রবিবার, ০৯ এপ্রিল, ২০১৭, ০৯:২৩:৪০

আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্সের সাফল্যের মূলে আছেন সাকিব: হার্শা ভোগলে

আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্সের সাফল্যের মূলে আছেন সাকিব: হার্শা ভোগলে

স্পোর্টস ডেস্ক: প্রথমেই আমি একটা কথা স্বীকার করতে চাই, আর তা হলো আমি সত্যিই কোলকাতা নাইট রাইডার্সের খেলার ধরণ উপভোগ করি। তারা খেলাটাকে একদম হৃদয় দিয়ে খেলে। তাদের খেলায় আবেগ আছে, আর মাঠভর্তি পাগল সমর্থক আছে।

কিন্তু কেকেআর ভক্তদের এ বছর দুইটি ব্যাপার খুব খেয়াল করতে হবে।

আপনারা যদি চিন্তা করে দেখেন, পুরো দলটির ডিএনএ-ই কিন্তু গড়ে উঠেছে স্পিন বোলিংকে কেন্দ্র করে। তাদের আছে সাকিব, তাদের আছে নারাইন, চাওলা আর কুলদীপ যাদব। নারাইনের চার ওভার… ওই চার ওভারকে বাদই দেওয়া যায়।

 প্রতিপক্ষরা এতদিন ভেবে এসেছে নারাইনের চার ওভার বাদ দিয়ে কেকেআরের বিরুদ্ধে তাদের ১৬ ওভার খেলার সুযোগ আছে। কেকেআরের টিম কম্বিনেশনটা বেশ ভালোভাবেই খাপ খেত ইডেন গার্ডেনসের উইকেটের সাথে; যেটা স্পঞ্জি, ধীরগতির, আর স্পিনারদের জন্য ছিল অনেক সহায়ক। কিন্তু হঠাৎ করেই সৌরভ গাঙ্গুলী সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইডেন গার্ডেনসের উইকেটের চরিত্র আমূল বদলে ফেলার।

এখন প্রশ্ন হলো, কেকেআর কি এই পরিবর্তনের সাথে নিজেদের মানিয়ে নিতে পারবে? এটা বিশেষভাবে নির্ভর করবে তারা সিম বোলিংয়ে কেমন করে তার ওপর। এবং এখানেই একটা বড় শূন্যতা — আন্দ্রে রাসেল নেই!

আন্দ্রে রাসেল যে দলের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা বলার অপেক্ষা রাখে না। সে ৫, ৬, ৭ যেখানেই ব্যাট করুক, তার ক্যামিও ইনিংসগুলোই পারে ম্যাচের গতিপ্রকৃতি পাল্টে দিতে। আর বোলার রাসেল তো সম্ভবত সবচেয়ে আন্ডাররেটেডদের একজন। আপনারা খেয়াল করে দেখবেন, সে যেকোন লিগে যেকোন ফ্র্যাঞ্চাইজির হয়েই খেলুক, সবসময়ই শীর্ষ উইকেটশিকারীদের তালিকায় থাকে। কিন্তু সে তার বোলিং প্রতিভার সমাদর কখনো পায়নি। এবং এবার তো কেকেআর দলেও নেই।

রাসেলের অভাব পূরন করতে কেকেআর দলে টেনেছে ক্রিস ওকসকে। ওকস একজন অসাধারণ টেস্ট ক্রিকেটার। ইংল্যান্ডের হয়ে ওয়ানডেতেও সে যথেষ্ট সফল। কিন্তু সে কি একজন প্রভাবশালী টি-টোয়েন্টি অলরাউন্ডার হিসেবে নিজের সামর্থ্যের প্রমাণ দিতে পারবে? সাধারণত তার যে বোলিংয়ের ধরণ, ওরকম যদি সে আইপিএলেও ইংলিশ লেংথে বল করে যায় তবে সেগুলোর অধিকাংশেরই হয়ত গন্তব্য হবে স্ট্যান্ড। কিভাবে ওকস নিজেকে মানিয়ে নিতে পারে এবং কেকেআরের হয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে তা দেখার অপেক্ষায় থাকব।

তবে আমার সবচেয়ে ভালো লাগবে সাকিবকে যথাযথভাবে ব্যবহৃত হতে দেখতে। সাকিব বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়দের একজন, কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু কেন যেন কেকেআর আজ পর্যন্ত কখনোই তাকে সর্বোচ্চ গুরুত্বের সাথে ব্যবহার করেনি। তা সত্ত্বেও আমার কাছে মনে হয় কেকেআরের সাফল্যের চাবিকাঠি সাকিবই। এবং এবছর দলের যে লাইনআপ, তাতে সাকিবের একটা বিরাট ভূমিকা অবশ্যই থাকবে।

আমার কাছে আরেকটি বড় ইস্যু মনে হয় তাদের সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারাকে। পেস বোলিং মোকাবিলা করতে তারা ব্যাটিংয়ে কাকে পাঠাবে? ইউসুফ পাঠানের মত কাউকে, নাকি ঋষি ধাওয়ানের মত কাউকে? আবার বোলিং কি তারা নারাইনকে দিয়ে শুরু করবে, নাকি তারা পেসার হিসেবে ট্রেন্ট বোল্টকে প্রাধান্য দেবে?

আশা করি বোল্টের ইনজুরির সমস্যাগুলো কেটে গেছে, এবং এ মৌসুমে আমরা তাকে পরিপূর্ণ ফিট অবস্থায় দেখতে পাব, ইনিংসের শেষ ওভারগুলোতে সে ক্রিস ওকসকে যথাযথ সঙ্গ দিতে পারবে।

আরেকজন গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় হতে পারে ক্রিস লিন। আপনারা যারা বিগ ব্যাশ অনুসরণ করেন, নিশ্চয়ই তার হিটিং পাওয়ার দেখে অভিভূত হয়েছেন। লিনের স্পিনের বিরুদ্ধে রেকর্ড ভালো না। কিন্তু পরিবর্তিত ইডেন গার্ডেনস পিচে সে-ই হয়ত হয়ে উঠবে কেকেআরের সবচেয়ে বড় এক্স ফ্যাক্টর।

আমার দৃষ্টিতে একটি বড় চিন্তার বিষয় মনে হয় কেকেআর দলের ভারতীয় ক্রিকেটারদের বর্তমান ফর্ম। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় গৌতম গম্ভীর ও রবিন উথাপ্পার কথা। তারা সম্ভবত তাদের সেরা সময় পার করে এসেছে। একই কথা প্রযোজ্য ইউসুফ পাঠানের বেলায়ও। সবমিলিয়ে কেকেআরে অবশ্যই কিছু খামতি বা দুর্বলতা আছে, যেগুলো তারা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা চালাবে।-খেলাধুলা
০৯ এপ্রিল ২০১৭/ এমটি নিউজ২৪ডটকম/এপি/ডিসি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে