স্পোর্টস ডেস্ক : আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির নবম আসর শুরু থেকেই চলছে নাটকীয়তা। পাকিস্তানের মাটিতে খেলতে না যাওয়ার ব্যাপারে শেষপর্যন্ত অনড় ছিল ভারত। ফলে আইসিসির প্রথম কোনো ইভেন্ট হাইব্রিড মডেলে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
এ ছাড়া ভারতের জার্সিতে আয়োজক পাকিস্তানের নাম থাকবে না বলেও গুঞ্জন উঠেছিল। অবশ্য পরে সেরকম কিছু হয়নি আইসিসির বাধায়। তবে ভারত-বাংলাদেশ ম্যাচেই ফের বিপত্তি বেধেছে।
গতকাল (বৃহস্পতিবার) চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে নিজেদের প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশ-ভারত। সেই ম্যাচের সরাসরি সম্প্রচারিত ফিডে দেখা যায়নি পাকিস্তানের নাম। সাধারণত টুর্নামেন্টের লোগোর সঙ্গে আয়োজকদের নামও স্ক্রিনের এক কোণায় প্রদর্শনের কথা ছিল। যেমনটা খেলোয়াড়দের জার্সিতে থাকে।
কিন্তু বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচে আইসিসি ও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সম্মিলিত লোগোর নিচে ছিল পাকিস্তানের নামটি। যা নিয়ে বেজায় ক্ষেপেছে দেশটির ক্রিকেট বোর্ড পিসিবি। যার ব্যাখ্যা চেয়ে তারা আইসিসিকে চিঠিও দিয়েছে।
ক্রীড়াভিত্তিক ওয়েবসাইট ইএসপিএন ক্রিকইনফো এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ-ভারতের লাইভ ব্রডকাস্টিংয়ের সময় লোগোতে আয়োজকদের নাম না থাকায় আইসিসির কাছে ব্যাখ্যা চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছে পিসিবি।
ভারতের ৬ উইকেটে জয়ের পুরো ম্যাচটিতেই লোগোতে পাকিস্তানের নাম দেখা যায়নি। এর আগে টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচে পাকিস্তান-নিউজিল্যান্ড এবং আজ তৃতীয় ম্যাচ খেলছে দক্ষিণ আফ্রিকা-আফগানিস্তান। পাকিস্তানের মাটিতে হওয়া এই দুটি ম্যাচের ব্রডকাস্ট লোগোতে দেশটির নাম থাকলেও, অনুপস্থিত ছিল গতকালের ম্যাচে।
এই ঘটনায় ব্যাখ্যা চাওয়ার পাশাপাশি আর যেন না ঘটে, আইসিসির কাছে সেই নিশ্চয়তা চেয়েছে পিসিবি। আইসিসিও নাকি আনুষ্ঠানিকভাবে বিষয়টি প্রযুক্তিগত ভুল ছিল বলে জানিয়েছে।
বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির বরাতে ক্রিকইনফো বলছে, আগেভাগেই গ্রাফিক্স প্রস্তুত করে আইসিসি ফিডের (খেলার সম্প্রচারে ব্যবহার) জন্য সরবরাহ করা হয়েছিল। যেখানে লোগোর নিচেই আয়োজক পাকিস্তানের নাম রয়েছে। তবে ওই ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট হয়নি পিসিবি, বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচের বিতর্কিত ঘটনায় তার নাখোশ।
সে কারণে পরবর্তী কোনো ম্যাচে আর এমন ঘটনা ঘটবে না বলে আইসিসি নিশ্চিত করেছে বলে প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করা হয়েছে। আইসিসির মতে– এটি টেকনিক্যাল ত্রুটির কারণে হয়েছে এবং পরবর্তী কোনো আর এরকম হবে না।
সেটি হোক পাকিস্তান কিংবা দুবাইয়ের কোনো ম্যাচ। হাইব্রিড মডেল অনুসারে দুবাইয়ের নিরপেক্ষ ভেন্যুতে কেবল ভারতের ম্যাচগুলো হবে। যেখানে পরবর্তী ম্যাচে ২৩ ফেব্রুয়ারি মুখোমুখি হবে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত-পাকিস্তান। এই হাইভোল্টেজ ম্যাচটি নিয়ে এমনিতেই ক্রিকেটবিশ্বের ব্যাপক উন্মাদনা!
অনেক আগে থেকেই রাজনৈতিক বৈরিতার কারণে পাকিস্তানের মাটিতে না খেলতে যাওয়ার কথা জানিয়ে আসছিল ভারত। শেষ পর্যন্ত ভারতীয় সরকার ক্রিকেট দলকে দেশটিতে ভ্রমণের অনুমতি দেয়নি বলে জানায় বিসিসিআই।
পাকিস্তানও দীর্ঘ ২৮ বছর পর কোনো আইসিসি ইভেন্ট আয়োজনের সুযোগ হাতছাড়া করতে চায়নি। ফলে উভয়পক্ষ শেষ পর্যন্ত হাইব্রিড মডেল মেনে টুর্নামেন্টটিতে অংশগ্রহণের ব্যাপারে সম্মতি দেয়। যা অনুসরণ করা হবে ভারত-পাকিস্তানে হতে যাওয়া পরবর্তী ৩ বছরের সকল আইসিসি ইভেন্টেও।