মঙ্গলবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০১৬, ০২:২৭:০১

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা আছে, নারায়ণগঞ্জের নির্বাচন যেন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়: ওবায়দুল কাদের

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা আছে, নারায়ণগঞ্জের নির্বাচন যেন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়: ওবায়দুল কাদের

নারায়ণগঞ্জ: সেতুমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘আমরা সবাইকেই সুযোগ করে দিতে চাই। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা আছে, নির্বাচন যেন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়।’

সচিবালয়ে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে মঙ্গলবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি একথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘আমাদের পার্টি এখন ঐক্যবদ্ধ, ঐক্যবদ্ধভাবেই এ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নৌকার পালে হাওয়া লেগেছে।’

নাসিক নির্বাচন নিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন,‘আমরা সবাইকেই সুযোগ করে দিতে চাই। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা আছে, নির্বাচন যেন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়। দলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে এ বিষয়ে আমিও একমত। নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে তাদের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করুক। নারায়ণগঞ্জের মানুষ যাকে খুশি তাকেই ভোট দিক।’

শামীম ওসমান আইভীকে প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করেন কিনা, সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘শামীম ওসমান প্রেস কনফারেন্স করে এই দ্বিধাদ্বন্দ্বের অবসান ঘটিয়েছেন। তিনি আইভীকে শাড়ি উপহার দিয়েছেন এবং আইভী সেই শাড়ি পরেই জনসংযোগ করেছেন। বড় দলে ছোটখাটো দ্বন্দ্ব থাকতে পারে। হাতের পাঁচ আঙুল তো সব সমান নয়।’

শামীম ওসমানের দেওয়া শাড়ি পরে আইভী গণসংযোগ করেননি। আর সোমবার আইভী প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে শামীম ওসমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। এক সাংবাদিকের এমন কথা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আপনি কি সেখানে ছিলেন নাকি? এ ধরনের কথার বাস্তবতা কোথায়?’

তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের দলের ইতিবাচক বৈশিষ্ট্য তিনটি। আমাদের প্রার্থী জনপ্রিয়, আমাদের সরকার উন্নয়নের সরকার, এর ধারাবাহিকতায় নারায়ণগঞ্জে উন্নয়ন কাজ হচ্ছে। আর নারায়ণগঞ্জে আমাদের সাংগঠনিক শক্তি রয়েছে। নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হলে নৌকাই জিতবে।’

নারায়ণগঞ্জে খালেদা জিয়ার নীরব বিপ্লব ঘটবে-এমন মন্তব্য বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিপ্লবটি নীরব হবে ঠিকই। তবে সেটি ধানের শীষে না হয়ে তো নৌকায়ও হতে পারে।’   

বিচার মানেন তাল গাছটা আপনার-সেতুমন্ত্রী নিজের করা এমন মন্তব্য প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমি যে টোনে বলেছি, সেটি তারা বুঝতে পারেননি। আমি আমার অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে বলেছি যে, সবকিছুতেই তারা (বিএনপি) সালিশ মানে, তবে তাল গাছটা তাদের দিতে হবে। এই মন মানসিকতা থেকে তারা কথা বলে, সেটাই বলেছি। আমি এই টোনে তাদের ওই প্রসঙ্গটাতে কথা বলেছি।’ বিএনপির এই মানসিকতা পরিবর্তন করে বাস্তবতাবাদী হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

ইসি পুনর্গঠন নিয়ে তিনি বলেন, ‘সত্যিকার অর্থেই সার্চ কমিটি করতে সবার পরামর্শ নিলে সবাই উপকৃত হবে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সবার সঙ্গে আলোচনা শেষে রাষ্ট্রপতি যে সিদ্ধান্ত নেবেন আওয়ামী লীগ তা মেনে নেবে। বিএনপির তো এখন খুশি খুশি ভাব। তারা যদি রিয়েলস্টিক আচরণ প্রদর্শন করে, তাহলে দেশের মানুষ খুশি হবে এবং উপকৃত হবে।’

জেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জে জেলা পরিষদ ও সিটি করপোরেশন উভয় নির্বাচনেই বিএনপি অংশ নিচ্ছে। তাদের জিতলেও লাভ হারলেও লাভ। কারণ জিতলে তো জিতলো। আর হারলে বলবে কারচুপি হয়েছে। এত কিছুর পরও তারা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে, যাতে তাদের গণতান্ত্রিক মনোভাব বোঝা যাচ্ছে।

আন্দোলনের কত ইস্যুই তো চলে গেল। সব ব্যর্থ হয়ে গেছে। বিএনপি এখন ব্যর্থতা আর হতাশায় বেপরোয়া হয়ে গেছে। তাদের কথাবার্তা ও আচরণে বেপরোয়া মনোভাব প্রকাশ পাচ্ছে।

খালেদা জিয়া নারায়ণগঞ্জ যেতে চেয়েছিলেন কিন্তু পারেননি। ‘উনি এত বড় একটা দলের নেত্রী উনি কি ইসির আচরণ বিধি বোঝেন না, বা জানেন না? ইসি যখন নারায়ণগঞ্জে বাইরের মানুষের জনসভা নিষিদ্ধ করেছে উনি তখন জনসংযোগের কর্মসূচি কেন দেন? আমরা তো নির্বাচন কমিশনের আচরণ বিধি মেনে চলছি। আমাদের কোনও মন্ত্রী বা এমপি কেউ তো নারায়ণগঞ্জে যাননি। তার মানে বিএনপি ছুতো ধরে অভিযোগ করছে।

তিনি বলেন, ‘বিএনপি একটি বড় দল। তারা যদি ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে অংশ নিতো তাহলে কি ১৬৫ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিততো? বিএনপির বুদ্ধিজীবীরাই এখন বলছে, বিএনপি ‘হাঁটু ভাঙা’ দল। আমরা তো বিএনপিকে কোমর ভাঙা, হাঁটু ভাঙা দল বলিনি। আমরা মনে করি, বিএনপি একটি বড় দল। দেশের অনেক মানুষ এ দলের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে।’

নির্বাচনের আচরণ বিধি নিয়ে প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি তো দলের সাধারণ সম্পাদক। আমি ২৮ তারিখের আগে ঢাকার বাইরে বের হবো না। কারণ, আমি কোনও জেলার ওপর দিয়ে গেলে ওই জেলার চেয়ারম্যান বা মেম্বার আমাকে ফুলের তোড়া দিলে, সেটা আমার জন্য বিব্রতকর হবে।’

বুদ্ধিজীবী দিবসে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হকের সঙ্গে কথা কাটাকাটি বিষয়ে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ ধরনের অভিযোগ অসত্য। নগরায়ণ ও সৌন্দর্য্য বর্ধনের জন্য গাছ কাটা নিয়ে তার সঙ্গে আমার কোনও কথা কাটাকাটি হয়নি। বুদ্ধিজীবী দিবসের মতো একটি পবিত্র দিনে আমি এবং আনিসুল হক কথা কাটাকাটি করবো, আমরা কি সেই মানসিকতার লোক? আনিসুল হকের সঙ্গে আমার পারিবারিক সম্পর্ক অত্যন্ত মধুর। আজ সকালেও আমি তার বাসা থেকে সচিবালয়ের এসেছি। আমি গিয়েছিলাম তার বাবাকে সালাম করতে। উনি অসুস্থ। আনিসুল হক আমাকে তার রোল মডেল মানেন। একটা মানুষকে কতটা সম্মান করলে এটি বলা যায়। উনি আমাকে ওই পরিমাণই সম্মান করেন। আনিসুল হক একজন আধুনিক মানুষ। কারও সঙ্গেই আমাদের কোনও সমস্যা নেই। সমস্যা থাকলে সেগুলো বসে আলোচনা করে ঠিক করা যাবে।’

২০ ডিসেম্বর,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এআর

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে