মোঃ হাবিবুর রহমান, সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি: আসন্ন বর্ষা মৌসুমকে কেন্দ্র করে বিগত দিনের ন্যায় এ বছরও সোনারগাঁয়ে ড্রেজার ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম শুরু হচ্ছে। নিয়মনীতি উপেক্ষা করে তাদের স্বেচ্ছাচারীতার দরুন উপজেলাবাসী নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কোন নজরদারী নেই বলে অভিযোগ রয়েছে।
জানা যায়, প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে বালু ভরাটের কাজ নেয় ড্রেজার ব্যবসায়ীরা। পরে তারা স্থানীয় প্রভাবশালীদের নিয়ে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট তৈরী করে নিরীহ কৃষকদের ফসলি জমির উপর দিয়ে অথবা ফলজ ও বনজ গাছ কেটে বা ইটের দেয়ালে ছিদ্র করে, মহাসড়কের উপর দিয়ে বা নিচে সুরঙ্গ করে যথাইচ্ছা ড্রেজারের পাইপ স্থাপন করে। এসব পাইপের সংযোগস্থলের ছিদ্র থেকে বালু ছড়িয়ে পরে প্রতিবছরই উপজেলার জামপুর ইউনিয়নের হাতুরাপাড়া বিলসহ বিভিন্ন এলাকায় কৃষকদের ফসলি জমি চাষাবাদের অনুপযুক্ত হয়ে পরে। এ সময় ড্রেজার ব্যবসায়ীরা উক্ত বালু সরানোর জন্য কৃষকদেরকে আর্থিকভাবেও সহায়তা করে না। তাদের এরুপ স্বেচ্ছাচারীতার কারণে উপজেলার অনেক এলাকায় কৃষকদের ফসলি জমি এখন পতিত জমিতে পরিনত হয়েছে।
অন্যদিকে ড্রেজার ব্যবসায়ীরা সোনারগাঁয়ের বারদী ইউনিয়ন ঘেঁষে প্রবাহিত মেঘনা নদীর তলদেশ থেকে অধিকহারে বালু উত্তোলণ করায় প্রতি বছরই নদীর তীরবর্তী নুনেরটেক এলাকার ফসলী জমি এবং নিরীহ জেলে সম্প্রদায়ের ভিটে বাড়ি মারাত্মক ভাঙ্গনের কবলে পরে। তাছাড়া বিভিন্ন সড়কের উপর দিয়ে ড্রেজারের পাইপ নেয়ার ফলে ঘটে ছোট-বড় সড়ক দুর্ঘটনা। আবার কোন কোন স্থানে মহাসড়কের নিচ দিয়ে সুরঙ্গ করে ড্রেজারের পাইপ নেয়ার কারণে সড়কের মেঝেতে সৃষ্টি হয় গভীর গর্ত।
এভাবে বছরের পর বছর অসাধু ড্রেজার ব্যবসায়ীরা দেশ ও দশের ক্ষতি করে নিজেরা আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হলেও তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের পক্ষ থেকে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়া হয় না। যে কারণে দিন দিন তাদের দৌরাত্ব আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে। সোনারগাঁয়ের নিরীহ জনগণ এতদিন মুখবুঁজে এসব সহ্য করলেও এ বছর তারা ড্রেজার ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং এ ব্যাপারে সহযোগিতা করার জন্য তারা প্রশাসনের নিকট দাবি জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু নাছের ভূঁঞা জানান, ড্রেজার ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে আমরা ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে তাৎক্ষনিকভাবে আইনগত ব্যবস্থা নেব।
২৩ এপ্রিল ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এইচএস/কেএস