স্পোর্টস ডেস্ক : সম্প্রতি বাংলাদেশের ক্রিকেটে সময়টা একবারেই ভালো যাচ্ছে না। পাকিস্তানের মাটিতে ঐতিহাসিক জয়ের পর ভারতের মাটিতে টি-টোয়েন্টিতে ও টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে টাইগাররা।
এরপর ঘরের মাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকা টেস্ট সিরিজেও ইতিমধ্যে ১-০তে পিছিয়ে রয়েছে নাজমুল হোসেন শান্তরা। দলের এমন আত্মবিশ্বাস এবং টিম স্পিরিটের ঘাটতিতে টাইগারদের নেতৃত্ব থেকে সরে দাড়ানো সিদ্ধান্ত নিয়েছেন শান্ত। ক্রিকেটবিষয়ক ওয়েবসাইট ক্রিকবাজের এক প্রতিবেদনে এমনটায় জানায়।
তবে শান্তর দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়ার জন্য আমাদের দেওয়া অতিরিক্ত চাপকেই দেখছেন বিসিবি পরিচালক নাজমুল আবেদীন ফাহিম; গণমাধ্যমকে এমণটায় জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘তার (শান্ত) মতো একজন খেলোয়াড়ই আমাদের কারণে অধিনায়কত্ব করতে পারছে না। আমাদের মতো দেশে অধিনায়ক হওয়া মানে সব সময় চাপে থাকতে হবে, ভালো পারফরম্যান্স হবে না, তাকে নিয়ে আমরা যে পরিমাণ সমালোচনা করি, যেভাবে সমালোচনা করি, তার জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। তার ভালো না খেলার কারণও হয়তো সেটা।’
বিসিবি পরিচালক নাজমুল আবেদীন ফাহিম যদিও শান্তর অধিনায়কত্ব ছাড়ার বিষয়ে নিশ্চিত কোনো তথ্য দিতে পারেননি। তবে তার ভাষ্যে শান্ত চাপটা নিতে পারছেন না। তিনি বললেন, ‘আমার মনে হয় খুব প্রয়োজন ছিল ওর পাশে থাকা, ওকে সমর্থন দেওয়া। এটা মনে রাখা, সে বাংলাদেশ দলের মতো একটা দলের অধিনায়ক। এই দল খুব অধারাবাহিক। সে নিজেও একজন তরুণ খেলোয়াড়। ওর ব্যাপারে আরেকটু সহানুভূতিশীল হওয়া প্রয়োজন ছিল। আমরা যদি শান্তকে না রাখি অধিনায়ক হিসেবে কিংবা সে যদি না থাকতে চায়, কারও না কারও কাছে যেতে হবে আমাদের। তাকে (নতুন অধিনায়ক) তো সেই একই ব্যাপারের মুখোমুখি হতে হবে।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘এখানে শান্তর মতো তরুণ অধিনায়কের পাশে বিসিবির থাকা উচিত। এক দিনেই স্টিভ ওয়াহ, হঠাৎ করেই ইমরান খান-ধোনি হওয়া যায় না। আমাদের সংস্কৃতিতে অধিনায়কত্ব গড়ে ওঠে না। আমরা শান্তকে অধিনায়ক হিসেবে গড়ে তুলতে অনেক সময় বিনিয়োগ করেছি। কোনো সমস্যা হলে আলোচনা করে সমাধানের পথে হাঁটতে চায় বোর্ড।’
জাতীয় দলের অধিনায়ক শান্ত দীর্ঘ সময় ধরেই ব্যাট হাতে ছন্দে নেই। তিনি ধারাবাহিকভাবে পারফর্ম করতে পারছেন না। টানা ১৬ ইনিংসে শুধু একটি ৮০ রানের ইনিংসই তাঁর বড় প্রাপ্তি, ভারতের বিপক্ষে চেন্নাইয়ে দ্বিতীয় টেস্টে খেলেছিলেন এই ইনিংস। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সদ্য সমাপ্ত মিরপুর টেস্টে করেছেন ৭ ও ২৩ রান। অন্য দুই সংস্করণেও তিনি দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে পারছেন না প্রত্যাশা অনুযায়ী।
বিসিবি সূত্রে জানা যায়, শান্ত মৌখিকভাবে বোর্ডকে জানিয়েছেন, তিনি আর কোনো সংস্করণে অধিনায়কত্ব করতে চান না। বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ দেশের বাইরে আছেন; ফিরবেন আগামীকাল। তিনি ফিরলেই অধিনায়কত্বের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে পারে বিসিবি।
শান্তর অধীনে ৯টি টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ। তাঁর অধীনে তিন ম্যাচে জয়ের পাশাপাশি টাইগাররা হেরেছে ৬ ম্যাচে। পাকিস্তানের মাটিতে ঐতিহাসিক টেস্ট সিরিজ জয়ও এসেছে শান্তর অধীনেই। ওয়ানডেতে তাঁর অধীনে ৯ ম্যাচ খেলে বাংলাদেশ জয় পেয়েছে ৩ ম্যাচে, হেরেছে ৬টি। এছাড়া টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ দলকে তিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন ২৪ ম্যাচে, তাঁর অধীনে সবথেকে বেশি জয়ও এসেছে এ ফরম্যাটেই, ১০ ম্যাচে।