কিশোরগঞ্জ: কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্সে গত তিনমাসে জমা পড়েছে এক কোটি ১৪ লাখ ৭৪ হাজার ৪৫০ টাকা। আরও পাওয়া গেছে সোনা, রূপা ও ডলার, ইউরো, দিনারসহ বৈদেশিক মুদ্রা। প্রতি তিনমাস পর পর মসজিদের দান বাক্সগুলো খোলা হয়।
শনিবার (১৩ জুলাই) দুপুরে জেলা প্রশাসন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে মসজিদের আটটি দানবাক্স খোলা হয়। দানবাক্সগুলো খোলার পর টাকাগুলো প্রথমে বস্তায় ভরা হয়। এরপর শুরু হয় দিনব্যাপী টাকা গণনার কাজ। বিকেলে গণনা শেষে দানের এ টাকার হিসাব পাওয়া যায়।
টাকা গণনার কাজ তদারকি করেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসেনের তত্ত্বাবধানে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মনোয়ার হোসেন ও মীর মো. আল কামাহ তমালসহ প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তা, মসজিদ পরিচালনা কমিটির সদস্য ও সার্বক্ষণিক দায়িত্বরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
এসময় টাকা গণনার কাজ দেখতে যান কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. আব্দুল্লাহ আল মাসউদ, মসজিদ কমিটির সদস্য হিসেবে সভাপতি আবদুল হামিদ মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. আনম নৌশাদ খানসহ অন্যান্যরা।
এর আগে গত ১৩ এপ্রিল দান সিন্দুক খোলার পর এক কোটি ৮ লাখ ৯ হাজার ২শ’ টাকা পাওয়া গিয়েছিল। গত ১৯ জানুয়ারি পাওয়া যায় এক কোটি ১৩ লাখ ৩৩ হাজার ৪৭৩ টাকা। এছাড়া গত বছরের ১৩ অক্টোবর দান সিন্দুক খোলার পর এক কোটি ১৩ লাখ ৯৬ হাজার ৬৮৫ টাকা পাওয়া গিয়েছিল। অর্থাৎ গত এক বছরে পাগলা মসজিদে দান হিসেবে চার কোটি ৫০ লাখ ১৩ হাজার ৮০৮ টাকা পাওয়া গেছে। সে হিসেবে প্রতিদিন গড়ে সোয়া লাখ টাকা মসজিদটিতে মানুষ দান করেছেন।
সর্বশেষ চলতি বছরের ১৩ এপ্রিল মসজিদের দানবাক্সগুলো খুলে গণনা করে এক কোটি আট লাখ নয় হাজার ২শ’ টাকা পাওয়া যায় বলেও জানান ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসেন।
কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের পশ্চিম প্রান্তে নরসুন্দা নদীর তীরে আনুমানিক চার একর জায়গায় ‘পাগলা মসজিদ ইসলামী কমপ্লেক্স’ অবস্থিত। প্রায় আড়াইশ’ বছর আগে মসজিদটি প্রতিষ্ঠিত হয় বলে ইতিহাস সূত্রে জানা যায়। এ মসজিদের প্রতিষ্ঠা নিয়ে অনেক কাহিনী প্রচলিত আছে, যা ভক্ত ও মুসল্লিদের আকর্ষণ করে।
সাধারণ মানুষের মধ্যে বিশ্বাস, এখানে মানত করলে মনোবাসনা পূর্ণ হয়। আর এ কারণেই মূলত দূর-দূরান্তের মানুষও এখানে মানত করতে আসেন। দানবাক্সে পাওয়া টাকা সাধারণত কমিটি, জনপ্রতিনিধি ও দায়িত্বশীলদের পরামর্শে বিভিন্ন মসজিদে দান-খয়রাত, মাদ্রাসার উন্নয়ন ও জনকল্যাণমূলক কাজে ব্যয় হয়ে থাকে। সূত্র : ভোরের পাতা।