চোখের সামনে চলে গেছে প্রিয় সন্তান। ট্রেন থেকে লাফিয়ে পড়েও বাঁ'চাতে পারেননি মেয়েকে। তাইতো সংগীতশিল্পী ও কলেজছাত্রী আন্তারা মোকাররমা অনিকার মা আসমা হোসেনের এমন বুকফা'টা আ'র্তনাদ। কিশোরগঞ্জে ট্রেনে উঠার সময় চল'ন্ত ট্রেন থেকে পড়ে আন্তারা মোকাররমা অনিকা নামে এক কণ্ঠশিল্পী ও কলেজছাত্রীর মর্মা'ন্তিক মৃ'ত্যু হয়েছে। শুক্রবার (৯ অক্টোবর) সকালে কিশোরগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনে এ ঘ'টনা ঘ'টে। তার মৃ'ত্যুতে পরিবারটিতে চলছে শো'কের মা'তম।
পরিবারিক সূত্রে জানা গেছে, অসুস্থ নানাকে দেখতে শুক্রবার ভোরে ট্রেনে করে ঢাকায় যাওয়ার জন্য শুক্রবার ভোরে শহরের খরমপট্টির ভাড়া বাাসা থেকে রেলওয়ে স্টেশনে যান আন্তারা মোকাররমা আনিকা ও তার মা আসমা হোসেন।
কিশোরগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে ছেড়ে দেয় আন্তনগর এগারসিন্ধুর প্রভাতি ট্রেন। দৌড়ে গিয়ে মা আসমা হোসেন ট্রেনের কামড়ায় উঠেন। কামড়ার হাতল ধরে ট্রেনে উঠার চেষ্টা করেন আনিকা। এ সময় পা পিছলে চাকার নিচে পড়ে যান তিনি। মু'হূর্তেই ছি'ন্নভি'ন্ন হয়ে যায় তার দেহ। এ অবস্থায় নিচে লাফিয়ে পড়েন মা। তবে ততক্ষণে সব শেষ! চোখের সামনে প্রিয় সন্তানকে হারিয়ে বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন, আসমা।
আসমা হোসেন জানান, ট্রেনটি ধিরে ধিরে যাচ্ছিল। আমারা দৌড়ে ট্রেনে উঠছিলাম। আনিকা আমাকে ট্রেনে উঠতে সাহায্য করে। এরপর হাতল ধরে সে কামড়ায় উঠার চেষ্টা করছিল। হঠাৎ আমার চোখের সামনে পা পিছলে চাকার নিচে পড়ে যায়। আমি ট্রেন থেকে লাফিয়ে পড়ি। দেখতে পাই ট্রেনটি আমার মেয়েকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যাচ্ছে। আমি এখন এই শো'ক কীভাবে সহ্য করব! অসুস্থ নানাকে দেখতে ঢাকার ধানমন্ডি এলাকায় যাচ্ছিলেন আনিকা।
কণ্ঠশিল্পী ও গুরুদয়াল সরকারি কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী আন্তারা মোকাররমা আনিকা ছিলেন শহরের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের প্রিয়মুখ। বৃহস্পতিবারও তিনি শহরে ধর্ষণবিরোধী মানববন্ধনে অংশ নিয়েছেন। তার মৃ'ত্যুতে শো'কের ছায়া নেমে আসে সাংস্কৃতিক অঙ্গনে। খবর পেয়ে শহরের খরমপট্টি এলাকায় ভাড়া বাসায় চলে আসেন সহপাঠীরা।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে রেললাইন থেকে আনিকার মৃ'তদেহ উ'দ্ধার করে পুলিশ। কিশোরগঞ্জ রেলওয়ে থানার ওসি আবদুর রহমান বিশ্বাস জানান, মেয়েটির বাবার আবেদনের প্রেক্ষিতে ময়নাতদ'ন্ত ছাড়াই পরিবারের কাছে কলেজছাত্রী আনিকার মরদে'হ হ'স্তান্তর করা হয়েছে। এ ব্যাপারে রেলওয়ে তানায় একটি অপমৃ'ত্যু মা'মলা দায়ের করা হয়েছে।
আন্তারা মোকাররমা আনিকার বাবা মোজাম্মেল হোসেন একজন ব্যবসায়ী। দুই সন্তানের মধ্যে আনিকা ছিলেন বড়। তার ছোট ছেলে ইশান দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ে। জোহরের পর তার মৃ'তদেহ শহরের বত্রিশ এলাকায় সরকারি কবরস্থা'নে দা'ফন করা হয়।