২৬ ম্যাচ পর জয়
স্পোর্টস ডেস্ক: বাংলাদেশের ক্রিকেটে এখন যৌবনকাল। তাই তো ঘরে বাইরে আনাচে-কানাচে সবজায়গায় ক্রিকেট আর ক্রিকেট। তাই তো জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা ছুটি পেয়েই যোগ দিয়েছেন জাতীয় লিগে। চলতি এই জাতীয় ক্রিকেট লিগেই এবার কিছুটা ইতিহাস সৃষ্টি হয়েছে। টানা ২৬ টি ম্যাচ খেলার পর অবশেষে জয় পেল বরিশাল। জাতীয় লিগে টানা তিনটি মৌসুম জয়হীন কাটানো দলটি কাল জিতল স্নায়ুক্ষয়ী মুহূর্ত পেরিয়ে। বগুড়ার শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে সিলেটকে ১৫০ রানে হারিয়েছে বরিশাল। জয়ের ব্যবধানটা ভুল বোঝাতে পারে, সিলেট কিন্তু ম্যাচটা প্রায় বাঁচিয়েই ফেলেছিল।
চতুর্থ দিনের চা-বিরতি। বহু আরাধ্য জয় থেকে ৩ উইকেটের দূরত্বে দাঁড়িয়ে বরিশাল। কিন্তু বগুড়ার মরা উইকেটে সিলেটের ৩ উইকেট তুলে নিতে প্রচণ্ড বেগ পেতে হলো বরিশালের বোলারদের। লেজের ব্যাটসম্যানদের নিয়ে সিলেটের ১৭ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান জাকির হোসেন প্রায় বাঁচিয়েই দিয়েছিল ম্যাচ। শেষ ব্যাটসম্যান খালেদ আহমেদকে সোহাগ গাজী এলবিডব্লুর ফাঁদে ফেলতেই হাঁফ ছেড়ে বাঁচল বরিশাল। হারিয়ে যেতে যেতেও অবশেষে জয়টা ধরা দিল হাতে। বরিশাল জিতল ২৬ ম্যাচ পর। সর্বশেষ ২৬ ম্যাচের ১৭টিতেই হেরেছে দলটি।
প্রথম শ্রেণিতে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরি বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানকাল সিলেটকে হারানোর আগে বরিশাল সর্বশেষ জিতেছে ২০১১ সালের নভেম্বরে, ঢাকা বিভাগের বিপক্ষে। কালকের জয়ে ওই ম্যাচের একমাত্র প্রতিনিধি বাঁহাতি স্পিনার মনির হোসেন। প্রায় চার বছরের ব্যবধানে পাওয়া দুটি জয়ের একমাত্র অংশীদার খেলা শেষে উত্তেজনা চাপা রাখতে পারলেন না। ব্যর্থতার বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসায় দলের তরুণদের ধন্যবাদ দিলেন মনির, ‘আমরা অনভিজ্ঞ ছিলাম। ধীরে ধীরে অভিজ্ঞতা বেড়েছে। সালমানের মতো তরুণেরাও এবার ভালো করছে। আশা করছি জয়ের জন্য এরপর আর এত দিন অপেক্ষা করতে হবে না।’
দ্বিতীয় ইনিংসের ১৪৬ রানের জন্য সোহাগ গাজীর সঙ্গে যৌথভাবে ম্যাচসেরার পুরস্কার জিতেছেন সালমান। প্রথম ইনিংসে ৩ উইকেট নেওয়া সোহাগ দ্বিতীয় ইনিংসে নিয়েছেন ৫ উইকেট। সিলেটের জাকির করেছেন অপরাজিত ১৩৭। বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের এই প্রতিনিধির এটাই ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি।
ড্র হওয়া অন্য তিন ম্যাচেও উজ্জ্বল অনূর্ধ্ব-১৯ দলের ক্রিকেটাররা। চট্টগ্রামে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম সেঞ্চুরি পেয়েছেন রাজশাহীর নাজমুল হোসেন শান্ত। টানা চার ইনিংসে ফিফটি করার পর পঞ্চম ইনিংসে ১০১ রান করেছেন এই বাঁহাতি। এবারের লিগে প্রথম ফিফটি পেয়েছেন নাজমুলের অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমও।
ফতুল্লায় ৬৪ রান করে অপরাজিত ছিলেন অনূর্ধ্ব-১৯ দলের আরেক ব্যাটসম্যান সাঈফ হাসান। তাঁর দল ঢাকা বিভাগ দ্বিতীয় ইনিংসে ৭ উইকেটে ২৩৩ রান করতেই শেষ ম্যাচ। খুলনার মেহেদী হাসান মিরাজ নিয়েছেন ৩ উইকেট।
খুলনায় ১৬তম প্রথম শ্রেণির সেঞ্চুরি পেয়েছেন ঢাকা মহানগরের মেহরাব হোসেন। রংপুর-মহানগর ড্র মেনে নিয়েছে শেষ দিন বেলা সাড়ে তিনটায়।
চতুর্থ রাউন্ড শেষে ৩৯ পয়েন্ট নিয়ে প্রথম স্তরে শীর্ষে খুলনা। চার বছর পর জয় পাওয়া বরিশাল শীর্ষে দ্বিতীয় স্তরে। দলটির পয়েন্ট ৩৭।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ঢাকা-খুলনা, ফতুল্লা
খুলনা: ১১৭ ও ৫০৬/৭ ডি.।
ঢাকা: ১৫৪ ও ২৩৩/৭ (সাঈফ ৬৪*, মাজিদ ৬০, রকিবুল ৩৪, নাদিফ ৩০, মিরাজ ৩/৭০, আবু বকর ২/২৫)
ফল: ড্র।
ম্যাচসেরা: নরুল হাসান (খুলনা)।
ঢাকা মহানগর-রংপুর, খুলনা স্টেডিয়াম
ঢাকা মহানগর: ২৪২ ও ৩৫২/৭ ডি. (মেহেরাব জুনিয়র ১০৯, আসিফ ৭৭* মাহামুদউল্লাহ ৫২।
তানভীর ৩/৭৩, নাসির ২/৪৪
রংপুর: ২৯৯ ও ৭২/৩ (আরফুর ৩১*, আসিফ ২/৩২)
ফল: ড্র।
ম্যাচসেরা: তানভীর হয়দার (রংপুর)।
বরিশাল-সিলেট, বগুড়া
বরিশাল- ১৫৫ ও ৪৬৪/৭ ডি.
সিলেট: ১৭২ ও ২৯৭ (জাকির ১৩৭*, অলক ৫৬, ইমতিয়াজ ৩২;
সোহাগ ৫/১১২, মনির ৩/৭১
ফল: বরিশাল ১৫০ রানে জয়ী।
ম্যাচসেরা: সালমান হোসেন ও সোহাগ গাজী (বরিশাল)
চট্টগ্রাম-রাজশাহী, চট্টগ্রাম
রাজশাহী: ২০৮ ও ২৭৩/৬ (নাজমুল শান্ত ১০১, মুশফিক ৫০*:
মেহেদি ২/৫২)
চট্টগ্রাম: ৩৫০
ফল: ড্র।
ম্যাচসেরা: নাজমুল হোসেন শান্ত (রাজশাহী)
২১ অক্টোবর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/রাসেল/মাহমুদ