নিউজ ডেস্ক : অবমাননার দায়ে দুই মন্ত্রীকে দোষী সাব্যস্ত করে সাজা দিয়ে সর্বোচ্চ আদালত একটি কড়া বার্তা দিয়েছেন। খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম ও মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রী মোজাম্মেল হককে অর্থদণ্ড দিয়ে আদালতের মর্যাদা ক্ষুণ্নের বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকার বার্তা দেয়ার কথা জানিয়েছে আদালত।
প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বাধীন আট বিচারপতির আপিল বিভাগ রোববার দুই মন্ত্রীকে আদালত অবমাননায় দোষী সাব্যস্ত করে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেয়।
সাত দিনের মধ্যে এই অর্থ পরিশোধ করতে ব্যর্থ হলে এক সপ্তাহ কারাগারে কাটাতে মন্ত্রী কামরুল ও মোজাম্মেলকে।
যুদ্ধাপরাধী মীর কাসেম আলীর আপিলের রায় সামনে রেখে গত ৫ মার্চ এক আলোচনা সভায় রায় নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে প্রধান বিচারপতিকে বাদ দিয়ে নতুন বেঞ্চে পুনঃশুনানির দাবি তোলেন মন্ত্রী কামরুল।
তিনি বলেন, আপিলের শুনানিতে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন দলের কাজ নিয়ে প্রধান বিচারপতির অসন্তোষ প্রকাশের মধ্য দিয়ে ‘রায়েরই ইঙ্গিত’ মিলছে।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী মোজাম্মেল হকও প্রধান বিচারপতির মন্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানান।
এর তিন দিনের মাথায় রায়েও মীর কাসেমের ফাঁসির রায় বহাল থাকে। ওই রায় ঘোষণার আগে পুরো আপিল বিভাগকে নিয়ে বসে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা দুই মন্ত্রীকে তলবের আদেশ দেন।
পরে বক্তব্যের জন্য ক্ষমা চেয়ে আদালতে আবেদন করেন কামরুল ও মোজাম্মেল। তবে তাদের অপরাধের মাত্রা ‘এতোই বেশি’ যে ওই আবেদন আদালত গ্রহণ করেনি বলে রোববার রায়ের পর অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম জানান।
রায় ঘোষণার আগে প্রধান বিচারপতি বলেন, “আমরা উচ্চ আদালতের বিচারকরা সব কিছু পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিবেচনা করেছি। প্রতিবেদনে (দুই মন্ত্রী যে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিয়েছিলেন, সেই অনুষ্ঠান নিয়ে গণমাধ্যমে আসা প্রতিবেদন) অনেকের নাম এসেছে। সবার নামে আমরা প্রোসিডিংস ড্র করিনি। প্রকৃতপক্ষে কনটেম্পট নিয়ে আমরা বাড়াবাড়ি করতে চাইনি।
তিনি বলেন, “দুই মন্ত্রীর বিরুদ্ধে কনটেম্পট প্রোসিডিংস ড্র করা হয়েছে একটি বার্তা পৌঁছে দেওয়র জন্য।”
কী সেই বার্তা জানতে চাইলে মাহবুবে আলম পরে সাংবাদিকদের বলেন,আদালতের মর্যাদা কোনোভাবেই ক্ষুণ্ন করা উচিৎ নয়- এ বিষয়টি যাতে দুই মন্ত্রীর সাজার মধ্য দিয়ে দেশের মানুষ বুঝতে পারে- সেই বার্তাই আপিল বিভাগ দিতে চেয়েছে।
এই সাজার পর দুই মন্ত্রী স্বপদে বহাল থাকতে পারবেন কি না-জানতে চাইলে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তা বলেন, এ বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে চান না। সংবিধানেও এ বিষয়ে স্পষ্ট কিছু বলা আছে বলে তার জানা নেই।
তিনি বলেন, “তবে এটা নৈতিকতার সাথে জড়িত।” এ বিষয়ে মন্ত্রিসভা সিদ্ধান্ত নেবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। -বিডিনিউজ
২৭ মার্চ ২০১৬/এমটিনিউজ২৪.কম/সৈকত/এমএস