বৃহস্পতিবার, ২৩ জুন, ২০১৬, ০৮:২৮:৩০

জঙ্গি-বিরোধী ফতোয়ার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন

জঙ্গি-বিরোধী ফতোয়ার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন

নিউজ ডেস্ক : বাংলাদেশে পর পর বেশ ক'টি গুপ্ত হত্যার প্রেক্ষাপটে কিছুদিন আগে ইসলামের ব্যাখ্যা দিয়ে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে ফতোয়া জারি করা হয়। ধর্মের নামে মানুষ হত্যাকারীরা জাহান্নামে যাবে- এ ধরণের দশটির মতো ফতোয়া ছিলো তাতে।

কিশোরগঞ্জের সুপরিচিত শোলাকিয়া ঈদগাহের ইমাম ফরিদ উদ্দিন মাসউদ এই ফতোয়ার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তার নেতৃত্বে আলেম ওলামাদের একটা অংশের সাথে পুলিশের আইজির এক বৈঠক থেকে এই উদ্যোগের শুরু হয়েছিলো বলে খবর বেরিয়েছিলো।

কয়েকমাস ধরে সারা দেশের এক লাখ আলেম-ওলামার সই নিয়ে তিনি এই ফতোয়া ঘোষণা করেন। কিন্তু বাংলাদেশের আলেম ওলামাদেরই অন্য একটি অংশ এই ফতোয়া তৈরির প্রক্রিয়া নিয়ে আপত্তি তুলেছেন।

তাদের মধ্যে ইসলামী ঐক্যজোটের একাংশের নেতা মুফতি ফয়জুল্লাহ বলেছেন, ইসলামী আইনে বিশেষজ্ঞ মুফতিরাই শুধু ফতোয়া ঘোষণা করতে পারেন। সেখানে এক লাখ স্বাক্ষরকারীর বড় অংশ মুফতি না হওয়ায় এই ফতোয়া গ্রহণযোগ্য হবে না।

মুফতি ফয়জুল্লাহ বলেন, “যাদের স্বাক্ষর নেয়া হয়েছে, তারা প্রত্যেকে মুফতি কিনা, বা তাদের সার্টিফিকেট আছে কিনা, সে বিষয়টি বিবেচনায় আনতে হবে।এখানে মাদ্রাসার ছাত্রদের নিয়ে এক জায়গায় বসে কয়েক হাজার মানুষ স্বাক্ষর করেছে। এটা কেমন ফতোয়া?এ টা কৃত্রিম কোন বিষয় হলো কিনা সে বিষয়ে আমার সন্দেহ হচ্ছে।”

ইসলামী শরিয়ত বা বিধি বিধান সম্পর্কে বিশেষজ্ঞদের মুফতি বলা হয়, তারাই একমাত্র ফতোয়া দিতে পারেন -- এমন যুক্তি দিচ্ছেন মুফতি ফয়জুল্লাহ।

তবে ফতোয়া দেয়ার ব্যাপারে ২০১১সালে আপিল বিভাগ যে রায় দিয়েছিল, তাতে বলা হয়, ধর্মীয় বিষয়ে ফতোয়া দিতে পারবেন যথাযথ শিক্ষিত ব্যক্তিরা। সেখানে বিশেষ কোন শ্রেণীর ওপর দায়িত্ব দেয়া হয়নি।

এই বিতর্কের জবাবে ফতোয়া ঘোষণাকারী শোলাকিয়া মসজিদের ইমাম ফরিদ উদ্দিন মাসউদ বিবিসিকে বলেছেন, নেহাতই রাজনৈতিক বিবেচনা থেকে জঙ্গি বিরোধী ফতোয়া নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টির চেষ্টা করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, আলেম, মুফতি এবং ইমামদের স্বাক্ষর আমরা নিয়েছি। আমাদের দেশে নামের আগে মুফতি নেই, এমন অনেক আলেম আছেন। এখন যদি শ্রদ্ধেয় আলেম আহমেদ শফি ইসলাম নিয়ে কোনো ব্যাখ্যা দেন আমি কি বলবো, সেটা বিশেষজ্ঞ মত হয়নি। আসলে বিতর্ক সৃষ্টির জন্য কিছু বক্তব্য তোলা হচ্ছে।

মুফতি ফয়জুল্লার দল বিএনপি নেতৃত্বে বিরোধী জোটের অংশ ছিলো। তবে তিনি সম্প্রতি ঐ জোট থেকে বেরিয়ে এসেছেন।

ইসলামী ঐক্যজোটের একাংশের মহাসচিব মুফতি ফয়জুল্লাহ কওমি মাদ্রাসা ভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামেরও যুগ্ম-মহাসচিব।

এই দু’টি সংগঠনের অন্য নেতাদের সাথে কথা বলে মনে হয়েছে, তারা সাংগঠনিকভাবে জঙ্গি বিরোধী ফতোয়াটির বিরুদ্ধে নিয়ে কোন অবস্থান নেয়নি। অন্য কোন ইসলামপন্থী সংগঠনও কোন বক্তব্য দেয়নি।

তবে মুফতি ফয়জু্লাহ বলছেন বহু মাদ্রাসার মুফতিদের মধ্যে এই ফতোয়ার প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।
২৩ জুন, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪.কম/সৈকত/এমএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে