রবিবার, ০৯ এপ্রিল, ২০১৭, ০৫:৪৬:৫১

মাশরাফিকে ২০১৯ সালের বিশ্বকাপে অধিনায়ক হিসেবে দেখতে চায় ক্রিকেটপ্রেমীরা: কিন্তু বিসিবি...

মাশরাফিকে ২০১৯ সালের বিশ্বকাপে অধিনায়ক হিসেবে দেখতে চায় ক্রিকেটপ্রেমীরা: কিন্তু বিসিবি...

ফয়সাল হোসেন: বাংলাদেশের ক্রিকেটে পালাবদলের হাওয়া লেগেছে মাশরাফির হাত ধরে। সেই মাশরাফি অনেকটা অপ্রত্যাশিতভাবেই টি-টুয়েন্টি ক্রিকেট হতে সরে যাওয়ার ঘোষনা দিয়েছেন। চার এপ্রিল নিজের ফেসবুক ভেরিফাইড পেজে সর্বপ্রথম অবসরের ঘোষনা দেন। বাংলাদেশের সবচেয়ে দর্শক প্রিয় খেলোয়াড়টির এই ঘোষনায় দারুণভাবে মর্মাহত বাংলাদেশের ক্রিকেট পাগল মানুষ, মর্মাহত তারই স্নেহতুল্য জাতীয় দলের খেলোয়াড়রা।

ক্রিকেটারদের নিয়ে দেশের দর্শকদের এক ধরনের উম্মাদনা আছে। আছে মাত্রাতিরিক্ত ভালোবাসা। আছে কোনো কোনো ক্ষেত্রে বিতর্কও। কিন্তু মাশরাফিই বোধহয় একমাত্র খেলোয়াড় যাকে দলমত নির্বিশেষে সবাই ভালবাসেন। বাংলাদেশের ক্রিকেটের একপ্রেরনার নাম মাশরাফি।

ক্রিকেটার মাশরাফি যতটা জনপ্রিয় তার থেকেও মনে হয় অধিক জনপ্রিয় অধিনায়ক মাশরাফি। বাংলাদেশের ক্রিকেটে মাশরাফির জনপ্রিয়তা মাপা যাবেনা। কিভাবে আগলে রেখেছেন দলের সিনিয়র জুনিয়র সকল ক্রিকেটারকে। অভয় দিয়েছেন সব ক্রিকেটারকে তার দু:সময়ে। পুরোদলকে কি দারুন দক্ষতায় বেধেছেন এক সুতোয়।

তাই তো মহানায়কের বিদায়ী ম্যাচে কিভাবে নিংড়ে দিয়েছেন সব ক্রিকেটার তা ছিল চোখে পড়ার মত। তাদের বডি ল্যাংগুয়েজই বলে দেয় এটি তাদের কাছে কোন সাধারণ ম্যাচ নয়, এটি তাদের মহানায়কের বিদায়ী ম্যাচ! এই ম্যাচে এতটুকু অবদান রাখতে পারলেই তা যেন দেয়া হবে তাদের প্রিয় ‘মাশরাফি ভাই' কে।

প্রথম উইকেট পাওয়ার পর সাকিবের বুনো উল্লাসই বলে দিচ্ছিলো এই ম্যাচ জয়ের জন্য কতটা মরিয়া বাংলাদেশ। তাইতো ম্যাচ শেষে সবাই বিজয় উল্লাসের বদলে মাশরাফিকে জড়িয়ে ধরার জন্য এগিয়ে আসলো। অসাধারণ এক বিদায়ী পুরস্কার দিয়েছেন প্রিয়নেতাকে।

মাশরাফি আসলে অন্য ধাতুতে গড়া। ইনজুরি এসে বারবার ধ্বংস করে দিতে চায় তাকে, কিন্তু আবার তিনি উঠে দাঁড়ান। সাত-সাতবার অস্ত্রোপচারও তাকে ক্রিকেট থেকে দূরে সরাতে পারেনি। এই অদম্য মনোবলটাই তিনি ছড়িয়ে দিয়েছেন দলে। এই সাফল্য এসেছে মাশরাফির অদম্য মনোবলে চড়েই।

২০১৫ সালের বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত পৌঁছে ক্রিকেট বিশ্বকেই চমকে দিয়েছিল বাংলাদেশ। বিশ্বকাপের পর বাংলাদেশ টানা ৬টি ওয়ানডে সিরিজ জিতেছে। এসবই মাশরাফির অবদান।

বাংলাদেশে মাশরাফির এত দর্শকপ্রিয়, জননন্দিত খেলোয়াড় আর কেউই নেই। তাইতো তার শর্টার ভার্সনের ক্রিকেটকে বিদায় বলার পর তাঁর ভক্তকুল আজ অশ্রুসজল। কলম্বোর মাঠে উপস্থিত গুটি কয়েক দর্শকের হাতেও ছিল প্ল্যাকার্ড ‘ক্যাপ্টেন উই উইল মিস ইউ’।

আসলেই বাংলাদেশের ক্রিকেট মিস করবে এই মহানায়কে। এই বিদায়ী ম্যাচ যদি দেশের মাটিতে খেলতে পারতো তাহলে তার প্রতি বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসার চুড়ান্ত নিদর্শন দেখতে পারতেন এই লড়াকু সৈনিক।

বিদায়ী ম্যাচের পুরস্কার বিতরণী মঞ্চের পাশে আকাশের দিকে তাকিয়ে হয়ত আবেগনিয়ন্ত্রন করেছেন মহানায়ক, নিজের কষ্টকে লুকিয়েছেন। আসলে মানুষ হিসাবে মাশরাফি বিশালমনের! নাহলে বিদায় বেলায়ও কি চমৎকারভাবে ক্রিকেটবোডের্র প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলেন। বাংলাদেশের ক্রিকেট পাগল মানুষ কখনো ভুলবে তাদের মহানায়ককে।

২০১৯ সালের বিশ্বকাপে বাংলাদেশের অধিনায়ক হিসেবে দেখতে চায় ক্রিকেটপ্রেমীরা। ক্রিকেটপ্রেমীদের এই চাওয়ার সাথে ক্রিকেট বোর্ডের চাওয়াটা মিললেই হয়।-খেলাধুলা  
০৯ এপ্রিল ২০১৭/ এমটি নিউজ২৪ডটকম/এপি/ডিসি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে