সোমবার, ২৫ জানুয়ারী, ২০১৬, ১০:২৮:০৫

উকিল পিতার হুমকিতে আত্মহত্যা নব বিবাহিত স্বামী-স্ত্রীর

উকিল পিতার হুমকিতে আত্মহত্যা নব বিবাহিত স্বামী-স্ত্রীর

মুন্সীগঞ্জ : উকিল পিতার প্রস্তাবে আত্মহত্যা করেছেন নব দম্পতি।  ঘটনাটি ঘটেছে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার গোসাইর চর গ্রামে।  উকিল পিতার অনৈতিক প্রস্তাবে সাড়া না দেয়ায় স্বামীকে মেরে ফেলার হুমকিতে বিষপানে আত্মহত্যা করেন তারা।  নিহত দম্পতির নাম জাহিদ হাসান (২০) ও তার স্ত্রী ঊর্মি আক্তার (১৮)।

প্রতিবেশী ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, নাজির চর গ্রামের সানাউল্লাহ্ মিয়ার ছেলে জাহিদ হোসেনের সাথে গোসাইর চর গ্রামের আমিরুল ইসলামের মেয়ে ঊর্মি আক্তারের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।  গত দুই মাস আগে পারিবারকভাবে তাদের বিয়ে হয়।

সূত্র জানায়, ঊর্মির মা মালেকা বেগম ছাড়া উভয় পরিবারের বেশির ভাগ সদস্য এ বিয়ে মেনে নিতে পারেননি।  বিয়ের পর থেকেই উভয়পক্ষের আত্মীয়রা নব দম্পতিকে বিয়ে বিচ্ছেদের জন্য চাপ প্রয়োগ করে আসছিলেন। অন্যদিকে নিহত ঊর্মির সৎ খালু ও উকিল পিতা মিজানুর রহমান ঊর্মিকে বিরক্ত করতেন।  তাকে অনৈতিক প্রস্তাব দিয়ে উত্ত্যক্ত করে আসছিলেন।

ঘটনার আগের দিন রাতে ও পরদিন সকালে মিজানুর রহমান ও তার মেয়ের জামাই মহিউদ্দিন মিয়ার অব্যাহত হুমকির কারণে গত শনিবার সকালে ঊর্মির নানার বাড়িতে নব দম্পতি বিষ জাতীয় কীটনাশক পান করেন।  সকাল পৌনে দশটার দিকে প্রতিবেশীদের সহায়তায় আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাদের প্রথমে গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।  সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় প্রথমে জাহিদ হাসান পরে ঊর্মি আক্তার মারা যান।

নিহত ঊর্মির মা মালেকা বেগম জানান, তার সৎ বোনের স্বামী ও ঊর্মির উকিল পিতা মিজানুর রহমান ঊর্মিকে অনৈতিক প্রস্তাব দিয়ে আসছিল।  সে তাকে বিয়ে করারও প্রস্তাব দেয়।  কিন্তু ঊর্মি রাজি না হওয়ায় মিজানুর রহমান ও মহিউদ্দিন মিয়া জাহিদ হাসান-ঊর্মি আক্তারকে মারধর করে।  

তিনি জানান, গত কয়েকদিন আগে মিজান ও তার ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা ঊর্মির স্বামী জাহিদকে মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে ঊর্মিকে তালাক দিতে বলে, অন্যথায় প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।  এ কারণে উর্মি-জাহিদ আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়।  অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা করবেন বলে জানান তিনি।

গজারিয়া থানার ওসি মো. হেদায়েত-উল ইসলাম ভূঁইয়া ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।  এখনো পর্যন্ত কেউ  লিখিত অভিযোগ দেয়নি।

ঘটনার পর থেকে আত্মহত্যায় প্ররোচনার দায়ে অভিযুক্ত মিজানুর রহমান ও মহিউদ্দিন মিয়া পলাতক রয়েছেন।

এদিকে গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে লাশ বহনকারী অ্যাম্বুলেন্স দুটি গোসাইর চর পৌঁছলে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।  এ সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন নিহতদের স্বজন ও প্রতিবেশীরা।  অভিযুক্ত মিজান ও মহিউদ্দিনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তারা।
২৫ জানুয়ারি,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এমআর/এসএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে