বৃহস্পতিবার, ২৩ জুন, ২০১৬, ১০:৪৭:৩৭

‘দলীয়করণের মাধ্যমে সরকার বিচার বিভাগকে শেষ করে দিয়েছে’

‘দলীয়করণের মাধ্যমে সরকার বিচার বিভাগকে শেষ করে দিয়েছে’

রেজাউল কারিম : বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া বলেন দলীয়করণের মাধ্যমে বর্তমান সরকার বিচার বিভাগকে শেষ করে দিয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবানর পবিত্র রমজানের ১৭তম দিন সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানের ইমান্যুয়েলস কনভেনশন হলে ২০ দলীয় জোট শরিক বাংলাদেশ লেবার পার্টি আয়োজিত ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন বেগম জিয়া। লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন।

বেগম জিয়া বলেন, ‘দেশের বিচার বিভাগ থেকে সবার ন্যায় বিচার পাওয়ার কথা থাকলেও দেখা যাচ্ছে, এখানে সবার জন্য সমান বিচার ব্যবস্থা নেই। আওয়ামী লীগের জন্য বর্তমানে এক রকমের বিচার, আর বিএনপিসহ বিরোধী দল ও সাধারণ মানুষের জন্য আরেক রকমের বিচার ব্যবস্থা চালু রয়েছে। আর এই বিচার বিভাগ থেকে কোনো ন্যায় বিচার পাচ্ছে না বিএনপি। এই সরকার দলীয়করণ করে বিচার বিভাগকে শেষ করে দিয়েছে।’

খালেদা জিয়া বলেন, ‘আওয়ামী লীগের কোনো লোক অপরাধ করার পর তাকে ধরা হলে কয়েকদিন পরেই সে জামিনে ছাড়া পেয়ে যায়। মূলত এটা লোক দেখানো বিচার ব্যবস্থা বললেই চলে। কিন্তু সেই ক্ষেত্রে বিএনপির লোক আদালত থেকে জামিন পেলেও একটির পর একটি নতুন মামলা দিয়ে তাদের জেলে আটকিয়ে রাখা হয়। এমনকি জামিন পেলেও জেলগেট থেকে নতুন মামলা দিয়ে তাদের পুনরায় গ্রেপ্তার করা হয়। এই হলো বর্তমানে দেশের অবস্থা।’

আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে বেগম জিয়া বলেন, ‘আওয়ামী লীগ একদিকে গুম-খুন করছে, অন্যদিকে বিএনপির নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষদের জেলখানায় নিয়ে দিনের পর দিন আটকে রেখে তাদের নিঃস্ব ও শেষ করে দিচ্ছে। জেলখানায় চিকিৎসা প্রাপ্য হলেও তাদের চিকিৎসা পর্যন্ত দেয়া হয় না। গুরুতর অসুস্থ হলেও তাদের হাসপাতালে নেয়া হয় না। এভাবে বিএনপির বেশ কিছু লোক জেলখানায় মারাও গেছে। এভাবে রাষ্ট্র চলতে পারে না।’

গণগ্রেপ্তারের নামে সারা দেশে বিএনপি-জামাত ও সাধারণ মানুষের ওপর নির্যাতন চলছে এমন দাবি করে খালেদা জিয়া বলেন, ‘পুলিশের অত্যাচারে এ পবিত্র রমজানে মাসেও বিএনপির কেউ নিজ ঘরে শান্তিতে সেহেরি পর্যন্ত করতে পারে না। ঈদের আগে তাদের (পুলিশ) ব্যবসা চলছে, চলছে গ্রেপ্তার বাণিজ্য। তারা সবই পাচ্ছে। তাদের ভালো গাড়ি থাকে, বাড়ি থাকে। তারা দুদিক থেকেই পাচ্ছে। তাদের খুশি রাখতে সরকার থেকেও দেয়া হচ্ছে, অন্যদিকে তারা বাণিজ্য করেও ব্যাপক অর্থ উপার্জন করছে।

সন্ধ্যা ৬টা ৩৫ মিনিটে ইফতার মাহফিলে এসে খালেদা জিয়া টেবিল ঘুরে ঘুরে আগত অতিথিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন এবং তাদের খোঁজ-খবর নেন।

খালেদা জিয়ার সঙ্গে ইফতার অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, মহাসচিব হামদুল্লাহ আল মেহেদী, ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ফারুক রহমান, এমদাদুল হক চৌধুরী, অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম রাজু, মাহবুবুর রহমান খালেদ, আলাউদ্দিন আলী; যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট উম্মে হাবিবা, শামসুদ্দিন পারভেজ, অধ্যাপক মহসিন ভূঁইয়া, মাহমুদ খান; জাগপা সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, বাংলাদেশ ন্যাপ চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গাণি, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মো. সেলিম উদ্দিন, এনডিপির চেয়ারম্যান খোন্দকার গোলাম মোর্ত্তজা, এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সহ-সভাপতি মাওলানা শেখ মুজিবুর রহমান, এলডিপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের (বিএমএল) সভাপতি এএইচএম কামরুজ্জামান খান,  জাতীয় পার্টির (জাফর) প্রেসিডিয়াম সদস্য আহসান হাবিব লিংকন, ন্যাপ ভাসানীর চেয়ারম্যান প্রমুখ।

ইফতার অনুষ্ঠানে বিএনপি নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন-এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খান, মেজর জেনারেল (অব.) রুহুল আলম চৌধুরী, বেগম সেলিমা রহমান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী,  ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর বীরউত্তম, আব্দুল মান্নান, এমরান সালেহ প্রিন্স প্রমুখ।

ইফতার মাহফিলে ২০ দলীয় জোট নেতাদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন- জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর পুত্র মাওলানা শামীম সাঈদী, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মো. সেলিম উদ্দিন, অ্যাডভোকেট মো. মশিউল আলম, বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভুইয়া, বিএমএল’র মহাসচিব অ্যাডভোকেট শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, জাগপার সাধারণ সম্পাদক খন্দকার লুৎফর রহমান, এনপিপির মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, এনডিপির প্রেসিডিয়াম সদস্য মঞ্জুর হোসেন ঈসা, যুগ্ম মহাসচিব মো. ফরিদউদ্দিন ইসলামিক পার্টির মহাসচিব আবুল কাশেম, প্রমুখ।

ইফতারে লেবার পার্টির নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- দলের যুগ্ম মহাসচিব হিন্দুরত্ন রামকৃষ্ণ সাহা, অ্যাডভোকেট আজমল হোসেন, আমিনুল ইসলাম, আনোয়ার হোসেন, শামীমা চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন, আহসান হাবিব, আব্দুর রহমান খোকন প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন- অস্ট্রেলিয়ার সাবেক ডেপুটি হাই কমিশনার টিম বোলোটনিক অফ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সাবেক প্রো-ভিসি অধ্যাপক আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, স্বাধীনতা ফোরামের সভাপতি আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ প্রমুখ।
২৩ জুন, ২০১৬ এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে