নিউজ ডেস্ক : প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে বিয়ে করেছেন তিনি। দিব্যি সংসার পেতেছেন। আপনজনেরা তা জানেন না। অন্যরাও কৌতূহলী—মেয়েটি গেল কোথায়? গুঞ্জন থেকে চাউর হলো, জঙ্গি তৎপরতায় জড়াতে তিনি কাউকে না বলে চলে গেছেন। একপর্যায়ে তা থানা-পুলিশ পর্যন্ত গড়ায়। শেষে তরুণীকে থানায় গিয়ে প্রমাণ দিতে হলো—তিনি জঙ্গি হতে যাননি, প্রেমের টানে ঘর ছেড়েছেন!
মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলায় এ ঘটনা ঘটে। গত মঙ্গলবার ওই তরুণী স্বামীসহ শ্রীনগর থানায় গিয়ে বলেন, তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সত্য নয়। পুলিশও অভিযোগের বিষয়ে নির্ভরযোগ্য তথ্য পায়নি বলে জানিয়েছে। পুলিশ ও ওই দম্পতি সূত্রে জানা যায়, ওই তরুণী শ্রীনগরের একটি কলেজে পড়তেন। তার স্বামী একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা হিসেবে কাজের সূত্রে প্রায়ই ওই কলেজে আসতেন।
সেই সূত্রে তরুণীর সঙ্গে তার দেখা ও প্রেম। গত ১৯ জুন কাউকে কিছু না জানিয়ে বিয়ে করেন তারা। পরে ঢাকায় একটি ভাড়া বাড়িতে গিয়ে ওঠেন তারা। তরুণীর পরিবার এরই মধ্যে শ্রীনগর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে। তরুণীর কোনো খোঁজ না থাকায় সাম্প্রতিক জঙ্গি তৎপরতার সূত্র ধরে অনেকেরই সন্দেহ হয়—তিনি হয়তো জঙ্গি তৎপরতায় যোগ দিতে পালিয়েছেন। গতকাল এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হলে তোলপাড় শুরু হয়।
শ্রীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাহেদুর রহমান বলেন, ওই তরুণীর কোনো খোঁজ না পেয়ে ১৯ জুন তার মা শ্রীনগর থানায় জিডি করেন। এ বিষয়ে অনলাইনসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচারিত হলে টনক নড়ে তরুণীটির। গতকাল স্বামীকে নিয়ে তিনি থানায় চলে আসেন।
পুলিশ সুপার বিপ্লব বিজয় তালুকদার বলেন, ‘ঢাকায় যে বাড়িতে তারা (তরুণী ও তার স্বামী) থাকেন, আমরা সেই বাড়ি তল্লাশি করেছি। জঙ্গি-সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তাই তরুণীটির স্বামীকে তার প্রতিষ্ঠানের চার সহকর্মীর জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘ওই তরুণী পালিয়ে বিয়ে করায় তার মা-বাবা অভিমান করে তাকে বাড়িতে নিতে চাইছেন না। এখন তাকে নিয়ে বিপাকে পড়েছি। এমন পরিস্থিতিতে তাকে আদালতে হাজির করার কথা ভাবছি। আদালতের নির্দেশ অনুসারে আমরা ব্যবস্থা নেব।’
শ্রীনগর থানার ওসি বলেন, তরুণীকে গতকাল বুধবার মুন্সিগঞ্জের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম বাকী বিল্লাহর আদালতে হাজির করে পুলিশ। এ সময় বিচারক তাকে গাজীপুরের কোনাবাড়ীর কিশোরী উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানোর নির্দেশ দেন। -প্রথম আলো
২১ জুলাই ২০১৬/এমটি নিউজ২৪/এসবি/এসএস