শনিবার, ০৩ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:৪০:৩২

২০১৯ বিশ্বকাপে যাকে অধিনায়ক করতে যাচ্ছে বিসিবি

২০১৯ বিশ্বকাপে যাকে অধিনায়ক করতে যাচ্ছে বিসিবি

স্পোর্টস ডেস্ক: তিনি সেই ২০০৯ সালে শেষ টেস্ট খেলেছেন। সেটা ছিলো নিজের প্রথম দফা অধিনায়কত্বের প্রথম টেস্ট। দুই দিনের মাথায় ইনজুরিতে পড়ে সেই যে মাঠ থেকে বের হলেন, আর টেস্ট খেলা হয়নি।

এরপর ২০১৩ ও ২০১৪ সালে অন্তত তিন দফা টেস্ট খেলার জন্য প্রস্তুতি শুরু করেছেন মাশরাফি। কিন্তু ইনজুরি বা অন্য কোনো জটিলতায় শেষ অবদি মাঠে নামা হয়নি গত সাত বছর। এখন মাশরাফি অভিষেকের পর থেকে তার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় ইনজুরিহীন সময় কাটাচ্ছেন, বল হাতেও ক্যারিয়ারের অন্যতম ছন্দের সময় কাটাচ্ছেন।

ফলে প্রশ্নটা উঠেছে, মাশরাফি এখন কেনো তাহলে টেস্টে ফিরবেন না? বিসিবির অত্যন্ত দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা পরিষ্কার বলে দিলেন, এই ধরণের চিন্তা তারা করতে চান না মাশরাফির স্বার্থে এবং জাতীয় দলের স্বার্থে।

মাশরাফিকে তারা ফিট অবস্থায় ২০১৯ বিশ্বকাপ অবদি ওয়ানডে দলের দায়িত্বে দেখতে চান। আর সেই চাওয়াকে কোনোরকম বাধাগ্রস্থ করে, এমন ঝুকি নেওয়ার কথা চিন্তাও করতে চান না তারা। বুঝাই যায় মাশরাফিকে ২০১৯ বিশ্বকাপে দেশের নেতৃত্ব দেবেন। এ সময় পর্যন্ত তাকে সুস্থ ও সুরক্ষিত রাখতে চায় বিসিবি।

মাশরাফির যৌক্তিকতা এখন বেশী করে তৈরী হয়েছে, তার ছোট রান আপেও দারুন বল করাটা এই বিপিএলেও ফিরে আসায়। হ্যামস্ট্রিংয়ে টান লাগায় এই বিপিএলেও ছোট রানআপে বল করছেন চট্টগ্রাম পর্বের পর থেকে। আগের বিপিএলেও করেছেন। এমনকি ইনজুরি থাকায় ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে, জাতীয় ক্রিকেট লিগে স্পিন বল করার নজিরও আছে তার। ছোট রান আপে নিজের স্বাভাবিক পেসটাই ধরে রাখছেন। সাথে দারুন সুইং পাচ্ছেন।

এই ব্যাপারটা চিন্তা তৈরী করেছে যে, নিউজিল্যান্ডে ঘাসের উইকেটে দারুন এফেক্টিভ হতে পারেন মাশরাফি। ফলে পেস বোলার সংকটে ভুগতে থাকা বাংলাদেশ কেনো সুস্থ মাশরাফির সার্ভিস টেস্টে নেবে না? যিনি ঝুকি কমাতে ছোট রান আপেও বল করতে পারেন?

বিসিবির এই বিশেষজ্ঞ কর্মকর্তা বললেন, তারপরও ঝুকির জায়গা থাকে,

‘লংগার ভার্শন ক্রিকেট আরও অনেক বেশী ডিমান্ডিং ব্যাপার। এটাকে ছেলেখেলা মনে করার কারণ নেই। দিনে দশ ওভার ছোট রান আপ কেনো,  বড় রান আপেও মাশরাফি বল করতে পারবে। কিন্তু এখানে আড়াই দিন, দুই দিন ফিল্ডিং করতে হতে পারে। টানা মাঠে থাকার ব্যাপার আছে। স্ট্রেস লেভেল অনেক বেশী। ও গত দুই বছর হলো লিমিডেট ওভার ছাড়া কিচ্ছু খেলেনি।

এখন ওকে লংগার ভার্শনে পরীক্ষা করাটাই ঝুকির ব্যাপার, টেস্ট অনেক দূরে। আমরা সেই পরীক্ষাটাও করতে রাজী না। মাশরাফিকে আমরা ২০১৯ অবদি চাই। ও এখন অনেকরকম যত্ন নিয়েই সুস্থ আছে। সেটাকে ঝুকিতে ফেলা যাবে না। এ ব্যাপারে আমরা সবাই একমত। বিশ্বকাপে ওকে দরকার। তারপর অন্য চিন্তা।’

এই কর্মকর্তা বললেন, একই চিন্তা থেকে তারা তাসকিনকে এতোদিন টেস্টের বাইরে রেখেছেন। মুস্তাফিজকেও এখন থেকে একটা লম্বা সময় টেস্টের বাইরে রাখা হবে বলে জানিয়ে দিলেন তিনি। পরিষ্কার কথা, দেশসেরা পেসার, যাদের ইনজুরির ইতিহাস আছে, তাদের আর কোনো ঝুকিতে পড়তে দেবে না বিসিবি।

এই নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মকর্তাই বললেন, ‘যথেষ্ঠ ভুল বিভিন্ন সময় হয়েছে, তার ফল আমাদের ক্রিকেট ভোগ করেছে। আর এই অবস্থার ভেতর দিয়ে যেতে চাই না আমরা। টেস্টে যেমনই হোক, একটা বোলিং ইউনিট দাড়াচ্ছে। এখন সবাইকে সব ফরম্যাটে জোর করে খেলাবো না।’

আরেকটা ব্যাপার এই কর্মকর্তা বলছেন। এভাবে হুট করে মাশরাফিকে টেস্টে বিবেচনা করাটা জাতীয় দলের জন্য একটা নেগেটিভ ম্যাসেজও। তারা এই ধরণের ম্যাসেজও দিতে চান না, ‘অনেকেই বলেন যে, আমাদের পেসাররা তো এক ইনিংসে ৩-৪ ওভারের বেশী বল করে না।

তার চেয়ে তো মাশরাফিই ভালো। সেটা শুনতে ভালো শোনায়। কিন্তু প্রসেসের জন্য খারাপ। আপনাকে টেস্ট খেলতে হলে প্রথম শ্রেনী খেলে আসতে হবে। এটা শুধু ফিটনেসের পরীক্ষা নয়, প্রসেসের প্রতি রেসপেক্ট। সেটা আমরা করতে চাই। খেলাধুলা
৩ ডিসেম্বর ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/হাবিব/এইচআর

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে