আমি হাসলেও দোষ : নূর হোসেন
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি : নারায়ণগঞ্জে আলোচিত সেভেন মার্ডারে করা দুটি মামলার মধ্যে আইনজীবী চন্দন সরকার ও তার গাড়িচালক ইব্রাহিম হত্যা মামলাটির অভিযোগ (চার্জ) গঠন করা হবে ১১ জানুয়ারি। এ তথ্য জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালত।
এ ছাড়া আদালত র্যাব-১১-এর সাবেক সিও লে. কর্নেল তারেক সাঈদসহ ১৩ জনের জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেছেন। অন্যদিকে কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম ও তার চার সহযোগীসহ পাঁচজনকে হত্যার ঘটনায় সেলিনা ইসলাম বিউটির করা মামলাটির বিচারকাজ শুরু করতে তা জেলা জজ আদালতে প্রেরণের নির্দেশ দিয়েছেন অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। গতকাল পৃথক এ দুই আদালত এসব আদেশ দেন।
এদিকে আদালতে প্রবেশের পথে নূর হোসেন প্রথমবারের মত সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে কথা বলেছেন। তিনি বলেন, আমি হাসলেও দোষ। আদালতে নেয়ার পর কাঠগড়ায় প্রথমবারের মতো দেখা হয় নূর হোসেনের সঙ্গে র্যাব-১১-এর সাবেক সিও তারেক সাঈদ, মেজর আরিফ ও কোম্পানি কমান্ডার এম এম রানার। কাঠগড়ায় এ চারচজন হঠাৎ মশগুল হয়ে ওঠেন। চারজনই এ সময় মুচকি হাসছিলেন।
এদিকে নূর হোসেনকে কারাগারে নেয়ার পথে আদালতের বারান্দায় নূর হোসেন বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেনের নাম নিয়ে বলেন, সাখাওয়াত আমার কাছ থেকে অনেক সুবিধা নিয়েছে। এখন আমার বিরুদ্ধেই কথা বলছে।
এদিকে নূর হোসেনের পক্ষে সরকারদলীয় আইনজীবীরা কাজ করছে বলে অভিযোগ করেছেন ওই মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন।
সোমবার সকাল পৌনে ১০টায় সাত খুনের ঘটনার মধ্যে দুই হত্যা মামলায় নূর হোসেনকে আদালতে হাজির করার পর দুপুরে সাংবাদিকদের কাছে এমন মন্তব্য করেন তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক আইনজীবীর দাবি, আদালতে নূর হোসেনের সঙ্গে আওয়ামীপন্থি কয়েকজন আইনজীবীকে তারা কথা বলতে দেখেছেন।
সাখাওয়াত হোসেন অভিযোগ করেন, নূর হোসেনের পক্ষে সরকারদলীয় আইনজীবীরা কাজ করছে। পিপি ওয়াজেদ আলীও জামিনের বিরোধিতা করে জোরালো বক্তব্য দেননি। বর্তমান পিপি, এপিপিদের বেশির ভাগই নূর হোসেনের পক্ষে বায়াস্ট হয়ে গেছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই।
এর আগে গত ১২ নভেম্বর নূর হোসেনকে ভারত থেকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়। পরদিন ১৩ নভেম্বর তাকে আদালতে তোলার সময় আওয়ামী লীগের অনেক আইনজীবীকে আদালতপাড়ায় দেখা যায়। শুনানিতেও তাদের উপস্থিতি ছিল।
এরপর ১৬ নভেম্বর এ নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে নারায়ণগঞ্জ আইনজীবী সমিতির নেতারা। সংবাদ সম্মেলনে জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এবং বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান দিপু বলেছিলেন, যদি কোনো আইনজীবী আসামির পক্ষে মামলা পরিচালনা করতে চান আমরা বাধা দেব না।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংকরোড থেকে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনর কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজনকে অপহরণ করার পর হত্যা করা হয়। তিনদিন পর তাদের লাশ শীতলক্ষ্যা নদীতে ভেসে ওঠে।
৩০ নভেম্বর,২০১৫/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এমআর/এসএম
�