বুধবার, ২০ এপ্রিল, ২০১৬, ০৬:০৬:৩৫

রাত নামতেই নেশার আড্ডা আর নিশিকন্যাদের ভিড়

রাত নামতেই নেশার আড্ডা আর নিশিকন্যাদের ভিড়

তামান্না মোমিন খান : রাজধানীর ব্যস্ততম এলাকা ফার্মগেটের পুলিশবক্স সংলগ্ন ফুটওভার ব্রিজটির ওপর সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত নামতেই বসে নেশার আড্ডা। এবং সেই সঙ্গে নিশিকন্যারাও এখানে এসে ভিড় করে। আর সারা রাত চলে বিভিন্ন ধরনের অসামাজিক কর্মকাণ্ড। রাত দশটার পর এই ফুটওভার ব্রিজটি ব্যবহার করতে ভয় পায় সাধারণ মানুষ।

বাধ্য হয়ে রাস্তা দিয়েই পার হতে হয় তাদের। মিরপুরের একটি বায়িং হাউজে চাকরি করেন রাসেল রহমান। বাসা তেজকুনিপাড়ায়। প্রতিদিন অফিস শেষ করে বাসায় ফিরতে ফিরতে রাত এগারোটা বেজে যায় তার। রাজধানীতে রাত দশটার পরই আর ট্রাফিক সিগন্যাল মানতে চান না গাড়ির চালকরা। কিন্তু এরপরও তিনি এই ফুটওভার ব্রিজটি ব্যবহার না করে রাস্তা দিয়ে পার হন।

রাসেল বলেন, একটু রাত হলেই আর এই ওভারব্রিজটি ব্যবহার করা যায় না। এটা চলে যায় নেশাখোর আর নিশিকন্যাদের দখলে। আর এ সময়  ব্রিজের উপর কোনো ছেলে মানুষকে দেখলেই এসব মেয়েরা নানা রকম অঙ্গভঙ্গি করে। অনেক সময় আবার গায়ে হাত দিয়ে টানাটানি পর্যন্ত করে।

ঢাকা শিশু হাসপাতালের জ্যেষ্ঠ সেবিকা অঞ্জলি বলেন- অনেক সময় নাইট ডিউটি করে ভোর বেলায় বাড়ি  ফিরতে হয়। তখনও এই ওভারব্রিজে ওঠার সাহস পাই না। আর এত ভোরে ট্রাফিক পুলিশও রাস্তায় থাকে না। তাই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পার হতে হয়। এই ওভারব্রিজের উপরে থাকে নিশিকন্যা কনা (ছদ্মনাম)।

সে জানায়, রাতের বেলা এই ব্রিজের উপর আর দিনের বেলা হয় পার্কে না হয় রাস্তায় থাকে সে। কনা বলে তার মতো আরো পাঁচ-ছয় জন মেয়ে রাতের বেলায় এই ব্রিজের উপর থাকে। প্রতি রাতে দুই থেকে তিন শ’ টাকা আয় করে সে।

ফার্মগেইট পুলিশ বক্সের ইনচার্জ ডিএস আই আব্দুর রাজ্জাক জানান, এই ব্রিজের উপর কোনো অসামাজিক কর্মকাণ্ড হয় কিনা এ বিষয়টি তার জানা নেই। তবে রাতে ব্রিজটির উপর কিছু ভাসমান মহিলা ঘুমান এ বিষয়টি তিনি জানেন। আব্দুর রাজ্জাক বলেন এই মহিলারাই রাতের বেলা কোনো আকাম কুকাম করে কিনা সেটা বলতে পারবো না।

তাহলে এগুলো দেখার দায়িত্ব কাদের এমন প্রশ্নের জবাবে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, এটা দেখার দায়িত্ব পুলিশের। রাতে ব্রিজটির উপর আর যেন কেউ অবস্থান করতে না পারে সে বিষয়টি দেখবেন বলে জানান তিনি। ব্যবহার বিধি অনুযায়ী ফুট ওভারব্রিজ সর্বসাধারণের যাতায়াতের জন্য উন্মুক্ত থাকবে সার্বক্ষণিক। এখানে মানুষ চলাচল করতে পারবে কিন্তু অবস্থান করতে পারবে না।

এদিকে ঢাকা মেট্রোপলিটন বিধি অনুযায়ী কোনো পথচারী ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার না করে আইন অমান্য করলে তাকে আর্থিক দণ্ডে দণ্ডিত করা যাবে ও দায়িত্বরত ট্রাফিক সার্জেন্ট এ অপরাধে পথচারীদের গ্রেপ্তারের এখতিয়ারও সংরক্ষণ করেন। -এমজমিন

২০ এপ্রিল ২০১৬/এমটি নিউজ২৪/এসবি/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে