কিশোরগঞ্জ থেকে : একের পর এক ঘটনা ঘটছে কিশোরগঞ্জে। সম্প্রতি কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া থানায় বিশাল আয়োজন করে মাইকে মাইকে ফুক দিলেন কাঠুরিয়া কবিরাজ সবুজ মিয়া।
আর নানা রোগবালাই ও মসি'বত থেকে উদ্ধা'র পেতে পানি ও তেল ভর্তি বোতল উঁচিয়ে ধরলেন পঞ্চাশ সহস্রাধিক নারী-পুরুষ। সেই খবর বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমেও প্রচার হয়।
এবার পাকুন্দিয়ায় ১৩ বছরের কিশোরী শিশুকন্যা জন্ম দেয়ার পর গা'য়েবি সন্তান জন্ম নেয়ার প্রচারণা চালানোয় এলাকায় তো'লপা'ড় সৃষ্টি হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় এ ঘটনা ভা'ইরাল হওয়ার পর পুলিশ কুমারী মাতাকে উদ্ধা'র করে হাসপাতালে ভর্তি করেছে।
সন্তানের জন্মদাতার নাম পরিচয় জানতে জিজ্ঞা'সাবাদের জন্য আ'ট'ক করেছে ওই কিশোরীর মা-বাবাকে। পিতাছাড়া সন্তান জন্ম হওয়ার কথা চিন্তা করার কোনো উপায় নেই বলে জানায় আলেম সমাজ।
জিজ্ঞাসাবাদ ও ডিএ'নএ টেস্ট করে পিতৃ পরিচয় বের করার দাবি সচেতন নাগরিক সমাজের। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস পুলিশের।
জানা গেছে, কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া থানার এগারসিন্ধুর ইউনিয়নের ১৩ বছরের কিশোরী গত ৬ নভেম্বর একটি কন্যা সন্তান প্রসব করে। এ ঘটনার পর মা-বাবা ও স্বজনরা গায়েবি সন্তান প্রসবের প্রচার চালায়।
আর এ ঘটনা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পর মঙ্গলবার রাতে পুলিশ মা-বাবাসহ কুমারী মাতাকে উদ্ধা'র করে নিয়ে আসে।
বুধবার পাকুন্দিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সরেজমিন পরিদর্শনকালে জরুরি বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক ডা. মোক্তাদির জানান, মঙ্গলবার রাতে পুলিশ এনে আনুমানিক ৭-৮ দিন বয়সী নবজাতক ও এক কিশোরীকে ভর্তি করেছেন। তাকে মহিলা পুলিশ প্রহরায় গাইনি ওয়ার্ডে ভর্তি করে নবজাতককে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
ওই নবজাতক ও কিশোরীকে দেখতে হাসপাতালে যান কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আনোয়ার ও পাকুন্দিয়া থানার ওসি মো. মফিজুর রহমান হাসপাতালে যান।
এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আনোয়ার জানান, এ ধরনের আ'জগু'বি ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ কিশোরীকে উদ্ধা'র করে এনে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়ার ব্যবস্থা করে। একই সঙ্গে তার মা-বাবাকেও থানায় এনে নবজাতকের পিতৃ'পরিচয় জানতে জিজ্ঞা'সাবাদ করা হচ্ছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আবুল কালাম আজাদ জানান, ৬ নভেম্বর রাতে এ কিশোরী একটি কন্যা সন্তান প্রসবের ঘটনা মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়ে। জানতে চাইলে তার মা-বাবা ওই সন্তান গায়ে'বিভাবে হয়েছে, আল্লাহ দিয়েছে বলে প্রচার চালায়। এ ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে পুলিশ হস্ত'ক্ষেপ করেছে।
স্থানীয় মসজিদের ইমাম হাফেজ মাওলানা দীন ইসলাম বলেন, পিতা ছাড়া কিংবা কোনো পুরুষের সা'হচর্যের মাধ্যমে শু'ক্রা'ণু প্রবেশ ছাড়া সন্তান জন্মের কথা চিন্তাও করা যায় না। এ সময় তিনিও ওই নবজাতকের জন্ম'দাতা পুরুষটিকে খুঁজে বের করে তাকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।
পাকুন্দিয়া থানার ওসি মো. মফিজুর রহমান জানান, কিশোরীকে পাকুন্দিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সর গাইনি ওয়ার্ডে ভর্তি করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ছাড়া কিশোরীর নবজাতক শিশুর জন্মদাতার নাম জানতে তার মা-বাবাকে জিজ্ঞা'সাবাদ অব্যা'হত রয়েছে।