মঙ্গলবার, ১৯ জুলাই, ২০১৬, ০৯:৫৯:৪৭

জঙ্গি তালিকায় নাম দেখে থানায় স্বশরীরে হাজির ছাত্রী

জঙ্গি তালিকায় নাম দেখে থানায় স্বশরীরে হাজির ছাত্রী

মুন্সিগঞ্জ : জঙ্গি তালিকায় নাম দেখে থানায় স্বশরীরে হাজির হলেন সেই ছাত্রী।  শ্রীনগরে এক মাস ধরে নিখোঁজ কলেজছাত্রীর জঙ্গি কানেকশন নিয়ে সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশ হলে এ নিয়ে জেলায় তোলপাড় শুরু হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, কিছুদিন আগে ওই ছাত্রী তার পরিবারের লোকজনকে ফোনে জানায়, সে পবিত্র স্থানে রয়েছে এবং ভালো আছে।  তাকে খোঁজাখুঁজি করে লাভ নেই।

এমন খবরে ওই ছাত্রীর জঙ্গি সম্পৃক্ততা নিয়ে নড়েচড়ে বসে শ্রীনগর থানা পুলিশ।  শুরু হয় দৌড়ঝাঁপ।

কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে মঙ্গলবার বিকেল ৫টার দিকে ওই ছাত্রী স্বেচ্ছায় শ্রীনগর থানায় স্বশরীরে হাজির হয়।  কেউ যেন হয়রানির শিকার না হয় এজন্য তিনি একটি সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) করেন।  পরিচয় পেয়ে থানা পুলিশ তাকে তাৎক্ষণিক আটক করে।

মঙ্গলবার সকালে সরকারি শ্রীনগর কলেজের একাদশ শ্রেণীর নিখোঁজ ছাত্রী নুরুন নাহার ইরার বাবা ইয়াকুব আলী ও মা শামীমা বেগম কয়েকটি টিভি চ্যানেল ও অনলাইন পোর্টালের সাংবাদিকদের কাছে শঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, তাদের মেয়ে জঙ্গি মিশনে যেতেই বাড়ি ছেড়েছে।

তারা জানান, ফোনকলের পর তাদের এ ধারণা আরো পোক্ত হয়।  নিখোঁজের কিছুদিন আগে সে বাড়িতে ধর্মীয় বই আনা শুরু করে এবং হঠাৎ করে বোরকা পরিধান করে।

গত ১৯ জুন নিজ বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেনি ইরা।  এর ২০ দিন পর গত ১০ জুলাই তার মা শামীমা আক্তার শ্রীনগর থানায় একটি জিডি করেন।

থানায় জিডি করার পর পুলিশ তাদের বাসা থেকে দুটি ধর্মীয় বই উদ্ধার করে।  তবে শ্রীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাহিদুর রহমান জানান, এগুলো সাধারণ ধর্মীয় বই।

ইরার বাবা জানান, সমষপুর বিজনেস ম্যানেজমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে ২০১৫ সালে এসএসসি পাস করে ইরা।  এরপর শ্রীনগর সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হয়।

তার দাবি, কোনো কারণ ছাড়াই তার মেয়ে হঠাৎ করে উধাও হয়ে যায়।  কলেজে যাওয়ার কথা বলে ওইদিন বাড়ি থেকে বের হয়েছিল ইরা।  এরপর সে আর বাসায় ফেরেনি।

ইরার পরিবারের কাছ থেকে পাওয়া একটি ছবির সূত্র ধরে মাঠে নামে পুলিশ।  ছবিতে দাড়িওয়ালা এক যুবকের সঙ্গে ইরা ও তার আরো দুই বান্ধবী রয়েছে।

ওই যুবকের সন্ধান করতে গিয়ে দেখা যায় তার নাম সিরাজুল ইসলাম নয়ন (৩৫)।  সে পাবনার বর্জনাথপুর গ্রামের আবদুল হামিদের ছেলে।

সিরাজুল ইসলাম বর্তমানে সমষপুর বিজনেস ম্যানেজমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ফজলুল হক হান্নুর মালিকানাধীন ঢাকার গুলশান-২ এর ৭২ নম্বর সড়কের ১৫ নং বাড়িতে অবস্থিত আহামেদ গ্রুপের কর্মকর্তা।

নয়নকে ২০১৫ সালে ওই স্কুলের খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছিল।  ওই বছর এএসসি পরীক্ষার আগে তিনি ইরাসহ আরো কয়েকজনের গাইড হিসেবে তিন মাস নিযুক্ত ছিলেন।

মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে পুলিশ নয়নকে শ্রীনগর থানায় হাজির করার জন্য আহমেদ গ্রুপের কর্ণধারকে অনুরোধ করলে ওই প্রতিষ্ঠানের একটি গাড়িতে করে তাকে কয়েকজন সহকর্মীসহ গুলশান থেকে শ্রীনগর পাঠানো হয়।

নয়ন থানায় পৌঁছানোর আধঘণ্টা আগে ইরা স্বেচ্ছায় থানায় এসে হাজির হয় এবং তার জন্য অন্য কাউকে হয়রানি না করতে বলে।

শ্রীনগর থানার ওসি সাহিদুর রহমান জানান, ওই কলেজছাত্রী এক মাস কোথায় ছিল এ নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য দিচ্ছে।  বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
১৯ জুলাই,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এমআর/এসএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে