বৃহস্পতিবার, ৩১ মার্চ, ২০১৬, ০১:০৯:০৪

অন্যরকম একটি দিন কাটালেন মির্জা ফখরুল!

অন্যরকম একটি দিন কাটালেন মির্জা ফখরুল!

সাজেদুল হক : অন্যরকম একটি দিনই কাটালেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আট ঘণ্টার মেলোড্রামা। আনন্দ-বিষাদ-স্বস্তি। সকাল সকালই ছড়িয়ে পড়েছিল খবর। দীর্ঘ পাঁচ বছরের প্রতীক্ষার অবসান হচ্ছে তার। সুখবর পাওয়ার আগেই অবশ্য তিনি ছুটেন আদালতের দিকে। তিন মামলায় হাজির হয়ে দাখিল করেন জামিনের আবেদন। তাকে নিয়ে শুনানির অপেক্ষায় আইনজীবীরা।

আর এদিকে বেলা সোয়া ১১টায় পল্টন কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী আহমেদ জানালেন, খালেদা জিয়ার সিদ্ধান্ত। বিএনপি’র মহাসচিব করা হয়েছে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে। আদালত কক্ষেই আইনজীবীদের কাছ থেকে সে খবর পান তিনি। তবে এই আনন্দ দীর্ঘস্থায়ী হলো না। ঘণ্টা খানেকের মধ্যেই তার জামিন আবেদনের শুনানি হলো ঢাকার মহানগর হাকিমের আদালতে। শুনানি শেষে তিন মামলার দু’টিতে তার জামিন আবেদন নাকচ করলেন বিচারক। একটিতে দেয়া হয় জামিন।

কারাগারে পাঠিয়ে দেয়া হয় মির্জা আলমগীরকে। এ খবরে পল্টনে তাকে ফুল দিতে অপেক্ষায় থাকা নেতাকর্মীদের মধ্যে নেমে আসে হতাশা। তাৎক্ষণিক দলের নতুন সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদের নেতৃত্বে দলীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন নেতাকর্মীরা। পরে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে রিজভী আহমেদ বলেন, এই ঘটনা সরকারের গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ। তিনি বলেন, এটা আজকের ভোটারবিহীন অবৈধ সরকারের যিনি প্রধান, তার মনোবাসনা। কি জানি- নতুন মহাসচিব হয়েছেন, এরপর রাজনৈতিক গতিধারা কোন্‌ দিকে প্রবাহিত হয়। ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে তাকে আটকিয়ে দাও।’

তবে নাটকীয়তার তখনও বাকি ছিল। জামিন নাকচের আদেশ পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন করেন মির্জা ফখরুলের আইনজীবীরা। বিকাল ৪টার দিকেই আসে নতুন আদেশ। জানানো হয়, মির্জা ফখরুলের জামিন মঞ্জুর করা হয়েছে। নেতাকর্মী-আইনজীবী আর সাংবাদিকরা ফের ছোটেন কেন্দ্রীয় কারাগারের দিকে। এরমধ্যে অন্য মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির খবর রাজনীতিতে তৈরি করে চাঞ্চল্য।

সন্ধ্যা ৭টার দিকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি মিলে মির্জা আলমগীরের। এ সময় নেতাকর্মীরা ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান তাকে। মির্জা ফখরুল খালেদা জিয়া এবং নেতাকর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। পরে মির্জা আলমগীর বলেন, এই তিনটি মামলায় এর আগে আমাকে তিন দফা কারাভোগ করতে হয়েছে। বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক স্পেস কমে যাওয়ার কারণেই এসব ঘটনা ঘটছে। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনাই এখন আমাদের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

কারাগার অবশ্য মির্জা ফখরুলের জন্য নতুন কিছু নয়। বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক জমানায় তিনি এক ব্যতিক্রমও বটে। এরশাদের পতনের পর নিজেদের শাসনামলে আওয়ামী লীগ-বিএনপি পরস্পরের প্রতি এক অলিখিত সম্মান বজায় রেখেছিল। মির্জা ফখরুলের আগে ক্ষমতায় থাকাকালে আওয়ামী লীগ বা বিএনপি প্রতিপক্ষের সাধারণ সম্পাদক বা মহাসচিবকে কখনও গ্রেপ্তার করেনি। এমনকি ৩০শে এপ্রিলের ট্রাম্পকার্ড ঘোষণাকারী প্রয়াত আবদুল জলিলও গ্রেপ্তার এড়াতে পেরেছিলেন। কিন্তু মির্জা ফখরুলের সে সৌভাগ্য হয়নি। এ নিয়ে আট দফা কারগারে যেতে হলো তাকে। কারাভোগ করেছেন ৩৬০ দিন। আর তার মাথার ওপর ঝুলছে ৮৪টি মামলা। -এমজমিন
৩১ মার্চ, ২০১৬/এমটি নিউজ২৪/এসবি/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে