মঙ্গলবার, ১৯ এপ্রিল, ২০১৬, ০৬:০৯:৪৭

আবারও চাপের মুখে বিএনপি

আবারও চাপের মুখে বিএনপি

নিউজ ডেস্ক : রাজপথে আন্দোলন-সংগ্রাম নেই তারপরও রাজনৈতিক চাপে রাখতে সরকার নানা কৌশল নিয়ে এগোচ্ছে বলে মনে করছে বিএনপি।

দলটির নীতিনির্ধারকরা মনে করেন, সরকারের মধ্যে নানা অস্বস্তি কাজ করছে। বিএনপি সাংগঠনিকভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে দ্রুত রাজপথে নামতে পারে এমন আশংকা রয়েছে সরকারের ভেতরে। সেই আশংকা থেকেই দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে গ্রেফতার আতংক তৈরির চেষ্টা চলছে। এ লক্ষ্যে সচল করা হচ্ছে পুরনো সব মামলা। ওইসব মামলায় নতুন করে নেতাদের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। সক্রিয় করা হচ্ছে সিনিয়র নেতাদের নামে করা দুর্নীতির মামলাও। দলের কয়েকজন নেতার নামে জারি করা হয়েছে গ্রেফতারি পরোয়ানা।
শিগগিরই গুরুত্বপূর্ণ কয়েক নেতা আটক হতে পারেন দলটির মধ্যে এমন গুঞ্জনও রয়েছে। হঠাৎ করে বিএনপির ওপর সরকারের এমন মনোভাব কেন তা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পর্যালোচনা করছে দলটির হাইকমান্ড। তাদের প্রাথমিক ধারণা, বিএনপিকে ফের চাপে রাখার কৌশল হিসেবেই সরকার এসব করছে।

জানতে চাইলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সরকারের মূল লক্ষ্য হচ্ছে বিএনপি যাতে ঘুরে দাঁড়াতে না পারে। নতুনভাবে সংগঠিত হতে না পারে।

তিনি বলেন, বিএনপি সফলভাবে কাউন্সিল শেষ করেছে। নতুন নেতৃত্ব আসছে। এর মধ্য দিয়ে আমরা নতুন রাজনীতির ধারা সৃষ্টি করতে চাচ্ছি। নানা অনিয়মের পরও আমরা ইউপি নির্বাচনে অংশ নিয়েছি এবং এখনও আছি। এসব কর্মকাণ্ড বিএনপিকে ইতিবাচক ধারায় নিয়ে যাচ্ছে। এসব যাতে করতে না পারি সেজন্য আবারও চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে।

ফখরুল বলেন, চাপ মোকাবেলায় বিএনপির কৌশল একটাই। তাহলে গণতান্ত্রিক পরিবেশে আমাদের দলকে গোছাতে চাই। চাপ যতই থাকুক আমরা তা চালিয়ে যাব। কারণ চাপ দিয়ে বিএনপিকে থামানো যাবে না। এ দলটি বহুবার ধাক্কা খেয়েছে। আবার সময়মতো ঠিকই ঘুরে দাঁড়িয়েছে।

বিএনপির নীতিনির্ধারকরা জানান, রাজপথে আন্দোলন ছেড়ে দল গোছাতে মনোযোগ দেয়া হয়। ফলে দীর্ঘদিন আত্মগোপনে থাকা নেতাকর্মীরা এলাকায় আসার সুযোগ পান। কাউন্সিলের পর ইতিমধ্যে মহাসচিবসহ গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। নতুন নেতৃত্বে দলের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মধ্যে উজ্জীবিত ভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সাংগঠনিক দুর্বলতা কাটিয়ে দলটি দ্রুত ঘুরে দাঁড়াতে নানা পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে। কিন্তু সরকার বিষয়টিকে ভালোভাবে নিচ্ছে না। বিএনপি ঘুরে দাঁড়াক তা ক্ষমতাসীনরা চাচ্ছেন না। তাই কিভাবে দলকে নতুন করে চাপে রাখা যায় সেই কৌশল নেয়া হচ্ছে। এক্ষেত্রে ব্যবহার করা হচ্ছে আন্দোলনের সময় দায়ের করা মামলাকে।

রোববার দলের কেন্দ্রীয় নেতা বরকতউল্লা বুলু, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুসহ এগারো জনের নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। সিনিয়র নেতাদের নামে দ্রুত দেয়া হচ্ছে চার্জশিট। দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করাকেও এক প্রকার চাপ বলে মনে করছেন নেতারা। ওয়ান-ইলেভেনের সরকারের সময় বিএনপি নেতাদের নামে করা দুর্নীতির মামলা আবারও সক্রিয় হচ্ছে।

জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, রাজনীতিতে ঝড় আসতে পারে। সরকারের কর্মকাণ্ড ভালো মনে হচ্ছে না। তারা আমাদের ঘরের দরজায় কড়া নাড়ছে। সরকার শেষবারের মতো আরেকটা মরণ কামড় দিতে পারে। তাই সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেন, রাজনৈতিক অস্থিরতা না থাকার পরও শফিক রেহমানরকে গ্রেফতার সরকারবিরোধীদের জন্য একটা বার্তা। যাতে করে দেশের বুদ্ধিজীবী, সুশীল সমাজের কেউ সরকারের সমালোচনা করতে না পারেন।

তিনি বলেন, দলের চেয়ারপারসন ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং সিনিয়র নেতাদের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা দিয়ে পযুর্দস্ত করা হচ্ছে। সাজানো মামলায় গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হচ্ছে। নেতাকর্মীদের মধ্যে আতংক সৃষ্টি করতে এসব করা হচ্ছে বলে মনে করেন বিএনপির এই নেতা।

বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, সরকারের ব্যর্থতা, আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি বিশেষ করে তনু হত্যা ও বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনা সামাল দিতে না পেরে নতুন কৌশলের আশ্রয় নিয়েছে। নেতাকর্মীদের মধ্যে কিভাবে আতংক সৃষ্টি করা যায় সেই পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে সরকার।-যুগান্তর
 
১৯এপ্রিল২০১৬/এমটিনিউজ২৪.কম/এএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে