সিঙ্গাইর, মানিকগঞ্জ থেকে: পরীক্ষা হচ্ছে ২০১৬ সালে। আর হলে পরীক্ষার্থীদের দেয়া হয় ২০১৪ সালের প্রশ্নপত্র। এই ভুলটি ধরা পড়ে পরীক্ষা শুরুর একঘণ্টা পর। সোমবার এসএসসি পরীক্ষার প্রথম দিনে মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর উপজেলার রায়দক্ষিণ কোহিনুর মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের একটি কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। কর্তৃপক্ষের এমন ভুলের কারণে ওই কক্ষের ৪৪ জন শিক্ষার্থী পাস করা নিয়ে আছেন দুশ্চিন্তায়।
এদিকে, এ ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয় সচেতন মহল। জানা যায়, সোমবার এসএসসি পরীক্ষার প্রথম দিন ছিল বাংলা প্রথম পত্রের পরীক্ষা। উপজেলার রায়দক্ষিণ কোহিনুর মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের একটি কক্ষে মানবিক শাখার ২০১৬ সালের ৪৪ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়।
এদের মধ্যে ২২ জন জয়ম-প ও ২২ জন ধল্লা ইউনিয়ন কাউন্সিল উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। পরীক্ষার শুরুতেই তাদের সবাইকে ২০১৬ সালের প্রশ্নপত্র না দিয়ে ভুলক্রমে ২০১৪ সালের প্রশ্নপত্র দেয়া হয়। প্রশ্ন পেয়ে না বুঝেই পরীক্ষার্থীরা উত্তরপত্র লেখা শুরু করে। আধাঘন্টা পর বিষয়টি বুঝতে পেরে শিক্ষার্থীরা প্রথমে ওই কক্ষে দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকদের বিষয়টি জানালেও তারা আমলে নেয়নি।
সবার মধ্যে জানাজানি হলে এনিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে হট্টগোল শুরু করে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। পরে ২০১৪ সালের প্রশ্নপত্র উঠিয়ে নিয়ে ২০১৬ সালের প্রশ্নপত্র দেয়া হয়। এরপর আগের দেয়া প্রশ্ন থেকে লেখা উত্তর কেটে নতুন করে উত্তর লেখেন পরীক্ষার্থীরা।
এ ঘটনার শিকার পরীক্ষার্থী সুমাইয়া মারিয়া, ও কাউসার জানান, তারা ধল্লা ইউনিয়ন কাউন্সিল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন। কর্তৃপক্ষের ভুলের কারণে তাদের কারো পরীক্ষা ভালো হয়নি। প্রশ্নপত্র পাওয়ার পর না বুঝে সবাই উত্তর লেখা শুরু করেন। এক পর্যায়ে তারা বুঝতে পারেন প্রশ্নপত্রটি ২০১৪ সালের। পরে এক ঘণ্টা ১০ মিনিট পর আগের দেয়া প্রশ্ন উঠিয়ে ২০১৬ সালের প্রশ্নপত্র দেয়। এ ঘটনার জন্য প্রয়োজনীয় অতিরিক্ত সময় না দেয়ায় কেউ সব প্রশ্নের উত্তর লিখতে পারেনি। এ অবস্থায় এই বিষয়ে পাস করা নিয়ে তারা দুশ্চিন্তায় আছেন।
ধল্লা ইউনিয়ন কাউন্সিল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ জানান, তার স্কুলের ২২ জন শিক্ষার্থীকে ২০১৬ সালের প্রশ্নপত্রের পরিবর্তে ২০১৪ সালের প্রশ্ন দেয়া হয়। পুরনো সিলেবাসের (২০১৪ সাল) কোনো শিক্ষার্থীর পরীক্ষা ওই কেন্দ্রে ছিল না। এরপরও কি করে ওই প্রশ্নপত্র ওই কেন্দ্রে গেল?। বিষয়টি সবাইকে ভাবিয়ে তুলছে। ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হবে বলে জানান তিনি।
হল সুপার জয়মণ্ডপ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাধেশ্যাম সাহা জানান, ভুল করে একটি কক্ষের ৪৪ জন পরীক্ষার্থীকে ২০১৬ সালের পরিবর্তে ২০১৪ সালের প্রশ্নপত্র দেয়া হয়। বিষয়টি ধরা পড়ার পর ১৪ সালের প্রশ্নপত্র তুলে ১৬ সালের প্রশ্নপত্র দেয়া হয়। এজন্য কিছুটা অতিরিক্ত সময় দেয়ায় পরীক্ষার্থীদের কোনো সমস্যা হয়নি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শেখ জাহিদুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি জানার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। কি কারণে এমন ঘটনা ঘটল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। -যায়যায়দিন
৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬/এমটি নিউজ২৪/এসবি/এসএস