শুক্রবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬, ০৩:০২:১০

সবই ওপরওলার ইচ্ছা, তিনি যা করেন ভালোর জন্যই করেন: মুস্তাফিজ

সবই ওপরওলার ইচ্ছা, তিনি যা করেন ভালোর জন্যই করেন: মুস্তাফিজ

ক্রীড়া প্রতিবেদক : দুবাই বিমানবন্দরে পৌঁছে একটা সেলফি তুললেন মুশফিকুর রহিম। সেলফির ফ্রেমে বন্দী তামিম ইকবাল আর সাকিব আল হাসানও। ফেসবুকে এই ছবির সঙ্গে মুশফিকের স্ট্যাটাস, ‘আলহামদুলিল্লাহ, দুবাই পৌঁছে গেছি...।’

মুশফিক, সাকিব, তামিমের সঙ্গে ছবিতে থাকতে পারত আরও একটা মুখ—মুস্তাফিজুর রহমান। কিন্তু বাঁ কাঁধের চোট এমনই শত্রুতা করে বসল যে, দুবাইয়ে কাল শুরু হওয়া পাকিস্তান সুপার লিগের (পিএসএল) আগে তিনি সুস্থই হতে পারলেন না!

জাতীয় দলের ফিজিও-ট্রেনার নির্বাচকদের জানিয়েছেন, ১৮ ফেব্রুয়ারির আগে মুস্তাফিজের পক্ষে কোনো ম্যাচে বল করা সম্ভব হবে না। এই সময়টায় চলবে তার পুনর্বাসনপ্রক্রিয়া। শুরুতে বাঁহাতি এই পেসারের পিএসএলে খেলার সম্ভাবনা নিয়ে যা-ই বলা হোক না কেন, মুস্তাফিজের দুবাই যেতে না পারার আনুষ্ঠানিক কারণ এটাই।

বিদেশের ঘরোয়া টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের খেলতে যাওয়া নতুন নয়। তবে অন্য ক্রিকেটারদের সে সুযোগ পেতে যত সময় লেগেছে, মুস্তাফিজের তা লাগেনি। মাত্র ২ টেস্ট আর ৯ ওয়ানডে খেলেই সাকিব, মুশফিক, তামিমের সঙ্গে ডাক পান পাকিস্তানের ঘরোয়া টি-টোয়েন্টির আসর পিএসএলে। কিন্তু দুর্ভাগ্যের চেয়ে বড় শত্রু আর কি আছে!

দেরিতে ভিসা পেয়েও মুশফিক-সাকিব-তামিমরা যখন দুবাইয়ে হাসিমুখে সেলফি তুলছেন, মুস্তাফিজ তখন ঢাকায় চোট কাঠিয়ে ওঠার জন্য পুনর্বাসনপ্রক্রিয়ায় আছেন। কাল সন্ধ্যায় মুঠোফোনে আফসোস ঝরল তার কণ্ঠে, ‘সবাই চলে গেল...ওনাদের সঙ্গে যেতে পারলে অবশ্যই ভালো লাগত। কিন্তু চোটে পড়লে তো কিছু করার নেই। দুবাই গেলেও আমি আমার আসল বলগুলো করতে পারতাম না।’

শুরুতে যখন জানলেন, পিএসএলে লাহোর কালান্দারসে খেলবেন...কী যে খুশি হয়েছিলেন মুস্তাফিজ! কিন্তু ক্রিস গেইল, ডোয়াইন ব্রাভোদের সঙ্গে একই দলে খেলার রোমাঞ্চটা আর পাওয়া হলো না তার, ‘বিদেশের একটা টুর্নামেন্টে বড় খেলোয়াড়দের সঙ্গে খেলব...এসব ভেবে তখন খুবই এক্সাইটেড ছিলাম! এখন তো আর ভেবে লাভ নেই...।’

জিম্বাবুয়ে সিরিজে চোটে পড়ার পর খুলনাতেই জাতীয় দলের অনুশীলন ক্যাম্পের শেষ দিকে বোলিং শুরু করেন মুস্তাফিজ। মাঝে সাতক্ষীরায় নিজের বাড়ি থেকে ঘুরে এসে এখন ঢাকায় করছেন বোলারদের বিশেষ অনুশীলন। সেখানে বোলিং করলেও থাকছে অনেক বিধিনিষেধ, ‘আমার যেগুলো বিশেষ বল...স্লোয়ার বা কাটার, ওগুলোর কিছুই করছি না এখন। ফিজিওর কথা অনুযায়ী শুধু জোরের ওপর স্বাভাবিক বল করে যাচ্ছি।’

মুস্তাফিজ চাইলেও এখন স্লোয়ার-কাটার দিতে পারবেন না, তা অবশ্য নয়। ওই ডেলিভারিগুলোতে হাতের কিছু পেশির ওপর বেশি চাপ পড়ে বলেই বন্ধ রাখা হয়েছে এসব ডেলিভারি। জাতীয় দলের ফিজিও বায়েজিদুল ইসলাম এটাকে বলছেন সতর্কতামূলক ব্যবস্থা, ‘সামনে আমাদের অনেক গুরুত্বপূর্ণ খেলা আছে। সে জন্যই মুস্তাফিজের বোলিং হাতকে যতটা সম্ভব বিশ্রাম দেওয়া হচ্ছে। অনুশীলনে এখন তাঁকে যে বোলিং করানো হচ্ছে, সেটা শুধু অভ্যাস আর বোলিং ফিটনেস ধরে রাখার জন্য।’

পিএসএলে খেলে অভিজ্ঞতার পাশাপাশি কিছু অর্থযোগও হতো মুস্তাফিজের। টুর্নামেন্টে তার দাম ছিল ৫০ হাজার ডলার। কাঁধের চোটে হাতছাড়া হলো সবই। তবে মুস্তাফিজ ২০ বছর বয়সেই জেনে গেছেন স্বপ্ন আর বাস্তবতার জগৎ ভিন্ন। আফসোস করার চেয়ে তাই তিনি মেনে নিচ্ছেন ভাগ্যকেই, ‘সবই ওপরওলার ইচ্ছা। তিনি যা করেন ভালোর জন্যই করেন।’ -প্রথম আলো
৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬/এমটি নিউজ২৪/এসবি/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে