স্পোর্টস ডেস্ক : পিএসএলে না খেলতে পারার আক্ষেপ নিয়ে দেশে ফিরলেন লিটন দাস। পুরো মৌসুম খেলার সুযোগ পেয়েও ইনজুরির কারণে খেলতে না পারায় ভাগ্যকে দোষলেন টাইগার ব্যটার। তবে তার দল করাচি কিংসের ভালোবাসায় মুগ্ধ ডানহাতি ব্যাটার। জানালেন, দেশে ফেরা না ফেরার বিষয়ের সিদ্ধান্ত ছেড়ে দিয়েছিল লিটনের উপরই। এদিকে, পাকিস্তানে পেসার নাহিদ রানাকে নিয়ে আগ্রহের কমতি নেই বলেও জানান তিনি।
লিটন দাসের ভাগ্যটাই কী খারাপ? বিদেশি ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট লিগে সুযোগ পেয়েও খেলতে পারেন না। কখনও ইনজুরি, আবার কখনও এনওসি, বিভিন্ন সময় নানা জটিলতায় ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে তার খেলা হয় না। আইপিএলে সুযোগ পেলেও পুরো মৌসুমের সুযোগ না পেয়ে ফিরতে হয়েছিল ১ ম্যাচ খেলে। এবার পাকিস্তান সুপার লিগ থেকে ফিরেছেন কোন ম্যাচ না খেলেই।
বিসিবি প্রথমবারের মতো পুরো মৌসুম খেলার সুযোগ দিয়ে ছিল লিটনকে। কিন্তু করাচি কিংসের হয়ে মাঠেই নামা হলো না টাইগার ব্যাটারের। দলের প্রথম অনুশীলনেই আঙ্গুলে চোট পান। যার জন্য প্রায় ২ সপ্তাহ থাকতে হবে মাঠের বাইরে। যে কারণে দেশে ফিরলেন আক্ষেপ নিয়ে। যদিও, করাচি কিংস কর্তৃপক্ষ পুরো সিদ্ধান্তই ছেড়ে দিয়েছিল তার উপর।
দেশে ফিরে সাংবাদিকদের লিটন দাস বলেন, ‘ব্যাড লাক তো স্বাভাবিক, যখন গিয়েছিলাম চিন্তা ছিরো পুরো টুর্নামেন্টই খেলবো। বিসিবিকে অনেক বেশি ধন্যবাদ যে এই বছরটা আমাকে অপরচুনিটি দিয়েছিলো পুরোটাই খেলার জন্য। কিন্তু এটা তো আসলে ভাগ্যের ওপর কোনকিছুই নাই, কিছু সময়ট মানুষের লাক ফেভারটা দরকার পড়ে। আমার মনে হয় আমি অনেক আনলাকি এ বিষয়ে যে, পিএসলের মতো একটা জায়গায় ফুল টুর্নামেন্ট সুযোগ পাওয়ার পরেও আসলে কোনও ম্যাচে জয়েন না করেই চলে আসাটা এটা আমার জন্য একটু আপসেট।
মাঠে নামার আগেই ইনজুরি, তবুও তারা সব সিদ্ধান্ত ছেড়ে দিয়েছিলো লিটস দাসের ওপরই। ‘ইনজুরি হওয়ার পর.... আসলে তারা যথেষ্ট হেল্পফুল এবং মন মানসিকতার দিক থেকেও খুবই ভালো। তারা সম্পূর্ণটা আমার ওপর ছেড়ে দিয়েছিলো যে আমি কি করবো, আমি কি করতে চাই। কারণ তারা জানতো যে সময় লাগবে, কিন্তু কতখানি পেইন হচ্ছে না হচ্ছে সেটার জন্য তারা আমকে সময় দিয়েছিলো বুঝার জন্য। কিন্তু একটা যখন ফ্যাকচার হয়, তাহলে আপনাকে সময় নিতে হবে। ওখানে ২-৩ সপ্তাহের মতো যদি লেগে যায়, তারপরে অত বড় একটা হাই ইভেন্টে উইথআউট প্র্যাক্টিসে আসলে টুর্নামেন্ট খেলাটাও খুব ডিফিকাল্ট। আমি মনে করেছি, তো সামনে আবার ন্যাশনাল টিমের খেলাও আছে, এই রিকভারিটা অনেক দরকার।’
আইপিএল খেলার অভিজ্ঞতা আছে লিটন দাসের। ম্যাচ খেলতে না পারলেও দেখেছেন পিএসএলের পরিবেশ। দুই ফ্র্যাঞ্চাইজির মাঝে কি পার্থক্য দেখলেন?
‘এনভায়রনমেন্ট খুবই ভালো, যেহেতু বড় বড় প্লেয়াররা ওখানে থাকে, ফ্যাসিলিটিও খুব ভালো তাদের। আমি তো সুযোগ পেয়েছি মাত্র এক দিনই, এক দিন প্র্যাক্টিস করেছি। আমার কাছে মনে হয়েছে ফ্যাসিলিটি খুব ভালো। এবং যদি আমি কয়টা ম্যাচ থাকতে পারতাম, তাহলে এনভায়রনমেন্ট সম্পর্কে আরও বেশি বলতে পারতাম। কিন্তু যতটুকু আমি বুঝেছি, ফিল করেছি, টিম হিসেবে তারা অরগানাইজড খুবই। পিএসলে যদি আমি ২-১ একটা ম্যাচ থাকতে পারতাম তাহলে বুঝতে পারতাম যে আসলে গ্রাউন্ডের সিচুয়েশনটা কি। কিন্তু ওভারঅল আমার টিম সবকিছুতে খুবই ভালো।’
লিটন ছাড়াও এবার আরো দুই টাইগার ক্রিকেটার খেলবেন পিএসএলে। লাহোর কালান্ডার্সে রিশাদ হোসেন আর পেশোওয়ার জালমিতে পেসার নাহিদ রানা। পাকিস্তানের মাটিতে সাদা পোশাকে রানার গতির ঝড় ভুগিয়েছে তাদের। তাকে পিএসএলে দেখার অপেক্ষায় ভক্তরা।
এ বিষয়ে লিটন বলেন, ‘পাকিস্তানের এয়ারপোর্টে অনেকেই বাংলাদেশের প্লেয়ারদের খোঁজ নিয়েছে। কারণ পাকিস্তানের জন্য পিএসএল অনেক বড় একটা ভাইব। বাংলাদেশের প্লেয়াররা যখন ওখানে যায়, তারা কথাবার্তা বলে। বিশেষ করে রানার কথাটা বেশি করে বলে। কারণ রানা পাকিস্তানে গিয়ে টেস্টে খুবই ভালো বোলিং করেছে। তো রানাকে তারা খুব ভালোমতনই চেনে। তো ওইগুলাই কথা হয়েছে যে কবে আসবে না আসবে।
দ্রুত সুস্থ হয়ে মাঠে ফিরতে ভক্তদের কাছে দোয়া চাইলেন লিটন দাস। ধন্যবাদ জানিয়েছেন সব সময় পাশে থাকার জন্য।