বুধবার, ২০ এপ্রিল, ২০১৬, ০৯:৪৪:৫৯

কেন এই ভূমিকম্প? জেনে নিন তার কারণ

কেন এই ভূমিকম্প? জেনে নিন তার কারণ

নিউজ ডেস্ক : একের পর এক ভূমিকম্পের ঘটনায় পুরো বিশ্ব এখন আতঙ্কিত। কবে কখন কোথায় এই ভূমিকম্প আঘাত হানবে তা নিশ্চিত করে কেউ বলতে পারছে না। যার ফলে থকছে না পূর্ব কোন প্রস্তুতি। ফলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির মধ্যে পড়ছে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ।

সম্প্রতি বাংলাদেশসহ ভারত, নেপাল, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে ভূমিকম্প হয়েছে। বাংলাদেশ ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল রিখটার স্কেল ৭.২ । যদিও বাংলাদেশে তেমন কোন ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। তবে এ ঘটনার পর থেকে এখানকার মানুষের মধ্যে একটা চাপা আতঙ্ক রয়েই গেছে।

এদিকে মার্কিন ভূতত্ত্ব পর্যবেক্ষণ জরিপের (ইউএসজিএস) মতে মিয়ানমারের মাওলাইক ছিল এই ভূমিকম্পের কেন্দ্র। রিখটার স্কেলে যেখানে এর মাত্রা ছিল ৬.৯। ইউএসজিএসের মতে, ভারতীয় এবং ইউরেশীয় প্লেটের ঠোকাঠুকির ফলে হয়েছে।

জানা গেছে, দুইটি প্লেট পরস্পরের দিকে বছরে ৪০-৫০ মিলিমিটার করে এগিয়ে আসছে। ভারতীয় প্লেটটি এ ক্ষেত্রে ইউরেশিয় প্লেটের তলার ঢুকে যাওয়ার সময়ে এই কম্পন অনুভূত হয়।

হিমালয়ের পাদদেশে থাকা এই অঞ্চলটি বরাবরই ভূমিকম্পপ্রবণ। বেশ কয়কটি বড়সড় ভূমিকম্প এই অঞ্চলে হয়ে গিয়েছে। যার মধ্যে, ১৯৩৮ সালে বিহার, ১৯০৫ সালে কাংরা, ২০০৫ সালে কাশ্মীরের ভূমিকম্প, ২০১৫ সালে নেপালের ভূমিকম্প ও সম্প্রতি ইকুয়েডোরের ভূমিকম্প এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য। তবে সবচেয়ে বড় ভূমিকম্পটি হয় আসামে ১৯৫০ সালের ১৫ অগস্ট।

তা ছাড়া অঞ্চলটি ঘনবসিতপূর্ণ হওয়ায় এর আগের বেশ কয়েকটি ভূমিকম্পে সম্পত্তি ও জীবনেরও প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এই অঞ্চলের ভূমিকম্পে প্রায় এক লাখ মানুষ জীবন হারিয়েছেন।

এদিকে সম্প্রতি ইকুয়েডরের ভূমিকম্পের পর নড়ে চড়ে বসেছে বিশ্ব। চিন্তায় আছেন ভূতাত্ত্বিকরাও। এ নিয়ে গোটা বিশ্বই এখন চরম আতঙ্কিত। অনেকেই জানেন না, হিমালয় অঞ্চলের ভূস্তরে ঘটে চলেছে চাঞ্চল্যকর পরিবর্তন, যার কারণে যে কোনও দিন এর চেয়েও আরও ভয়ঙ্কর ভূমিকম্পনের শিকার হবে ভারত। এমনটাই বলছেন ভূতাত্ত্বিকরা।

ভূতাত্ত্বিকদের মতে, ইকুয়েডরের ভয়াবহ কম্পনের পিছনে ছিল ভূস্তরের ব্যাপক চারিত্রিক পরিবর্তন। টেকটনিক প্লেটের খামখেয়ালি গতিবিধি কিন্তু ঘটে চলেছে হিমালয় অঞ্চল জুড়ে। এখানে ভারতীয় প্লেটটি ক্রমাগত তিনা ভূখণ্ডের ভিতর প্রবেশ করছে। উত্তরমুখী এই ক্রমাগত ধাক্কার জেরে গোটা এলাকার ভূস্তরে তৈরি হচ্ছে প্রবল অস্থিরতা। এর ফলে যে কোনও সময় ঘটে যেতে পারে বিশাল আকারের ভূমিকম্প, রিখটার স্কেলে যার মাত্রা দাঁড়াবে ৮-৯ পর্যন্ত। তবে কবে ও কোন সময় এই ভয়াবহ দুর্যোগ ঘটবে তা নিশ্চিত জানা যায়নি।

আমেরিকার ভূতাত্ত্বিক সমীক্ষা অনুসারে, বছরে একবার বিশ্বে মহাকম্পন (যা রিখটার স্কেলে যার মাত্রা অন্তত ৮) ঘটে। পৃথিবীর কোনও এক প্রান্তে নেমে আসে সেই মহাপ্রলয়। তবে এই নিয়মের ব্যতিক্রমও রয়েছে। ২০০৭ সালে যেমন উত্তর প্রশান্ত মহাসাগরের কুরিল দ্বীপপুঞ্জ, অস্ট্রেলিয়ার কাছে সলোমন দ্বীপপুঞ্জ, মধ্য পেরু এবং সুমাত্রায় পর পরস ৪টি মহাকম্পন ঘটে। ১৯২০, ১৯২৩, ১৯৪৬, ১৯৬০ এবং ১৯৯৫ সালে প্রতি বছর ৩টি মহাকম্পন দেখা দেয়।
২০ এপ্রিল, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসপি/এমএন

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে