ময়মনসিংহ : চানাচুর কম্পানির চাকরিচ্যুত শ্রমিক শাহিন মিয়া (২২) স্বপ্নে দেখেছেন করোনা ঠেকানোর ওষুধের ফর্মুলা। এরপর তা নিয়ে প্রচারণা চালান তিনি। গতকাল শুক্রবার স্থানীয় মসজিদে গিয়ে প্রচার করায় ঘটনাটি জানাজানি হয়।
প্রশাসন খবর পেয়ে ওই আবিষ্কারকের বাড়িতে গিয়ে অপপ্রচার ও প্রতারণারসহ ভোক্তা অধিকার আইনে ভ্রম্যমান আদালত বসিয়ে কথিত আবিষ্কারক শাহিন মিয়াকে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও সহযোগিতা করায় তাঁর বাবা জসিম মিয়াকে (৬০) ১৫ দিনের কারাদণ্ড, অনাদায়ে ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। গতকাল সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে শাহিন মিয়ার বাড়িতে আদালতের এই কার্যক্রম চলে।
কথিত আবিষ্কারক শাহিন মিয়া বলেন, স্থানীয় একটি বিদ্যালয় থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ে চলে যান ঢাকায়। সেখানে প্রথমে একটি পোশাক কারখানায় ও পড়ে মোম্বে চানাচুর কম্পানিতে শ্রমিকের চাকুরিতে যোগ দেন। বছ দুয়েক চাকুরি করার পর হঠাৎ চাকুরি চলে যায়। এরপর বাড়িতে এসে তিনি ধর্ম-কর্ম নিয়ে ব্যস্ত হয়ে উঠেন। মানুষকে নামাজের পথে আসার জন্য হেদায়েত করেন। এক পর্যায়ে পোশাক পরিবর্তন করে মাথায় টুপিসহ বড় পাঞ্জাবি পড়ে হুজুরে পরিণত হন।
তিনি দাবি করেন, গত সোমবার তিনি দিনের বেলা ঘুমিয়ে ছিলেন। এ সময় অলৌকিকভাবে করোনাভাইরাস সং'ক্রমণ ঠে'কানোর ওষুধে ফর্মুলা জানতে পারেন। বিষয়টি নিয়ে তিনি তাঁর বাবার সাথে কথা বলেন। আবিষ্কারের বিষয়টি তিনি অনুষ্ঠান আয়োজন করে প্রকাশ করবেন বলে ভেবেছিলেন। কিন্তু জমায়েত নিষিদ্ধ থাকায় তিনি তা করতে পারেননি।
গতকাল শুক্রবার খামারগাঁও বেপারী বাড়ির মসজিদে গিয়ে জুমার নামাজ পড়ার আগে আগত মুসল্লিদের সামনে গিয়ে তাঁর ওষুধ আবিষ্কারের বিষয়ে প্রচারণা চালান।
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায় শাহিনের ঘরের ভেতর একটি বড় ডেকচির মধ্যে ভর্তি খয়েরি রঙের তৈলাক্ত ঘন ঝাঁঝালো গন্ধের একধরনের পদার্থ। সেখান থেকে এক লিটার বোতলের মধ্যে ভর্তি করে রাখা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ আবুদর রহিম সুজন ঘটনাস্থলে গেলে শাহীন তাঁর ওষুধ আবিষ্কারের কথা ও মসজিদে গিয়ে তাঁর ওষুধের পক্ষে প্রচারণা চালানোর কথা অবলীলায় শি'কার করেন। জুমার নামাজের সময় মসজিদে উপস্থিত একাধিক মুসল্লি প্রচারণা চালানোর সত্যতা নিশ্চিত করেন। পরে সেখানে আদালত পরিচালনা করে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনে শাহীন ও তাঁর বাবাকে দণ্ড প্রদান করা হয়।