স্পোর্টস ডেস্ক : দিন দিন দর্শক বাড়ছে মেয়েদের খেলায়। ফুটবল, ক্রিকেট, টেনিস, হকিসহ বিভিন্ন খেলায় এগিয়ে যাচ্ছে মেয়েরা। জনপ্রিয়তার সাথে সাথে বাড়ছে টিভি স্বত্বের দাম, যার কারণে মেয়েদের খেলায় আগ্রহ বাড়ছে বিজ্ঞাপনদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোরও। এই সবকিছু মিলিয়ে আয় বাড়ছে নারী ক্রীড়াবিদদেরও।
গত বছর সবচেয়ে বেশি আয় করা ১৫ জন নারী ক্রীড়াবিদ আয় করেছেন ২২ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার। আগের বছরের তুলনায় যা ২৭ শতাংশ বেশি। ২০২৩ সালে ৬ জন নারী ক্রীড়াবিদ যারা ঐ বছর আয় করেছে অন্তত ১ কোটি করে। পরের বছর সেই তালিকায় যোগ হয়েছে আরও ৫ জন, অর্থাৎ ২০২৪ সালে অন্তত ১ কোটি করে আয় করা নারী ক্রীড়াবিদের সংখ্যা ১১ জন।
তবে সবচেয়ে বেশি আয় করা নারী খেলোয়াড়দের বেশিরভাগই টেনিসের। ক্রীড়া-বাণিজ্যবিষয়ক মার্কিন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম স্পোর্টিকোর তথ্যমতে, গত বছর সবচেয়ে বেশি আর করা শীর্ষ ৭ নারী ক্রীড়াবিদের ৫ জনই টেনিস খেলোয়াড়। তবে সবচেয়ে বেশি আয় করা খেলোয়াড়দের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের খেলোয়াড় সবচেয়ে বেশি।
২০২৪ সালে সবচেয়ে বেশি আয় করা নারী খেলোয়াড়দের একটি তালিকা তৈরি করেছে স্পোর্টিকো। খেলোয়াড়দের বেতন, প্রাইজমানি, সব ধরনের বোনাস (সাইনিং, প্লে-অফ, অলিম্পিক এবং অন্যান্য) এনডোর্সমেন্ট (বিজ্ঞাপন, বাণিজ্য দূত ও অন্যান্য) এসব হিসাবের মধ্যে নেওয়া হয়েছে।
২০২৪ সালে সবচেয়ে বেশি আয় করা নারী খেলোয়াড়দের মধ্যে শীর্ষে আছেন যুক্তরাষ্ট্রের টেনিস তারকা কোকো গফ। বছরে তিনি আয় করেছেন মোট ৩ কোটি ৪ লাখ মার্কিন ডলার। এর মধ্যে বেতন ও প্রাইজমানি থেকে এসেছে ৯৪ লাখ ডলার। বাকি ২ কোটি এসেছে এনডোর্সমেন্ট থেকে। এই এনডোর্সমেন্টের বেশিরভাগ আবার এসেছে বোস্টনভিত্তিক ব্র্যান্ড রেডিডের সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে। ১৪ বছর বয়সে নিউ ব্যালেন্সের সঙ্গেও চুক্তি করেছিলেন গফ। এবার তার নামে নিউ ব্যালেন্স বাজারে ছেড়েছে নিগনেচার সু।
এরপরের স্থানেই আছেন যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেওয়া ফ্রিস্টাইল স্কিয়ার এইলিন গু। যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নিলেও ২০১৯ সাল তেখে চীনের হয়ে খেলা শুরু করেন তিনি। তার মায়ের জন্ম সেখানে। ২০২৪ সালে মোট ২ কোটি ২১ লাখ ডলার আয় করেছেন এইলিন। এনডোর্সমেন্ট থেকে তিনি আয় করেছেন ২ কোটি ২০ লাখ ডলার। আর প্রাইজমানি থেকে পেয়েছেন ৬২ হাজার ডলার। অন্তত ২০টি ব্র্যান্ডের সঙ্গে স্পন্সর চুক্তি আছে এইলিনের।
তালিকায় তিন নম্বরে আছেন পোল্যান্ডের টেনিস তারকা ইগা সিওনতেক। ২০২৪ সালে তার আয় ২ কোটি ১৪ লাখ ডলার। প্রাইজমানি থেকে তিনি পেয়েছেন ৮৪ লাখ ডলার। আর এনডোর্সমেন্ট থেকে তার আয় ১ কোটি ৩০ লাখ ডলার। গত বছর ফ্রেঞ্চ ওপেন জেতেন তিনি। ডব্লিউটিএ রাঙ্কিংয়ে দ্বিতীয় হয়ে বছর শেষ করেছেন এই টেনিস তারকা।
গত বছর মোট ২ কোটি ৬ লাখ ডলার আয় করেছেন চীনের টেনিস খেলোয়াড় ঝেং কিনওয়েন। প্রাইজমানি থেকে তিনি পেয়েছেন ৫৬ লাখ ডলার। আর এনডোর্সমেন্ট থেকে পেয়েছেন ১ কোটি ৫০ লাখ ডলার। এবার অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের ফাইনালে ওঠা কিনওয়েন র্যাঙ্কিংয়ে পঞ্চম। নাইকি, ল্যানকম, গ্যাটোরেড, উইলসন, রোলেক্সের মতো নামীদামি ব্র্যান্ডের সঙ্গে স্পনসর চুক্তি রয়েছে তার।
বেলারুশের টেনিস তারকা আরিনা সাবালেঙ্কা ২০২৪ সালে আয় করেছেন ১ কোটি ৭৭ লাখ ডলার। তিনটি গ্র্যান্ড স্ল্যামজয়ী এ তারকা এনডোর্সমেন্ট থেকে পেয়েছেন ৮০ লাখ ডলার। প্রাইজমানি থেকে পেয়েছেন ৯৭ লাখ ডলার। গত বছর অস্ট্রেলিয়ান ওপেন ও ইউএস ওপেন জেতেন সাবালেঙ্কা।
চারটি গ্র্যান্ড স্ল্যামজয়ী জাপানের টেনিস তারকা নাওমি ওসাকা গত বছর আয় করেছেন ১ কোটি ৫৯ লাখ ডলার। প্রাইজমানি থেকে তার আয় ৮ লাখ ৭০ হাজার ডলার। এনডোর্সমেন্ট থেকে পেয়েছেন ১ কোটি ৫০ লাখ ডলার। নাইকি, লুইস ভুটন, প্যানাসনিক, বিটসের মতো ব্র্যান্ডের সঙ্গে স্পনসর চুক্তি আছে তাঁর।
চোট কাটিয়ে এ বছর ডব্লিউটিএ ট্যুরে ফেরেন ব্রিটিশ টেনিস তারকা এমা রাদুকানু। গত বছর তার মোট আয় ১ কোটি ৪৭ লাখ ডলার। এনডোর্সমেন্ট থেকে ১ কোটি ৪০ লাখ ডলার। প্রাইজমানি থেকে তার আয় ৬ লাখ ৭১ হাজার ডলার।
২০২৪ সালে মোট ১ কোটি ৪৪ লাখ ডলার আয় করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের গলফার নেলি কোরদা। এনডোর্সমেন্ট থেকে পেয়েছেন ১ কোটি ডলার। প্রাইজমানি হিসেবে পেয়েছেন বাকি ৪৪ লাখ ডলার। টি-মোবাইলের সঙ্গে স্পনসর চুক্তি আছে কোরদার।
ইতিহাসের সবচেয়ে সফল জিমন্যাস্ট সিমোন বাইলস। গত বছর তার মোট আয় ১ কোটি ১১ লাখ ডলার। ১ কোটি ১০ লাখ ডলার পেয়েছেন এনডোর্সমেন্ট থেকে। ১ লাখ ৩৫ হাজার ডলার পেয়েছেন প্রাইজমানি হিসেবে।
২০২৪ সালে ১ কোটি ১১ লাখ ডলার আয় করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের বাস্কেটবল খেলোয়াড় কেইটলিন ক্লার্ক। এনডোর্সমেন্ট থেকে পেয়েছেন ১ কোটি ১০ লাখ ডলার। বেতন-বোনাস হিসেবে পেয়েছেন বাকি এক লাখ ডলার।