১০০০ রানের রেকর্ড গড়ার পরের দিনই ক্রিকেট থেকে বিতাড়িত!
স্পোর্টস ডেস্ক: প্রণব ধনওয়াড়। গত কয়েক দিন ধরে ক্রিকেট পাড়ার সবচেয়ে আলোচিত নাম তিনি। এক ইনিংসে একহাজার রান করে আলোচনায় ভারতীয় এই স্কুল বালক। তবে ক্রিকেট-দুনিয়া কাঁপিয়ে দেয়ার পরের দিন প্রণব ধনওয়াড়ের জীবন থেকে ক্রিকেটটাই বিতাড়িত!
বুধবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত প্রণবের সময়টা কেটেছে বিভিন্ন সংবর্ধনা ও মিডিয়ার সামনে। এত্ত ঝট্টিঝামেলার মাঝেও তার পরিবার কোচ মোবিন শেখের সঙ্গে পরামর্শ করে ঠিক করে ফেলেছেন এখন কোন খেলা নয়। আপতত তাদের যোগ্যপুত্র পড়াশোনায় মন দেক।
এ নিয়ে কোচ মবিন বলেনআজ সকাল থেকে আমাদের উপর যা চলছে, আমি তো নিজের নামটাই ভুলতে বসেছি! সকাল থেকে আমাদের কিছু খাওয়াও হয়নি। একটা টিভি স্টুডিও থেকে আর একটায় ছুটে যাচ্ছি সারা দিন,’’
প্রণবের কেরিয়ার থেকে পড়াশোনা, সবেতেই যাঁর মতামত সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পায় ধনওয়াড়ে পরিবারে। মোবিনের কথায়, ‘‘লোকে ভাবছে আমরা খুব খুশি। হ্যাঁ, আনন্দ তো হচ্ছেই। কিন্তু তার চেয়েও বেশি করে আমাদের ভয় করছে। এই যে হঠাৎ করে প্রচারে এসে পড়ল আমাদের ছেলেটা, এতে না ওর ক্ষতি হয়ে যায়!’’
তবে প্রণবে বাবা প্রশান্তের মুখে শোনা গেল ভিন্ন কথা। ছেলে আমার যত বড়ই হোক না কেন। তার পা দুটো যাতে মাটিতে থাকে। সে যাতে পড়াশুনা ও খেলাধুলাটা চালিয়ে যায়। আমাদের লক্ষ্য এখন এটাই।
এ দিনই এমসিএ জানিয়েছে, আগামী পাঁচ বছর প্রতি মাসে দশ হাজার টাকা করে পাবে প্রণব। তার ক্রিকেট থেকে পড়াশোনা, সবের উপর নজর রাখবে এমসিএ। অটোচালক প্রশান্তের পরিবার এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছে, কিন্তু সঙ্গে তারা সতর্কও। বলা হচ্ছে, টাকাটা সব নয়। আসল হল, প্রণবকে ক্রিকেটার হিসেবে গড়ে তোলা। লেখাপড়াটাও পাশাপাশি চালিয়ে যাওয়া। তার পর টাকা উপার্জনের জন্য গোটা জীবন পড়ে থাকছে। এখনই বিশাল টাকার অঙ্কে পনেরোর কিশোরের মাথা ঘুরে যাক, চান না তার শুভানুধ্যায়ীরা।
কিন্তু ক্রিকেট থেকে এই নির্বাসন প্রণবের সহ্য হবে কি না, তা নিয়ে নিঃসন্দেহ নন প্রশান্ত বা মোবিন। কারণ? গত বছরই ক্লাস টেনে ওঠার পর ক্রিকেট ছেড়ে পড়ার বইয়ে মন দিতে বলা হয়েছিল তাকে। তিন মাস ‘বনবাস’ কাটিয়ে প্রণব ছুটে গিয়েছিল ক্রিকেট-মাঠে। কোচ-পরিবারকে প্রায় কেঁদে আবেদন করেছিল, অনেক হয়েছে। ক্রিকেট ছেড়ে আর থাকতে পারছি না! সূত্র : আনন্দ বাজার
৭ জানুয়ারি,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/আরিফুর রাজু/এআর