এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : মেয়ের জন্য কেনা বই পাল্টে বাজার থেকে অটোরিকশা করে বাজারে যাচ্ছিলেন রোখসানা। তার পাশেই বসেছে অন্য যাত্রীরা। কিছুদূর যেতে পাশে বসা যাত্রীরা দেখাল আসল রূপ। রোখসানার গলা ও কানের অলঙ্কার টান দিয়ে নিয়ে নেয় যাত্রীবেশী ছিনতাইকারীরা।
অন্য এক নারীর স্বর্ণালঙ্কার হাতে যাওয়ার আগেই চালককে কষে লাথি মারেন রোখসানা। এতেই কুপোঘাত এক ছিনতাইকারী। তাকে তুলে দেওয়া হয় জনতার হাতে। ছিনতাইকারীকে মারধর করে পুলিশে সোপর্দ করেন স্থানীয়রা।
আজ সোমবার (২২ মে) সকালে এমন ঘটনা ঘটে ময়মনসিংহের নান্দাইল পৌরবজারে। এ ঘটনার পর সাহসিকতার জন্য রোখসানার প্রশংসা করছেন সবাই। রোখসানা বেগম (২৭) নান্দাইল উপজেলার ঘোষপালা গ্রামের বাসিন্দা। তার সঙ্গে কথা হয় নান্দাইল থানায়।
সাহসী রোখসানা জানান, তার মেয়ে মাদরাসায় পড়াশোনা করে। গতকাল (রবিবার) শহরের এক লাইব্রেরি থেকে দুটি বই কিনেছিলেন মেয়ের জন্য। আজ একটি বই পাল্টানোর জন্য নান্দাইল শহরে যান। কাজ শেষে বাড়িতে ফেরার পথে এক নারী তাকে বিভিন্ন প্রশ্ন করে। এক পর্যায়ে তাকে শহররে কাচারি মসজিদের সামনে নিয়ে আগে থেকে অপেক্ষমান একটি অটোরিকশায় তোলে।
পরে ওই সড়ক দিয়ে যাওয়া আরেক নারী উপজেলার শেরপুর গ্রামের সামিলা আক্তারকে (২৪) অটোরিকশায় তুলে নেয়। এ সময় একজন পুরুষ অটোরিকশার পাশে এসে পর্দা নামিয়ে দেয়। পরে ছিনতাইকারী দুজন ভেতরে প্রবেশ করে দুই নারীর হাত চেপে ধরে।
রোখসানা বলেন, আমার কানে থাকা সোনার দুল ও গলায় থাকা চেইন ছিনিয়ে নেওয়া হয়। যখন সামিলা আক্তারের এক কানের দুল খুলে নিয়ে অপরটি খোলার চেষ্টা করছিল তখন আমি চলন্ত অবস্থায় অটোরিকশার চালককে লাথি মেরে আসন থেকে নিচে ফেলে দেই। এসময় বাজারের লোকজন দৌড়ে এসে অটোরিকশাটি থামায় এবং ছিনতাইকারী দলের এক নারী সদস্যকে ধরে ফেলে।
অপরদিকে চালকসহ দুজন পুরুষ অটোরিকশা রেখে পালিয়ে যান। উত্তেজিত জনতা অটোরিকশার সামনের কাঁচ ভেঙে ফেলেন। সেখানে উপস্থিত নারীরা ছিনতাইকারী দলের সদস্য নারীকে চড়থাপ্পড় মারতে থাকেন। খবর পেয়ে পুলিশ এসে ছিনতাইকারী নারী ও অটোরিকশাটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। পরে জানা যায় ছিনতাইকারী ওই নারীর বাড়ি ঈশ্বরগঞ্জে। তার নাম সাজেদা আক্তার।
নান্দাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাশেদুজ্জামান বলেন, দলের অন্য সদস্যদের পরিচয় জানার জন্য সাজেদাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।