সোমবার, ১১ এপ্রিল, ২০১৬, ০৪:৫৪:১১

দেশত্যাগী মানুষদের মিলনমেলা টুটুল

দেশত্যাগী মানুষদের মিলনমেলা টুটুল

নিউজ ডেস্ক : বিপন্ন লেখক, প্রকাশক, বুদ্ধিজীবী ও মুক্তমনাদের আশ্রয়দাতা সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল সিটিস অব রিফিউজ নেটওয়ার্কের (আইকর্ন) বর্ষপূর্তিতে উপস্থিত ছিলেন শুদ্ধস্বর প্রকাশনীর প্রতিষ্ঠাতা, প্রকাশক আহমেদুর রশিদ চৌধুরী টুটুল। এ অনুষ্ঠানটি ছিল বিশ্বের বিভিন্ন দেশের দেশত্যাগী মানুষদের মিলনমেলা। তারা এখানে ভাগাভাগি করেন নিজেদের কাহিনী।

টুটুল জানান, গত বছর তার ওপর পরিচালিত হামলার আগেই তিনি এমন কিছুর আশঙ্কা করেছিলেন। তার প্রকাশনা সংস্থার অফিসে একদিন হাজির হয় দুই ব্যক্তি যারা নিজেদের পাণ্ডুলিপি ছাপানোর কথা বলতে এসেছিল। ওই দুই ব্যক্তি দেখতে ছিল স্মার্ট। কিন্তু তাদের আচরণ টুটুলের মনে সন্দেহের উদ্রেক করে। তার সেই সন্দেহকে সত্যি প্রমাণিত করেই গত বছরের ৩১শে অক্টোবর শুদ্ধস্বর প্রকাশনীর অফিসে হামলার শিকার হন টুটুল। আততায়ীদের আক্রমণে টুটুল মারাত্মক আহত হলেও প্রাণে বেঁচে যান। আনসার আল-ইসলাম নামক একটি সংগঠন পরে এ হামলার দায় স্বীকার করে।

আহত হওয়ার পর টুটুল নিবিড় চিকিৎসায় সুস্থতা ফিরে পান। এ বছরের বইমেলাতে তার প্রকাশনা শুদ্ধস্বরের পক্ষ থেকেও বরাবরের মতোই নেয়া হয় স্টল। কিন্তু তাতে এ বছর উপস্থিত ছিলেন না টুটুল। জীবনের শঙ্কা নিয়ে টুটুল দেশত্যাগ করেন। আর তিনি আশ্রয় লাভ করেন নরওয়ের স্কিয়েন শহরে। তার জন্য এই নিরাপদ আবাসের ব্যবস্থা করে দিয়েছে ই আইকর্ন। বিভিন্ন দেশে প্রাণের ঝুঁকিতে থাকা মুক্তমনা লেখক, সাংবাদিক ও শিল্পীদের জন্য এমন আশ্রয়ের ব্যবস্থা করে থাকে আইকর্ন, যাতে করে ওই লেখক, সাংবাদিক বা শিল্পীরা স্বাধীনভাবে নিজেদের চর্চা চালিয়ে যেতে পারেন।

সংগঠনটি এবারে তাদের প্রতিষ্ঠার ১০ বছর পূর্ণ করলো। ২০০৬ সালে যাত্রা শুরুর পর থেকে এ সংগঠনটি বিশ্বের ৫০টি শহরকে তাদের নেটওয়ার্কে যুক্ত করতে পেরেছে। এখন পর্যন্ত প্রায় দেড়শ লেখক ও শিল্পীর জন্য নিরাপদ আশ্রয়ের ব্যবস্থা করেছে আইকর্ন। ইরানের কবি, সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী আসিয়েহ আমিনি বলেন, আইকর্ন অনেকটা অ্যাম্বুলেন্সের মতো। এটা খারাপ একটি অবস্থা থেকে ভালো অবস্থার দিকে নিয়ে যায়।

ইরানে ১৬ বছর বয়সী এক মেয়েকে পাথর নিক্ষেপ করে হত্যার রায় দেয়ার পর তা নিয়ে আন্দোলন গড়ে তোলেন আমিনি। তাকে কারাবরণ করতে হয়। শেষ পর্যন্ত দেশত্যাগে বাধ্য হন তিনিও। তার জন্যও আশ্রয়ের ব্যবস্থা করে দেয় আইকর্ন। নরওয়ের ট্রনধেইম শহরে এখন তার আবাস।

তিনি বলেন, ‘ট্রনধেইমে আসাটা আমার কাছে স্বপ্নের মতো ছিল। কিন্তু আপনাকে তো ঘুম থেকে জেগে উঠতেই হবে। এখানে এসে এখানকার সংস্কৃতির সঙ্গে আত্মস্থ হতে আমি নতুন একটি ভাষা শিখলাম। এই শহরের মতো আরও অনেক শহরের আইকর্নের সঙ্গে যুক্ত হওয়া উচিত। এসব শহর লেখক-শিল্পীদের সমর্থন জুগিয়ে যাবে। আর লেখক-শিল্পীরাও ওই শহরের চিন্তাকে উন্নত করে তুলবেন।’  -মানবজমিন
১১ এপ্রিল ২০১৬/এমটি নিউজ২৪/এসবি/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে