স্পোর্টস ডেস্ক : সাকিব আল হাসান তার শেষ ম্যাচটা খেলার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। মিরপুর থেকেই টেস্ট ক্যারিয়ারের ইতি টানতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সেটা সম্ভব হয়নি। তাই ধরে নেওয়া যায় বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের ক্যারিয়ার কানপুরেই শেষ হয়ে গেছে। তিনি দলে থাকলে কম্বিনেশনের কারণে কাটা পড়তেন তাইজুল ইসলাম। এবার তার না থাকায় এই বাঁহাতি স্পিনারের জায়গা পাকাপোক্ত হলো।
সাকিবহীন প্রথম টেস্টে আজ ক্যারিয়ারের ১৩তম ৫ উইকেটের দেখা পেয়েছেন। সাকিবহীন বাংলাদেশের ড্রেসিং রুমের পরিকল্পনা সাজানো হয় কীভাবে? এনিয়ে কৌতুহলের শেষ নেই। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টের প্রথম দিন শেষে সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্ন উঠে এ নিয়ে।
যার জবাবে দলের প্রতিনিধি হয়ে আসা তাইজুল জবাব দেন, ‘প্রথম প্রশ্ন হচ্ছে আপনার সাকিব ভাই নাই তাই তো। সাকিব ভাই নাই, সাকিব ভাই ছাড়া যে আমি খেলি নাই তা তো না। আমি থাকা পর্যন্ত অনেক ম্যাচ সাকিব ভাই ছাড়া খেলছি। আমরা নিউজিল্যান্ডে টেস্ট জিতছি, সাকিব ভাই ছিল না, আমরা যখন নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে এখানে ম্যাচ জিতছি; সাকিব ভাই ছিল না। এরকম অনেক উদাহরণ আছে। আসলে আপনি তো একটা খেলোয়াড়কে ৫০ বছর খেলাতে পারবেন না।’
তিনি যোগ করেন, ‘কখনো একজন আসবে, একজন যাবে। ১০ বছর, ১৫ বছর, খুব বেশি হলে ২০ বছর; এটা আমাদের মেনে নিতেই হবে। আসলে কোনো সন্দেহ নেই উনি অনেক ভালো খেলোয়াড় ছিল। কিন্তু আমরাও দোয়া করবো, আপনারাও দোয়া করবেন উনার মতো যেন আরেকজন আসে বা এখন যারা আছে তারাও যেন ভালো পারফরম্যান্স করে।’
মিরপুরে খেলা হলে দিনশেষে অবধারিতভাবে উইকেটের প্রসঙ্গ আসবেই। এবারও এসেছে। তাইজুল বলেন, ‘আপনি যখন যেখানে খেলতে যাবেন না কেন তাদের হোম অ্যাডভান্টেজ সবাই নিবে। এটাই সত্য। তো আসলে তারাপরেও ভালো খেলাটা জরুরি। তো উইকেট যেমনই হোক, আমরা সব সময় চাবো যে ভালো খেলার জন্য এবং ভালো খেলতে হয়তোবা ম্যাচ আমাদের দিকে থাকবে।’
টেস্টে ২০০ উইকেট বাংলাদেশের বাস্তবতায় বিরাট অর্জন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘না আসলে ফিলিংস তো অবশ্যই ভালো লাগার বিষয়। তো ওয়ার্ল্ডে হয়তো অনেক বোলারই আছে, যাদের ২০০ উইকেট আছে বা ৩০০-৪০০ আছে। তো আমাদের বাংলাদেশের হয়তো বা এতোদিন টেস্ট খেলি না যে অনেক জনের হবে। তারপরেও যে ২-১ জন আছি, তার মধ্যে আমি একজন। এটা আসলে প্রাউডের কোনো বিষয় না। এটা আলহামদুল্লিলাহ দিয়েছে, হয়েছে আরকি।’
সাকিব না থাকায় কি তাইজুলের একাদশের দরজা খুলে গেল? এর উত্তরে তিনি বলেন, ‘আসলে আমাদের দেশে সত্যি কথা বলতে কী, অনেক সময় দেখবেন যে অনেক কিছুই মুখে মুখে হয় আর কী। মুখে মুখে বিষয়টা হলো, অনেকে আছে খারাপ করেও অনেক সময় আছে ট্রল হতে হতে তারকা হয়ে গেছে। আবার অনেক ভালো করে তারকা হতে পারেনি। এরকম অনেক হয়েছে। আমি এটা মেনে নিয়েছি। মেনে নেওয়া ছাড়া কোনো (উপায়) নাই।’
ক্যারিয়ার নিয়ে কী কোনো আফসোস হয়? তাইজুল এমন প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ‘না ক্যারিয়ার যে খুব খারাপ আছে তা আমি বলব না। আলহামদুল্লিলাহ ক্যারিয়ার ভালো আছি। আসলে সব কন্ডিশনে সব সময় তিনটা স্পিনার খেলাইতে পারবেন না। বা দেখা যাচ্ছে অনেক সময় একটা স্পিনারই খেলাতে হবে। তো আমার কাছে মনে হয় যে এই রকম মিসিং হয় নাই যে যেখানে তিনটা স্পিনার খেলানো দরকার সেখানে এক বা দুইটা স্পিনার খেলাইছে। তো এই রকম কখনও হয় নি। কিন্তু কখনও ইন, কখনও আউট- আমার যতদিনের ক্যারিয়ার হইছে আলহামদুল্লিলাহ। এতে হয়তো বা বেশি ম্যাচ হওয়াটা উচিত ছিল। সে জায়গা থেকে হয় নাই আরকি।’
সাকিব আর তাইজুলের মধ্যে কী পার্থক্য জানতে চাইলে তাইজুল বলেন, ‘না একটা দল যখন খারাপ খেলে, তখন ফেয়ার আসলে কোনোভাবেই হয় না। সেটা আপনি ভালো উইকেট দেন আর খারাপ উইকেট দেন। জিনিসটা আসলে ওই রকম না। আমার কাছে মনে হয় যে ভালো খেলাটা জরুরি। কন্ডিশন হয়তোবা একটু এইদিক ওইদিক হতে পারে। নিউজিল্যান্ড-দক্ষিণ আফ্রিকায় গেলে অবশ্যই আপনাকে লো উইকেট দিবে না। বা দেখা যাচ্ছে যে একেবারে ফ্লাট উইকেট দিবে না। মুভমেন্ট থাকবেই- আমার কাছে মনে হয় যে উইকেটের দোষ দিয়ে লাভ নাই।’