বিদেশী দর্শকদের চিৎকার, আনন্দ!
মহিউদ্দীন জুয়েল : বিদেশী দর্শকদের উপচেপড়া ভিড়। গ্যালারিতে ঢুকে যখন ওপর থেকে নিচে তাকানো হচ্ছিল তখন হুড়মুড় করে সেখানে ঢুকে পড়লেন চট্টগ্রামের ইউএসটিসে পড়া কয়েকজন বিদেশী শিক্ষার্থী। ‘ওয়াও ফ্যান্টাস্টিক গেইম’ বলেই তারা ঢুকে পড়লেন দক্ষিণ পাশের গ্যালারিতে।
মারিয়াম আজরা নামের এক পাকিস্তানী সমর্থক তখন চিৎকার করতে লাগলেন তার প্রিয় দল করাচি ইলেকট্রিকসের জন্য। আর তার এই উচ্ছ্বাস ক্যামেরাবন্দি করতে লাগলেন কিছু বাঙ্গালি দর্শকও!
চট্টগ্রামের এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের মঙ্গলচিত্র দেখে বোঝাই যায়নি ১৯৯০ সালের পর এখানে ফুটবলের আর কোন বড় আসর হয়নি। দর্শকদের মোটামুটি সাড়া পেয়ে ভীষণ খুশি আয়োজক কমিটিও। ১০,০০০ বেশি দর্শকের ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন এমএ আজিজ স্টেডিয়াম মঙ্গলবার যেন ফিরে গিয়েছিল টান টান উত্তেজনায়। মুহুর্মুহু করতালি। খানিক বাদে চিৎকার।
ফুটবলের যৌবন তবে কী ফিরে এলো-এমন প্রশ্ন ছিল সবার মাঝে। মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৪টায় মাঠে নামে দেশীয় ফুটবল দল ঢাকা আবাহনী লিমিটেড ও করাচি ইলেকট্রিকস ক্লাব। খেলা দেখতে এসেছিলেন নানা বয়সী মানুষ জন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী কাজী মোস্তাইন মাহমুদের সঙ্গে কথা হয় বেলা সাড়ে ৩টায়। খেলা শুরু হতে তখনও অনেক সময় বাকি। তিনি বলেন, ফুটবল আমার প্রিয় খেলা। পত্রিকায় দেখলাম অনেক বিদেশী দল এসেছে। তাই তাদের খেলা আমার ভীষণ ভাল লাগে। আমি চাই দুই আবাহনী ফাইনাল খেলুক।
স্টেডিয়ামের পূর্ব পাশের গ্যালারিতে কথা হয় আরেকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মামুন হোসেনের সঙ্গে। তিনি পড়ছেন ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটিতে। বললেন, ৪ জন একসঙ্গে এসেছিলাম। এখন বাকিরা আমাকে ফেলে অন্য গ্যালারিতে চলে গেছে। তাদের খুঁজছি। আমি চাই দেশীয় ফুটবলের সঙ্গে আফগানিস্তানের যুদ্ধ হোক। ওরা কিন্তু ভাল খেলে।
মামুনের সঙ্গে যখন কথা হয় তখন পাশে দাঁড়িয়ে খেলা দেখছিলেন জিল্লুর রহমান। তিনি আছেন আগ্রাবাদ ব্যাংক কলোনিতে। বলেন, খেলা দেখার জন্য দুইটায় ছুটি নিয়ে চলে এসেছি। তবে মাঠের পরিচর্যা আরেকটু ভাল হলে মন্দ হতো না। টিকিট কেটে র্যাফেল ড্রতে নাকি টিভি, ফ্রিজ দেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। শুনে ভাল লাগলো। দর্শকদের মাঠে টানতে টুর্নামেন্ট কমিটি টিকিটের মূল্য অনেক কম নির্ধারণ করেছেন বলে জানিয়েছেন।
যার মধ্যে প্রথম রাউন্ডে প্যাভেলিয়নে টিকিট মূল্য ১০০ টাকা, গ্যালারি ৫০ টাকা। সেমিফাইনালে প্যাভেলিয়নে ২০০ টাকা, গ্যালারি ১০০ টাকা। ফাইনালে প্যাভেলিয়নে ৩০০ টাকা, গ্যালারি ১৫০ টাকা। প্রতি ম্যাচের জয়ী দল এক হাজার ডলার ও ম্যাচ সেরা ৫০০ ডলার পাবেন।
টুর্নামেন্ট কমিটির প্রধান ও চট্টগ্রামের মেয়র আ জ ম নাছির এই বিষয়ে প্রতিবেদককে বলেন, আমরা দর্শকদের মাঠে টানতে সব ধরনের উদ্যোগ নিচ্ছি। প্রচারণাটা স্বল্প সময়ের মধ্যে হলেও সবার মধ্যে এই নিয়ে অনেক উৎসাহ দেখতে পাচ্ছি। অনেকে খবর পেয়ে দূর-দূরান্ত থেকে বাস ভাড়া করে খেলা দেখতে আসছেন বলে লোকজন আমাদেরকে বলেছেন।
তিনি আরও বলেন, এই টুর্নামেন্টের মাধ্যমে দেশীয় ফুটবলের আগামীর তারকাদের উৎসাহিত করা হচ্ছে। পাশাপাশি আমাদের দেশীয় ক্লাব ফুটবলও অনেক সমৃদ্ধ হবে বলে আমি মনে করি। - মানবজমিন
২১ অক্টোবর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/আসিফ/এআর
�