ওয়াহিদুজ্জামান : সকাল ৯টা ২৫ মিনিট হবে। সবে ওজু করে বেরিয়েছি। আমার বাড়ি থেকে তিনটে বাড়ি পরেই শোলাকিয়া আজিমুদ্দিন হাই স্কুলের মাঠ। পাশেই শোলাকিয়া মসজিদ। প্রথমে ভেবেছিলাম ইদের পটকা ফাটছে। তারপর দেখি পুলিশ গুলি ছুঁড়ছে। আমাকে দেখেই পুলিশ বললো, ঘরে যান। আমি আবার প্রশ্ন করতেই উত্তর আসার আগেই গ্রেনেডের বিকট শব্দ।
তখন ভয়ে ঘরে ফিরে যাই। ক্রমশ দেখি ধোঁয়া আর গুলির শব্দ বাড়ছে। ওরা কতজন ছিল জানি না। কখনও এরকম ঘটনা এখানে ঘটেনি। লোকজন দৌড়চ্ছে। চারদিকে আতঙ্ক। ওরা, শুনলাম প্রথমে পুলিসকে গুলি করে। তারপর চাপাতি দিয়ে কোপায়। পরপর দুটো গ্রেনেডের শব্দ শুনলাম। ঘরে বসে শুনছি গুলির শব্দ। ৩ লাখ লোক একসঙ্গে নামাজ পড়তে পারেন, এত বড় জায়গা। দু’জন পুলিশ, একজন মহিলা মারা গেছে শুনলাম। কতক্ষণ ঘরে আটকে রয়েছে বলতে পারবো না। ভয়ে জানলা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
যদি বুলেট ছুটে আসে। বাড়ির সামনের দিকে ছুটছে পুলিশের গাড়ি। সন্ত্রাসীরা ছুটে গিয়ে পাশেই একটা বাড়ির মধ্যে লুকায়। সেখান থেকে গুলি চালাতে থাকে। ঘণ্টা দেড়েক চলতে থাকে গুলির শব্দ। বন্ধ জানলা, দরজার ওপার থেকে চিৎকার শোনা যাচ্ছে। গুলির শব্দ থামতেই জানলা খুলি। ঘটনাস্থলের দিকে যেতে দিচ্ছে না পুলিশ। শুনলাম ৮–১০ জন বন্দুক নিয়ে এসেছিল।
আগেই ওরা গ্রেনেড ছুঁড়ে দেয়। আতঙ্কে অনেককেই পেছনের গেট দিয়ে ছুটে পালাতে দেখি। ছত্রখান হয়ে গেছে গোটা এলাকা। কতক্ষণ ধরে গুলি চলেছে, তার খবর কে রাখে। রাস্তার মধ্য দিয়ে কাতারে কাতারে মানুষ ঊর্ধ্বশ্বাসে ছুটে যাচ্ছে। বিকেল পর্যন্ত গোটা এলাকা পুলিশে ছয়লাপ। আতঙ্ক কীভাবে কাটবে জানি না...।
-অধ্যক্ষ, কিশোরগঞ্জ হোসেনপুর ডিগ্রি কলেজের