নারায়ণগঞ্জ : নারায়ণগঞ্জে আলোচিত সাত খুনের দু’টি মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেনের উন্নত চিকিৎসার জন্য আদালতে আবেদন করেছেন তার আইনজীবী অ্যাডভোকেট খোকন সাহা। আদালত বিধি মোতাবেক কারা কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।
মঙ্গলবার সকাল সোয়া ১১টায় নারায়ণগঞ্জ আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণের সময় হঠাৎ নূর হোসেন অসুস্থবোধ করে কাঠগড়ায় বসে পড়েন। এ সময় তার আইনজীবী ও অন্যরা নূর হোসেনের মাথায় পানি ঢেলে কাঠগড়ার বাইরে এনে ফ্যানের নিচে বসান। পরে কিছুটা সুস্থ হলে আবার আদালতে সাক্ষ্য ও জেরা শুরু হয়।
এ ব্যাপারে নূর হোসেনের পক্ষের আইনজীবী নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা সাংবাদিকদের জানান, নূর হোসেনের উন্নত চিকিৎসার জন্য আদালতের কাছে আবেদন করা হয়েছে। আদালত বিধি মোতাবেক কারা কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেনের আদালতে নূর হোসেনসহ ২৩ আসামির উপস্থিতিতে ৫ জনের সাক্ষ্য ও জেরা গ্রহণ করা হয়। পরে আদালত আগামী ৩০ মে পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য্য করেন। এ নিয়ে ৫৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হলো।
নারায়ণগঞ্জ জেলা আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট ওয়াজেদ আলী খোকন জানান, মঙ্গলবার আদালতে সাত খুনের ঘটনায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী গ্রহণ করেন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এইচ এম শফিকুল ইসলাম। হত্যাকাণ্ডের পর আলামত জব্দের সময় সাক্ষী করা হয় আবদুল আউয়াল, আজাদ শেখ, মো. রহিম ও হাসানকে।
জানা গেছে, সাত খুনের ঘটনায় দুটি মামলা হয়। একটি মামলার বাদী বিজয় কুমার পাল হলেন নিহত অ্যাডভোকেট চন্দন সরকারের মেয়ে জামাতা ও অপর বাদী হলেন সেলিনা ইসলাম বিউটি নিহত নজরুল ইসলামের স্ত্রী।
প্রসঙ্গত ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম, তার বন্ধু মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, লিটন ও গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম এবং আইনজীবী চন্দন কুমার সরকার ও তার গাড়িচালক ইব্রাহীম অপহৃত হন। পরে ৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ৬ জনের ও ১ মে একজনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
তদন্ত শেষে গত ৮ এপ্রিল নূর হোসেন, র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি সাত খুনের দুটি মামলায় নূর হোসেন ও র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।
এ মামলায় নূর হোসেন ও র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ মোট ২৩ জন বর্তমানে কারাগারে আটক রয়েছেন। চার্জশিটভুক্ত আসামিদের মধ্যে ১২ জন পলাতক রয়েছেন।
২৪ মে, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এমআর/এসএম