নিউজ ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রীর ছেলে ও তথ্য প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ করে হত্যা চক্রান্তে আটক সাংবাদিক ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শফিক রেহমান যুক্ত ছিলেন বলে রিমান্ডে স্বীকার করেছেন।
তিনি জানিয়েছেন যে, জয়কে হত্যার ষড়যন্ত্রে যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত একাধিক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন তিনি। সজীব ওয়াজেদ জয় সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে সংরক্ষিত তথ্য পেতে ঘুষ লেনদেনের ঘটনায় দণ্ডিতদের সঙ্গে এসব বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
গণমাধ্যমকে এসব তথ্য জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার মো. মনিরুল ইসলাম।
মনিরুল ইসলাম বলেন, শফিক রেহমান নিজে যে বৈঠক করেছেন এ সংক্রান্ত কিছু দালিলিক প্রমাণাদি এরই মধ্যে তার হেফাজত থেকে সংগ্রহ করেছে পুলিশ। শফিক রেহমান নিজে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে এ ষড়যন্ত্রে অংশ নেন এবং পরবর্তীতে প্রবাসী একজনের মেইলের মাধ্যমে জয়ের যাবতীয় তথ্যাদি সংগ্রহ করেন। এ ঘটনায় এরই মধ্যে ৩০ হাজার মার্কিন ডলার লেনদেনও হয়েছে।
তিনি বলেন, আরেক সাংবাদিক মাহমুদুর রহমান এ ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত হয়ে ফেডেক্স এক্সপ্রেসের মাধ্যমে জয়ের যাবতীয় তথ্যাদি হাতে পান। তবে মাহমুদুর রহমানের কাছে আর কি ধরনের তথ্য আছে তা জানতে রিমান্ডে আনতে আদালতে আবেদন করা হয়েছে।
আগামী ২৫ এপ্রিল এ বিষয়ে আদালতে শুনানির দিন ধার্য রয়েছে বলে জানান তিনি।
মঙ্গলবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে শফিক রেহমানের গ্রেফতার, রিমান্ড ও মামলার সর্বশেষ তথ্য জানাতে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।
সাংবাদিকদের তিনি বলেন, শফিক রেহমান রিমান্ডে তথ্য দিচ্ছেন।
‘যুক্তরাষ্ট্রে দণ্ডিত রিজভী আহমেদ সিজার, এফবিআই এজেন্ট রবার্ট লাস্টিক এবং এ দুজনের মধ্যস্থতাকারী লাস্টিকের বন্ধু জোহানেস থালের সঙ্গে বৈঠকের কথা তিনি ‘স্বীকার করেছেন'।
মনিরুল ইসলাম বলেন, এ হত্যা ষড়যন্ত্র মামলায় দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানও জড়িত রয়েছেন। তার দালিলিক প্রমাণও আমাদের কাছে রয়েছে।
বিএনপির সিনিয়র নেতারাও এ ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত বলে জানান তিনি।
মনিরুল ইসলাম বলেন, শফিক রেহমানকে সুনির্দিষ্ট মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে। ২০১৫ সালের ৩ আগস্ট পল্টন থানার মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়।
তিনি বলেন, ২০১২ সালে শফিক রেহমান যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে অপহরণ ও হত্যা চেষ্টা পরিকল্পনার একপর্যায়ে সেখানে গিয়ে বৈঠক করেন। তারা কয়েক দফা বৈঠক করার কথা স্বীকার করেছেন রিমান্ডে। কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি পুলিশের কাছে আছে।
‘সিজার এফবিআই সদস্যের মাধ্যমে জয় কোথায় থাকতো, তার গাড়ি নম্বর, গাড়ির ধরণ ও কোথায় কোথায় যেত তা সংগ্রহ করে বাংলাদেশে থাকা ফেডারেল একপ্রেস কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে মাহমুদুর রহমানের কাছে পাঠায়।’
মনিরুল ইসলাম বলেন, ঘটনাস্থল যুক্তরাষ্ট্র। অধিকতর তদন্তের জন্য সেখানে গিয়ে তদন্ত করলে বিস্তারিত কিছু পাওয়া যাবে। খুব শিগগিরেই তিন সদস্যর একটি টিম তদন্ত করতে সেখানে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, তারেক রহমানের সঙ্গে সিজার অথবা দণ্ডপ্রাপ্ত অন্য কারো সঙ্গে যোগাযোগ ছিল কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এছাড়া লন্ডন, যুক্তরাস্ট্র ও বাংলাদেশের আর কেউ জড়িত আছে কি না তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
জয়কে যুক্তরাষ্ট্রে ‘অপহরণ চক্রান্তের’ মামলায় শনিবার শফিক রেহমানকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ।
১৯ এপ্রিল, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম