স্পোর্টস ডেস্ক : তার তিন সহযোগী ও প্রায় সমবয়সী ক্রিকেটার আমিনুল ইসলাম বুলবুল, মিনহাজুল আবেদিন নান্নু আর আকরাম খান তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন। বেগম জিয়ার আত্মার শান্তি কামনার পাশাপাশি তার সঙ্গে স্মৃতিগুলোও শেয়ার করেছেন।
জাতীয় দলের আরেক সাবেক অধিনায়ক ফারুক আহমেদও আজ বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন এবং স্মৃতি রোমন্থন করেছেন।
আজ বুধবার খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিতে গিয়ে ফারুক আহমেদ আবেগআপ্লুত কণ্ঠে বেগম জিয়া ও তার কনিষ্ঠ পুত্র আরাফাত রহমান কোকোর সঙ্গে স্মৃতি উপস্থাপন করেন।
বিসিবির বর্তমান সিনিয়র সহ-সভাপতি বেগম জিয়া সম্পর্কে বলেন, ‘উনার মতো নেত্রী বাংলাদেশে আর আসবে কিনা, জানি না। আমরা সবাই জানি উনাকে কেন আপসহীন নেত্রী বলা হয়। উনি উনার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের ৪০ বছর কখনো কোনো অন্যায়ের সঙ্গে আপোস করেননি। আরেকটা বিষয়...উনার মুখ থেকে কেউ কখনো কোনো খারাপ কথা, খারাপ শব্দ শোনেননি। এই যে রাজনৈতিক শিষ্টাচার, এটা তিনি আমাদের শিখিয়ে গেছেন।’
বলে রাখা ভালো, প্রয়াত প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও দেশনেত্রী বেগম জিয়ার দুই সন্তান তারেক রহমান ও আরাফাত রহমান কোকোর সঙ্গেও ফারুক আহমেদের নিবিড় সম্পর্ক। কারণ তারেক রহমান ও ফারুক আহমেদ দুজনই ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল ও কলেজের ছাত্র। কোকোর সঙ্গে কাজ করেছেন ক্রিকেট বোর্ডে।
এ কথা জানিয়ে বিসিবির অন্যতম শীর্ষ কর্তা ফারুক জানান, ‘ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও আমি দুজন একই স্কুল থেকে পাস করেছি। আর কোকোর সঙ্গে আমি প্রায় চার বছর কাজ করেছি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে। আমি নির্বাচক কমিটির প্রধান ছিলাম। উনি ডেভেলপমেন্ট কমিটির প্রধান ছিলেন। এসব স্মৃতি আসলে ভাষায় প্রকাশ করার মতো না।’
ফারুক আহমেদ তার সহপাঠী বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রতি সমবেদনা জানাতে গিয়ে বলে ওঠেন, ‘বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এখন একদম একা হয়ে গেলেন। মা নেই। বাবা নেই। আদরের ছোট ভাইও অনেক আগে চলে গেছেন। আমার মনে হয়, উনার দিকটাও এখন দেখতে হবে। উনি একদম নিঃসঙ্গ হয়ে গেলেন। এখন হয়তো বুঝতে পারছেন না। তবে আমি নিশ্চিত চার-পাঁচদিন পর উনার এই বিষয়টার অনুভূতি হবে।’
বেগম জিয়া কতটা ক্রিকেট ভালোবাসতেন? জাতীয় দলের সাফল্যে তিনি কেমন উৎফুল্ল হতেন, তার বর্ণনা দিয়ে ফারুক বলেন, ‘আসলে বেগম জিয়ার অনুভব-উপলব্ধি ছিল অসামান্য। তিনি নির্দিষ্ট করে আমাদের দিকে খেয়াল রাখতেন। আমরা ভালো খেললে তার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর মাধ্যমে আমাদের বাসায় ডেকে নিতেন। বেগম খালেদা জিয়ার যত বার্তা, সব কোকোর মাধ্যমেই আমাদের দিতেন।’
‘কোনো ভালো ম্যাচ জিতলে উনার ছেলের মাধ্যমে আমাদেরকে উনার কাছে নিয়ে যেতেন। দুই থেকে তিনবার সাক্ষাতের সুযোগ হয়েছে। উনি কথা বেশি বলতেন না। কিন্তু খুব মিনিংফুল কথা বলতেন। আমাদের উৎসাহ দিয়ে গেছেন। আমি ও আমরা সবাই উনার প্রয়াণে মর্মাহত। নিশ্চিতভাবে আমরা একজন অভিভাবক হারিয়েছি’-আবেগাপ্লুত কণ্ঠে বলেন ফারুক।