স্পোর্টস ডেস্ক : প্রথম ম্যাচটা একটা বিভ্রান্তি ছড়িয়ে দিয়েছিল। বাংলাদেশ 'এ' দল সব ম্যাচে জয়ের প্রত্যয় ব্যক্ত করে ভারত সফরে গিয়েছিল কিন্তু প্রথম ম্যাচেই হার। বিশাল ব্যবধানে হার। অধিকাংশ জাতীয় দলের খেলোয়াড় নিয়ে গড়া দলটা দাঁড়াতেই পারেনি। অথচ কিছুদিন আগে ভারত জাতীয় দল বাংলাদেশে এসেই পাত্তা পায়নি। সেখানে 'ছোটদের' কাছে হারটা চোখেই লাগছিল ক্রিকেটপ্রেমীদের। অবশ্য দ্বিতীয় ম্যাচেই ভুলটা ভেঙে গেছে।
বাংলাদেশ 'এ' বুঝিয়ে দিয়েছে ভারতের চেয়ে তারা শক্তিমত্তা বেশ এগিয়ে। বড় জয়ে সিরিজে ১-১ সমতা। সেই চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামেই আজ আবার ভারতের বিরুদ্ধে মাঠে নামছে বাংলাদেশ। ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচটি হয়ে গেছে অঘোষিত ফাইনাল। এ ম্যাচে যে জিতবে সিরিজ তাদের। তাই দুই দলের কাছেই এ ম্যাচ 'ডু অর ডাই'। তবে শক্তিমত্তায় বাংলাদেশ 'এ' দল এগিয়ে থাকলেও দুর্বলতা রয়েছে ঢের।
কেননা তারকা ব্যাটসম্যানরা নিজেদের নামের প্রতি সুবিচার করে ভারতের কন্ডিশনে ব্যাটিংয়ে জ্বলে উঠতে পারছেন না। প্রথম দুই ম্যাচের স্কোর কার্ডের দিকে তাকালে দেখা যায়, কেবলমাত্র লিটন কুমার দাস ও নাসির হোসেন ছাড়া বাকিরা কেউই রান করতে পারেননি। প্রথম ম্যাচে হারলেও দারুণ ব্যাটিং করেছিলেন লিটন। আর দ্বিতীয় ম্যাচ তো একাই জিতিয়ে দিয়েছেন নাসির হোসেন। অসাধারণ এক সেঞ্চুরির পর বল হাতে ৫ উইকেট।
তবে ভয়ের কারণ হচ্ছে, ব্যাটিংয়ে লিটন ও নাসির ছাড়া বাকিরা সবাই ব্যর্থ। দুই ওপেনার সৌম্য সরকার ও রনি তালুকদারের ব্যাটে রান নেই। দ্বিতীয় ম্যাচে রনি তো কোনো রানই করতে পারেনি। সৌম্য সরকার ভালো শুরু করেও তার ইনিংসটাকে বড় করতে পারেননি। ৩০ বল খেলে করেছিলেন ২৪ রান। অধিনায়ক মুমিনুল হকও ব্যাট হাতে দুই ম্যাচেই ব্যর্থ। জাতীয় দলের মারকুটে ব্যাটসম্যান সাবি্বর রহমান যেন খেই হারিয়ে ফেলেছেন। যে সাবি্বর বিশ্বসেরা বোলারদের অনায়াসে নাকানি-চুবানি খাওয়ানোর সক্ষমতা রাখেন তিনি কিনা ভারতের বিরুদ্ধে দুই ম্যাচে খোলস থেকে বের হতে পারেননি।
যে উদ্দেশ্যে জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের পাঠানো হলো সে উদ্দেশ্য তো পুরোপুরি সফল হচ্ছে না। ক্রিকেটাররা ভারতীয় কন্ডিশনের সঙ্গে পরিচিত হচ্ছে ঠিকই কিন্তু দ্রুত নিজেদের মানিয়ে নিতে পারছে কোথায়! তাছাড়া পাশাপাশি দুই দেশের কন্ডিশনে আহামরি পার্থক্য থাকার কথাও নয়। তারপরেও কেন যেন ভালো করতে পারছেন না ব্যাটসম্যানরা।
তবে ব্যাটসম্যানদের তুলনায় বোলাররা ভালোই করছেন। প্রথম ম্যাচে বুঝতে না পারলেও দ্বিতীয় ম্যাচে লাইনলেন্থ ঠিক রেখেই বোলিং করেছেন। পেস-স্পিন দুই বিভাগেই সফলতা। তাই তো দেখা গেছে, নাসিরের স্পিন জাদুর দিনে চার উইকেট তুলে নিয়েছেন রুবেল হোসেনও। রান দেওয়ার ক্ষেত্রে বেশ হিসেবী ছিলেন রুবেল।
আজকের ম্যাচ জিততে হলে শুধু বোলারদের ভালো করলেই হবে না। পাশাপাশি ব্যাটসম্যানদেরও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। বিশেষ করে, ওপেনারদের দায়িত্বটা অনেক বেশি। কেননা ইনিংসের ভিত্তিটা মজবুত না হলে বড় ইনিংস আশা করা কঠিন। তবে প্রথম দুই ম্যাচ থেকে যদি ক্রিকেটাররা শিক্ষা নেন তাহলে আজকের ম্যাচে মুমিনুল-নাসিরদের হারার কোনো কারণ নেই।
বাংলাদেশ ‘এ’ দল : মুমিনুল হক (অধিনায়ক), নাসির হোসেন, এনামুল হক, রনি তালুকদার, লিটন কুমার দাস, সাব্বির রহমান, সৌম্য সরকার, আরাফাত সানী, রুবেল হোসেন, আল-আমিন হোসেন ও শফিউল ইসলাম।
ভারত ‘এ’ দল : উন্মুখ চাঁদ (অধিনায়ক), মানাক আগারওয়াল, মণিষ পান্ডে, সুরেশ রায়না, করুন নাইর, সানজু স্যামসন, কর্ণ শর্মা, অরবিন্দ শ্রীনাথ, ধাওয়াল কুলকার্নি, রুশ কালারিয়া ও গুরকিরাত সিং মান।
২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এস.এ.সুমন/একে