মঙ্গলবার, ২৯ মার্চ, ২০১৬, ০৯:৪৩:১৫

তারেকের বিষয়ে সেই একই প্রশ্ন পুলিশেরও

তারেকের বিষয়ে সেই একই প্রশ্ন পুলিশেরও

নিউজ ডেস্ক : ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল পুলিশ অর্গানাইজেশন বা ইন্টারপোলের তালিকা থেকে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নাম বাদ দেয়ার বিষয়ে মুখ খুলেছে বাংলাদেশের পুলিশ। এ নিয়ে গত ২১ মার্চ বিএনপি একটি বিবৃতি দেয়ার পর সোমবার এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ব্যাখ্যা দিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর।

পুলিশের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি রেড নোটিশ জারি করতে আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা-ইন্টারপোলকে অনুরোধ জানায় বাংলাদেশের পুলিশ। তার ‘সন্তোষজনক’ ব্যাখ্যা সংস্থাটি থেকে পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছে পুলিশ।

২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলাসহ অন্যান্য ১৩ মামলায় চার্জশিটভুক্ত হওয়ায় এ আবেদন জানানো হয়। এ সংক্রান্ত তথ্য ও দলিল বিশ্লেষণ করে রেড অ্যালার্ট নোটিশ জারি করে ইন্টারপোল।

এই নোটিশ জারির পর তারেক রহমান জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে লবির মাধ্যমে ইন্টারপোল কর্তৃপক্ষের কাছে বিভ্রান্তিকর তথ্য উপস্থাপন করেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে ইন্টারপোল প্রথমে রিভিউ ও পরে রেড অ্যালার্ট নোটিশ বাতিল করে।

নোটিশটি রিভিউ করার পর্যায়ে ইন্টারপোলের সঙ্গে যোগাযোগ করে পুলিশ বিভাগ। ইন্টারপোল জানায়, তারেক রহমান প্রটেকটিভ স্ট্যাটাসে আছেন। তাই তার রেড অ্যালার্ট নোটিশ বাতিল করার সুযোগ রয়েছে। কে বা কোন দেশ তাকে প্রটেকটিভ স্ট্যাটাস দিয়েছে জানতে চাইলে এ ব্যাপারে ইন্টারপোল থেকে কোনো সন্তোষজনক সাড়া পাওয়া যায়নি।

ধারণা করা হচ্ছে, রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনার মতো প্রটেকটিভ স্ট্যাটাসও বিদেশে আশ্রয় গ্রহণের আরেকটি পথ। তারেক রহমান একাধিক ফৌজদারি মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি, যা আদালতে বিচারাধীন। তা সত্ত্বেও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে জারি করা রেড অ্যালার্ট নোটিশ কী কারণে প্রত্যাহার করা হয়েছে, তা স্পষ্ট নয়।

বাংলাদেশ পুলিশ  ইন্টারপোলের সঙ্গে এ ব্যাপারে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছে। যে মামলায় তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ইন্টারপোালের নোটিশ জারি করা হয়েছিল, তা রাজনৈতিক মামলা নয়।

পুলিশ সদর দপ্তর বলছে, রাজনৈতিক বিবেচনায় পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ অনেক ব্যক্তিকে প্রটেকটিভ স্ট্যাটাস বা রাজনৈতিক আশ্রয় দিয়ে থাকে। সাধারণত যেসব দেশ মৃত্যুদণ্ডকে সমর্থন করে না, সে দেশে রাজনৈতিক আশ্রয় বা প্রটেকটিভ স্ট্যাটাস পাওয়ার সুযোগ বেশি।

অনুরূপ স্ট্যাটাস কোনোভাবেই বাংলাদেশে ফৌজদারি মামলায় চার্জশিটভুক্ত, পলাতক ও বিচারাধীন কোনো আসামিকে তার দেশে ফৌজদারি অপরাধের দায় থেকে অব্যাহতি দেয় না। একইভাবে ইন্টারপোলের রেড অ্যালার্ট নোটিশ প্রত্যাহারের বিষয়টি কোনোভাবে ফৌজদারি অপরাধ থেকে দায়মুক্তির মানদণ্ড বলে বিবেচিত নয়।

গত রবিবার রাজধানীতে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দাবি করেন, তারেক রহমানের বক্তব্য গণমাধ্যমে প্রকাশের ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা থাকায় গণমাধ্যম তার বক্তব্য প্রচার করতে পারছে না। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

এবার ইন্টারপোলের সেই রেড অ্যালার্ট প্রত্যাহারের পর নতুন করে এ বিষয়গুলো নিয়ে আইনি লড়াই হবে। তারেক রহমানকে পলাতক দেখিয়ে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে পুলিশ যেসব তথ্য পাঠিয়েছে, ইন্টারপোল তার ‘সত্যতা’ খুঁজে পায়নি। তার বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের আন্তর্জাতিক গ্রেপ্তারি পরোয়ানা এরই মধ্যে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

খালেদা জিয়ার ছেলে বিএনপির জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান তারেক বিভিন্ন মামলা মাথায় নিয়ে ২০০৮ সাল থেকে যুক্তরাজ্যে রয়েছেন।
২৯ মার্চ, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪.কম/সৈকত/এমএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে