স্পোর্টস ডেস্ক : সব প্রতিক্ষার অবসান, পূরণ হলো বাংলাদেশের কোটি ফুটবলপ্রেমীদের আশা। হামজা চৌধুরী এখন আনুষ্ঠানিকভাবেই বাংলাদেশের খেলোয়াড়। বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) ফিফার ছাড়পত্র পেয়েছেন তিনি।
এখন আর লাল-সবুজের জার্সি গায়ে জড়াতে কোনও বাধা নেই তার। তবে শুধু খেলবেনই না, বাংলাদেশের ফুটবলে রাখতে চান ভূমিকা, ফুটবলারদের দেখাতে চান ইউরোপীয় লিগের পথ। ইংল্যান্ডের খ্যতিনামা ফুটবল সাময়িকী দ্য অ্যাথলেটিককে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা জানান হামজা।
২৭ বছর বয়সী এই ফুটবলারের জন্ম এবং বেড়ে ওঠা ইংল্যান্ডেই। বাংলাদেশি বাবা-মায়ের ঘরে জন্ম নেওয়া হামজার ফুটবলে হাতেখড়ি লেস্টার সিটির একাডেমিতে। পরে এই ক্লাবের মূল দলের হয়ে প্রিমিয়ার লিগে খেলেছেন, অধিনায়কত্ব করেছেন। এছাড়া দলকে জিতিয়েছেন এফএ কাপের শিরোপা।
ইউরোপের দ্বিতীয় সেরা ক্লাব টুর্নামেন্ট বলা হয় ইউরোপা লিগকে। সেখানেও খেলার অভিজ্ঞতা আছে হামজা চৌধুরীর। এছাড়া উয়েফা কনফারেন্স লিগেও খেলেছেন বাংলাদেশের এই ফুটবলার। ইউরোপীয় ফুটবলের সর্বোচ্চ পর্যায়ে খেলা একজন ফুটবলারের বাংলাদেশের হয়ে খেলাটা যেকোনো বিবেচনাতেই বিশাল এক অর্জন।
দ্যা অ্যাথলেটিককে হামজা বলেছেন, ‘বাংলাদেশ, বিশেষ করে বাংলাদেশের মানুষকে আমি প্রতিনিধিত্ব করবো, এই ব্যাপারটা আমার মাথায় সবসময়ই ছিল। এর মধ্যে বাংলাদেশের ফুটবলপ্রেমীদের সঙ্গে আমার ভালো একটা সংযোগ তৈরি হয়েছে। প্রতিদিনই তারা আমাকে বার্তা পাঠায়, দেশে আসো, খেলো।’
বাংলাদেশের মানুষের এ চাওয়াই হামজাকে বাংলাদেশের ফুটবল নিয়ে আরও ভাবিয়েছে। তিনি চেয়েছেন বাংলাদেশের ফুটবলকে বিশ্বের সামনে পরিচয় করিয়ে দিতে। ‘আমার মনে হয়েছে, ফুটবল দুনিয়ায় বাংলাদেশকে আরও পরিচিত করে তুলতে আমিও এমনটাই চাই।’
তার চোখে ক্রিকেট নয়, ফুটবলই বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা। ‘এটা হয়তো এক ধরনের ভুল ধারনা যে ক্রিকেটই বাংলাদেশের প্রধান খেলা। এটা ঠিক, ক্রিকেটেই সাফল্য বেশি এসেছে। কিন্তু আমার মনে হয়, সবার মূল খেলা ফুটবলই, যেটা তারা দেখতে ও খেলতে পছন্দ করে।’
হামজা চৌধুরী আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ ফুটবল-পাগল। আমি আশা করি, আমি আরও বেশিসংখ্যক বাংলাদেশি ফুটবলারের জন্য ইউরোপে সেরা লিগে খেলার পথটা তৈরি করে দিতে পারি।’
শুধু তাই নয়, বাংলাদেশের বয়সভিত্তিক ফুটবল উন্নয়নেও কাজ করতে চান হামজা। ‘আশা করি, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আমি বাংলাদেশের বয়সভিত্তিক ফুটবল উন্নয়নের কাঠামো তৈরিতে স্থানীয় ফুটবল ক্লাবগুলোর সঙ্গে কাজ করতে পারবো।’
হামজা চৌধুরী বলেন, ‘আমি জানি, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন এরই মধ্যে অনেক কাজ করেছে। তবে আমি যদি ওদের ভিন্ন একটা দৃষ্টিকোণ দিতে পারি, যেটা ইউরোপিয়ান দৃষ্টিভঙ্গি, আশা করি সেটা কাজে দেবে।’