শুক্রবার, ২৭ মে, ২০১৬, ০৩:৪৭:১২

‘তোর শালীকে খুন করেছি, তাড়াতাড়ি এসে লাশ নিয়ে যা’

‘তোর শালীকে খুন করেছি, তাড়াতাড়ি এসে লাশ নিয়ে যা’

ঢাকা : ‘তোর শালীকে খুন করেছি।  লাশ ঘরে খাটের সঙ্গে বাঁধা আছে।  তাড়াতাড়ি এসে লাশ নিয়ে যা। দেরি করলে পচে যাবে।’

ভায়রা জামালকে মোবাইল ফোনে এভাবেই কথাগুলো বলেন মাইনুদ্দিন।  এরপর লাইন কেটে দেন।

বুধবার রাত ৯টার দিকে স্ত্রীকে হত্যা করে ভায়রা জামালকে কথাগুলো বলেন মাইনুদ্দিন।

এরপর দুই ছেলেকে নিয়ে নিখোঁজ রয়েছে রাজধানীর খিলক্ষেতে একটি গার্মেন্ট প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা মাইনুদ্দিন।

টেলিফোনে খবর পেয়ে নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকায় এসে বৃহস্পতিবার ভোরে পুলিশের সহায়তায় খিলক্ষেত ব্যাপারীপাড়ার একটি বাসা থেকে গৃহবধূ শিউলী বেগমের (২৮) লাশ উদ্ধার করে তার স্বজনরা।

নিহতের বড় বোন শিলা খাতুন গণমাধ্যমকে জানান, প্রায় ৮ থেকে ৯ বছর আগে নিজেরা পছন্দ করে মাইনুদ্দিন ও শিউলী বিয়ে করে।  কিন্তু প্রথমদিকে পরিবারের পক্ষ থেকে এ বিয়ে মেনে নেয়া হয়নি। কয়েক বছর পর শিউলীর সঙ্গে তাদের যোগাযোগ হয়।

শিলা জানান, তিনি ও তার আরেক বোন শিল্পী আক্তার স্বামী-সন্তান নিয়ে নারায়ণগঞ্জ থাকেন। অনেক বছর পর শবে বরাত উপলক্ষে ২২ মে শিউলী দুই ছেলেকে নিয়ে নারায়ণগঞ্জের বাসায় আসেন।

তিনি জানান, দুদিন থেকে সে খিলক্ষেতে চলে যায়। বুধবার সকালে শিউলী ফোন করে তার কাছে ২০ হাজার টাকা ধার চান।  কিন্তু ওই মুহূর্তে তার কাছে এত টাকা নেই বলে তাকে জানান।

শিলা জানান, এর কিছুক্ষণ পর শিউলীর স্বামী মাইনুদ্দিন ফোন দিয়ে ২০ হাজার টাকা চায়।  তাকেও তিনি একই কথা জানিয়ে দেন।  

নিহতের অপর বোন শিল্পী আক্তারের স্বামী জামাল হাসপাতালে সাংবাদিকদের জানান, বুধবার রাতে মাইনুদ্দিন ফোন দিয়ে শিউলীকে খুন করার কথা জানায়।  এরপর থেকেই তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

তিনি জানান, মাইনুদ্দিন নিজে ফোন দিয়ে বললেও প্রথমে তিনি তার কথা বিশ্বাস করেননি।  পরে তিনি পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঢাকার খিলক্ষেত খ-৩৩/১১ ব্যাপারীপাড়ার ওই বাসায় যান।  

জামাল জানান, বাসায় আসার পর বিছানার ওপর শিউলীর নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখেন তিনি।  এ সময় তার দুই হাত খাটের দুই পাশে বাঁধা এবং গলায় ওড়না পেঁচানো ছিল।  

পরে খবর দিলে পুলিশ এসে তার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

তিনি জানান, ঘটনার পর শিউলীর দুই শিশু সন্তান আবির (৬) ও আরিফকে (৪) পাওয়া যাচ্ছে না।  দুই ছেলেকে নিয়ে মাইনুদ্দিন পালিয়ে গেছে বলে তারা মনে করছেন।

খিলক্ষেত থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, প্রাথমিকভাবে শিউলী বেগমকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।  গলায় ছাড়া তার শরীরের অন্য কোথাও আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি।  তবে হত্যার আগে তাকে অচেতন করতে কিছু খাওয়ানো হতে পারে।

ময়নাতদন্ত রিপোর্ট হাতে পেলে নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে জানান তিনি।

এ ঘটনায় খিলক্ষেত থানায় মামলা হয়েছে।  শিউলী বেগম খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার মোহাম্মদনগর গ্রামের মৃত ইসমাইল হাওলাদারের মেয়ে।
 ২৭ মে,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে