এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : দীর্ঘ ৩৪ বছর ধরে ছাত্রছাত্রীদের মাঝে ছড়িয়েছেন শিক্ষার আলো। সেই ছাত্রদের কেউ এখন সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, কেউ জনপ্রতিনিধি, আবার কেউবা দেশের সনামধন্য ব্যবসায়ী।
তাই প্রিয় শিক্ষকের শেষ কর্মজীবনকে স্মরণীয় করে রাখতে ভোলেননি তারা। সোনার মেডেল পরিয়ে, ঘোড়ার গাড়িতে চড়িয়ে বিদায় দেওয়া হয় প্রিয় শিক্ষককে।
শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) দুপুরে এভাবেই রাজকীয় বিদায় জানানো হয় মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নের বানিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেনকে।
তাকে বিদায় জানাতে আয়োজন করা হয় সংবর্ধনা অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠান মঞ্চে তাকে পরিয়ে দেওয়া হয় সোনার মেডেল। সঙ্গে ১০ লাখ টাকার চেকসহ বিভিন্ন উপহার। পরে ঘোড়ার গাড়িতে চড়িয়ে পৌঁছে দেওয়া হয় বাড়িতে।
দীর্ঘ ৩৪ বছর ধরে ছাত্রছাত্রীদের মাঝে ছড়িয়েছেন শিক্ষার আলো। সেই ছাত্রদের কেউ এখন সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা
১৯৯২ থেকে ২০২২ সালের প্রতি ব্যাচের শিক্ষার্থীরা দলে দলে অনুষ্ঠানে অংশ নেন। এসময় বর্তমান-প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা শিক্ষক জাকির হোসেনের বিভিন্ন অবদানের কথা তুলে ধরে স্মৃতিচারণ করেন।
প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা জানান, বাংলাবাজার চরাঞ্চলে কোনো শিক্ষক এলে বেশিদিন থাকতে চাইতেন না। কিন্তু শিক্ষক জাকির হোসেন প্রথম থেকেই এ বিদ্যালয়ে রয়ে গেছেন। তার কারণেই এবার সদর উপজেলায় প্রথম হয়েছে স্কুলটি। তিনিও পরপর দুবার শ্রেষ্ঠ প্রধানশিক্ষক নির্বাচিত হয়েছেন। দরিদ্র ছাত্র-ছাত্রীদের পাশে দাঁড়াতেন তিনি। বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাদের খোঁজ নিতেন। তার কারণেই অনেকেই আজ প্রতিষ্ঠিত। এজন্য বিদায় অনুষ্ঠানটা জাকজমক করেছেন তারা।
শিক্ষার্থীদের এমন আয়োজনে আপ্লুত বিদায়ী শিক্ষক জাকির হোসেন। তিনি বলেন, ‘১৯৮৯ সালে প্রতিষ্ঠানটিতে যোগদান করি। ৩৪ বছর ৪ মাস পর অবসরে যাচ্ছি। এসময়ে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা করানো, বিদ্যালয়ের উন্নয়নের জন্য আমি আমার সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি। এলাকার ছাত্রছাত্রীরা, অভিভাবকরা এবং সংশ্লিষ্ট সবাই আমাকে যে সম্মান দিয়েছেন তাতে আমি আনন্দিত।’
দীর্ঘ ৩৪ বছর ধরে ছাত্রছাত্রীদের মাঝে ছড়িয়েছেন শিক্ষার আলো। সেই ছাত্রদের কেউ এখন সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা
তিনি বলেন, আমি চাই আমার ছাত্ররা যেন ভবিষ্যতে আরও ভালো কাজ করতে পারে। সমাজের জন্য, দেশ ও জাতির জন্য কাজ করতে পারে। এ ব্যাপারে তারা যেন সর্বদা সজাগ থাকে।
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জাকারিয়া মিয়াজীর সভাপতিত্বে বিদায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিদ্যালয়ের আজীবন দাতা সদস্য খান আবেদা বুশরা, প্রাক্তন শিক্ষার্থী বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আশরাফুর রহমান মামুন।