয়াবহভাবে থেঁতলে গেছে।
রাফির মা এখনও অপারেশন থিয়েটারে চিকিৎসাধীন। হাসপাতাল সূত্র জানায়, তিনি এখনও জানেন না তার ছেলে আর বেঁচে নেই। বারবার ছেলের খোঁজ করছেন—কিন্তু পরিবার তার কাছে সেই নির্মম সত্যটি প্রকাশ করতে পারছে না।
সকালে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় শক্তিশালী ভূমিকম্পে ভবন দুলে ওঠে, কোথাও কোথাও দেয়াল ফেটে যায়, আবার কোথাও রেলিং ও বাড়ির অংশবিশেষ ভেঙে পড়ে।
আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল নরসিংদীর মাধবদী, রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৫.৭, যা মধ্যম মাত্রার ভূমিকম্প হিসেবে বিবেচিত।
বংশাল থানার ডিউটি অফিসার জানান, কসাইটুলিতে একটি পাঁচতলা ভবনের রেলিং ভেঙে পড়লে তিনজন পথচারী প্রাণ হারান। তাদের একজন রাফি। নিহত অন্য দুইজনের পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি। তিনজনের মরদেহই রাখা হয়েছে সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (মিডফোর্ড)।
লালবাগ বিভাগের সহকারী কমিশনার (এসি) মল্লিক আহসান উদ্দিন সামি জানান, ঘটনাস্থলেই দু’জনের মৃত্যু হয়, আর হাসপাতালে নেয়ার পর মারা যান আরেকজন।