বৃহস্পতিবার, ২৩ জুন, ২০১৬, ১১:৩০:১১

ঐতিহাসিক পলাশী ট্র্যাজেডি দিবস আজ

ঐতিহাসিক পলাশী ট্র্যাজেডি দিবস আজ

নিউজ ডেস্ক : আজ ২৩ জুন, ঐতিহাসিক পলাশী ট্র্যাজেডি দিবস। এটি বাঙালি জাতির ইতিহাসে এক কালো অধ্যায়। ২৫৯ বছর আগে ১৭৫৭ সালের এই দিনে এক প্রাসাদ ষড়যন্ত্রে যুদ্ধের প্রহসন হয়েছিল ভাগীরথী নদীর তীরে পলাশীর আম্রকাননে।

সেই দিন বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার শেষ স্বাধীন নবাব তরুণ সিরাজউদ্দৌলাকে পরাজিত করার মাধ্যমে স্বাধীনতার লাল সূর্য অস্তমিত হয়। এমন বেদনাবহ স্মৃতিকে স্মরণ করে মীরজাফর, ঘষেটি বেগমের প্রেতাত্মাদের রুখে দেয়ার দৃপ্ত শপথ নেয় জাতি। দিবসটি উদযাপনে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠন নানা কর্মসূচি নিয়েছে।

ইতিহাস পাঠে জানা যায়, ষোলো শতকের শেষের দিকে ওলন্দাজ, পর্তুগিজ ও ইংরেজদের প্রাচ্যে ব্যাপক বাণিজ্যের প্রসার ঘটে। একপর্যায়ে ইংরেজরা হয়ে যায় অগ্রগ্রামী। বাংলার সুবেদার-দেওয়ানরাও ইংরেজদের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তোলে।

১৭১৯ ইংরেজি সালে মুর্শিদ কুলি খাঁ বাংলার সুবেদার নিযুক্ত হন। তার মৃত্যুর পর ওই বছরেই সুজাউদ্দিন খাঁ বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার সিংহাসন লাভ করেন।

এরই ধারাবাহিকতায় আলীবর্দী খাঁর পর ১৭৫৬ সালের ১০ এপ্রিল সিরাজউদ্দৌলা বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হন। তখন তার বয়স ছিল মাত্র ২২ বছর। তরুণ নবাবের সাথে ইংরেজদের বিভিন্ন কারণে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়।

এছাড়া রাজসিংহাসনের জন্য লালায়িত ছিলেন সিরাজের পিতামহ আলীবর্দী খাঁর বিশ্বস্ত অনুচর মীরজাফর ও খালা ঘষেটি বেগম। ইংরেজদের সাথে তারা যোগাযোগ স্থাপন করে। এরপর নবাবের বিরুদ্ধে নীলনকশা পাকাপোক্ত করেন তারা।

দিন যতই গড়াচ্ছিল এ ভূখণ্ডের আকাশে ততই কালো মেঘ ঘনীভূত হচ্ছিল। ১৭৫৭ সালের ২৩ এপ্রিল কলকাতা পরিষদ নবাবকে সিংহাসনচ্যুত করার পে প্রস্তাব পাস করে। এই প্রস্তাব কার্যকর করতে ইংরেজ সেনাপতি লর্ড কাইভ রাজদরবারের অভিজাত সদস্য উমিচাঁদকে ‘এজেন্ট’ নিযুক্ত করে।

২৩ জুন ভাগীরথী নদীর তীরে পলাশীর আম্রকাননে সকাল সাড়ে ১০টায় ইংরেজ ও নবাবের মধ্যে যুদ্ধ সংঘটিত হয়। মীর মদন ও মোহন লালের বীরত্ব সত্ত্বেও জগৎ শেঠ, রায়দুর্লভ, উমিচাঁদ, ইয়ার লতিফ প্রমুখ কুচক্রী প্রাসাদ ষড়যন্ত্রকারীর বিশ্বাসঘাতকতায় নবাবের পরাজয় ঘটে। সেই সাথে বাংলার স্বাধীনতার লাল সূর্য অস্তমিত হয়।

ইতিহাসবিদ মোবাশ্বের আলী তার ‘বাংলাদেশের সন্ধানে’ গ্রন্থে লিখেছেন, ‘নবাব সিরাজউদ্দৌলা প্রায় এক লাখ সেনা নিয়ে কাইভের স্বল্পসংখ্যক সেনার কাছে পরাজিত হন মীরজাফরের মোনাফেকিতে’। অতি ঘৃণ্য মীরজাফরের মৃত্যু হয় কুষ্ঠরোগে।

কিন্তু বাংলার মানুষের ট্রাজেডি এই যে, মীরজাফরেরা বারবার গোর থেকে উঠে আসে। ইতিহাস স্যা দেয় মীরজাফর ও ঘষেটি বেগম প্রচণ্ড মতালোভী ও জাতীয়তাবিরোধী ছিলেন। ধারাবাহিকতা রায় তাদের উত্তরসূরিরাও একই আচরণ অব্যাহত রেখেছে। তারা এ দেশকে ‘কলোনি’ বানাবার স্বপ্নে বিভোর।

দিবসটি উপলক্ষে তমুদ্দিন মজলিস বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টায় নজরুল একাডেমি মিলনায়তনে এক আলোচনা সভা ও আবৃত্তি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।
২৩ জুন, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪.কম/সৈকত/এমএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে